বিরলতম রোগে আক্রান্ত নয় মাসের শিশু, ছেলের জীবন বাঁচাতে করুণ আর্জি জানিয়েছে অসহায় মা সঙ্গীতা মন্ডল।

দক্ষিণ দিনাজপুর, নিজস্ব সংবাদদাতা:- বিরলতম রোগে আক্রান্ত নয় মাসের শিশু। চিকিৎসার খরচ নিয়ে কার্যত দুশ্চিন্তায় ঘুম উড়েছে এক সেনা কর্মীর পরিবারের। এদিকে একমাত্র ছেলের জীবন বাঁচাতে মরিয়া বাবা ধ্রুব মন্ডল দ্বারস্থ হয়েছেন বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের। করুণ আর্জি জানিয়েছে অসহায় মা সঙ্গীতা মন্ডলও। আর যা নিয়ে প্রায় একমাস ধরে চোখের জলেই দিন কাটছে গোটা পরিবারের। বালুরঘাট শহরের মঙ্গলপুর এলাকার এমন ঘটনায় রীতিমতো আলোড়ন পড়েছে গোটা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায়। দেশের প্রধানমন্ত্রীই এখন শেষ ভরসা, বলছে অসহায় সেনাকর্মীর পরিবার।

বালুরঘাট শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মঙ্গলপুর এলাকার বাসিন্দা পেশায় সেনাকর্মী ধ্রুব মন্ডলের একমাত্র ছেলে সপ্তর্ষি মন্ডল। জন্মের নয় মাস পরেও শিশুটির মধ্যে সেরকম শিশুসুলভ অঙ্গভঙ্গী ও শারিরীক বিচলিত ভাব দেখতে পায় না তার পরিবার। যা নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তা থেকেই চলতি বছরের এপ্রিল মাসে বালুরঘাটের এক শিশু বিশেষজ্ঞর শরনাপন্ন হন ওই শিশুর পরিবারের লোকেরা। যেখানে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে শিশুর জিনগত সমীক্ষা করান তার পরিবারের লোকজন। যেখানেই সামনে আসে স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রফি রোগের যাবতীয় লক্ষণ। বিরলতম এই রোগের কথা শুনতেই কিছুটা আঁতকে ওঠেন ভারতীয় সেনা বিভাগে কর্মরত তথা শিশুর বাবা ধ্রুব মন্ডল।

ঘটনা সুনিশ্চিত করতে এরপরেই প্রথমে কলকাতা এবং তারপর দিল্লির এইমসে নিয়ে যাওয়া হয় ছোট্ট সপ্তর্ষিকে। কিন্তু সেখানেও পরীক্ষা নিরীক্ষার পর একই রোগের কথা জানান চিকিৎসকরা। শুধু তাই নয়, দু বছরের মধ্যে এর সঠিক চিকিৎসা না হলে সপ্তর্ষিকে আর বাঁচানো সম্ভব না এমনটাও জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রফি নামের এই মারণ রোগের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই রোগের জন্য ব্যবহৃত একটিমাত্র ইনজেকশন রয়েছে যার দাম প্রায় সাড়ে সতেরো কোটি টাকা, যা ভারতে অমিল। শুধুমাত্র বিদেশ থেকে এই ইনজেকশনটি এনেই বাঁচানো সম্ভব ছোট্ট ওই শিশুটিকে। যা জানবার পরেই কার্যত ভেঙে পড়েছেন অসহায় ওই শিশুর পরিবার। কিন্ত কোনভাবেই যেন হাল ছাড়তে নারাজ সেনাকর্মী ওই শিশুর বাবা ধ্রুব মন্ডল। ছেলের এই বিরলতম রোগের চিকিৎসার জন্য সকলের কাছে কড়জোড়ে আবেদন জানিয়ে ইতিমধ্যে দ্বারস্থ হয়েছেন বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমেরও।


শিশুর মা সঙ্গীতা মন্ডলের দাবি, একমাত্র দেশের প্রধানমন্ত্রীই পারে তার ছেলের জীবন বাঁচাতে। কিন্তু কিভাবে জুটবে এই বিপুল অঙ্কের টাকা? তা ভেবেই যেন ডুকরে কাঁদছেন শিশুর দিদা। একই চিন্তা বাড়িয়েছে প্রতিবেশী ও অনান্য আত্মীয়দের মধ্যেও। মাত্র ১৫ মাসের মধ্যে সাড়ে সতেরো কোটি টাকা জোগাড় করে কি আদৌও ছোট্ট সপ্তর্ষির জীবন ফেরাতে পারবে তার পরিবার? যে প্রশ্নই যেন এখন চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে গোটা বালুরঘাট শহরে।

শিশুর মা সঙ্গীতা মন্ডল বলেন, বালুরঘাট থেকে দিল্লি সব জায়গায় একই রিপোর্ট সামনে এসেছে। রোগের সমস্ত উপসর্গও তার শিশুর মধ্যে রয়েছে। কিন্তু কিভাবে ছেলের জীবন ফেরাবেন তা তারা ভাবতেই পারছেন না। এত টাকাও কিভাবে জোগাড় হবে সেটাও বুঝতে পারছেন না। তবে দেশের প্রধানমন্ত্রী চাইলেই একমাত্র তার শিশুকে বাঁচানো সম্ভবপর হবে।
শিশুটির দাদুর দাবি যদি কোন এই বিশাল টাকা দিয়ে তাদের সাহায্য করেন নাতির চিকিৎসা সহজেই করাতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *