গর্বিত নদীয়ার রানাঘাটের মেধাবী ছাত্র নির্নিমেষ দে চন্দ্রযান ৩ মিশনে দেশের সাফল্যে অংশীদার হতে পেরে।

নদীয়া, নিজস্ব সংবাদদাতা:- ২০২৩ সালের মাঝামাঝি পড়তেই সারা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেয় ভারত বর্ষ, যার অংশীদার হিসেবে নদীয়ার গর্ব যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নির্নিমেষ। বয়স মাত্র ২৩ বছর সটলেকের একটি আন্তর্জাতিক টেক কনসালটেন্ট কোম্পানিতে কর্মরত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী নদীয়ার নির্নিমেষ দে। স্নাতক পড়াকালীন ইসরোর চন্দ্রযান ৩ মিশনের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় লেন্ডার টেকনোলজি ডেভেলপমেন্টর উপর কাজ করেছেন তিনি। কোভিড কালে সেই প্রজেক্ট এর জন্য রাতের পর রাত জেগে কাটাতে হয়েছে তাকে। অবশেষে দেশের সাফল্যে অংশীদার হতে পেরে গর্বিত নদীয়ার রানাঘাটের এই মেধাবী ছাত্র। যদিও নির্নিমেষকে নিয়ে গর্বিত গোটা নদীয়া বাসী। ২০১৯ সালে চন্দ্রজান ২ মিশন ব্যর্থ হয়। তার অন্যতম কারণ ছিল চন্দ্রপৃষ্ঠে ল্যান্ডিংয়ের সময় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া। যদিও এই ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়েই ২০২০ সালে চন্দ্রযান ৩ অভিযানের যাবতীয় প্রস্তুতি শুরু করে ইসরো। এপ্রিল মাস নাগাদ লেন্ডার টেকনোলজি ডেভেলপমেন্টের আইডিয়া তৈরির জন্য ভারতীয় মহাকাশ গবেষণার সংস্থা রেসপন্স প্রজেক্ট অংশ নেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল এবং ইটিসি বিভাগের পড়ুয়া ও অধ্যাপক মিলে সাতজনের একটি টিম, সেই দলেই ছিলেন মেকানিক্যাল বিভাগের নির্নিমেষ। তিনি বলেছিলেন ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে আমরা প্রোটোটাইপ প্রোজেক্টের কাজ শুরু করি, মেকানিক্যাল বিভাগের প্রিলি মিনারী টার্গেট ছিল লেন্ডার টেকনোলজি ফ্রাস্টার ফায়ারিং সিকোয়েন্স অ্যালগরি দমের উপর ইন্ডিয়া ডেভেলপ করা। পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রফেসর ডঃ অমিতাভ গুপ্ত এবং ইলেকট্রনিক্স ও টেলি কমিউনিকেশনের প্রফেসর সায়ন চট্টোপাধ্যায় তত্ত্বধানেই আমরা কাজটা শুরু করি। কোভিড পরিস্থিতির কারণে গোটা রাত জেগে বাড়িতে বসে ডেস্কটপে সিমুলেটিং এর কাজ করতে হয়েছে। জানা গিয়েছে অবতরণের আগে চন্দ্রযান থেকে চন্দ্রপৃষ্ঠের প্রতি মুহূর্তের ইমেজ সংগ্রহ করার প্রোটোটাইম কাজের দায়িত্ব ছিল যাদবপুরের ইলেকট্রনিক্স বিভাগের উপর। প্রতি ছয় মাস পর এ বিষয়ে ঈশ্বর কাছে বিশ্ববিদ্যালয় কে রিপোর্ট জমা দিতে হয়েছে। অবশেষে ২০২১ সালের মার্চ মাসে এই প্রজেক্টকে প্রোটোটাইম সিমুলেটিভ ভিডিও হিসেবে ইসরোর কাছে পেশ করা হয়। নির্নিমেষ জানিয়েছে, এই বছরের মাঝামাঝি এসে আমরা জানতে পারি ইসরো আমাদের প্রজেক্ট গ্রহণ করেছে। যেহেতু লুনার সারফেসের টোপোগ্রাফি আমাদের জানা ছিল না তাই পৃথিবীর অসমতল ভূপৃষ্ঠকই চন্দ্রপৃষ্ঠ হিসেবে কল্পনা কাজ করে করতে হয়েছিল আমাদের। স্বল্পভাষী শান্ত সৃষ্ট স্বভাবের নির্নিমেসের এই কৃতিত্বের কথা জানতেন না তার পরিবারও। এদিন রানাঘাটের কামারপাড়া এলাকার বাড়িতে চলছিল মিষ্টিমুখ পর্ব। তার বাবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী নির্মল কুমার দে। দেশের সাফল্যে ছেলের এত বড় ভূমিকায় গর্ব এখন মা-বাবার। তবে চন্দ্রযান ৩ সাফল্যের দিন নির্নিমেষ বাড়িতেই ছিল বলে জানা যায় পরিবারের কাছ থেকে। অন্যদিকে নির্নিমেষ গোটা নদীয়ার মানুষকে যে তাক লাগিয়ে দেবে তা অনেকটাই অজানা ছিল নদিয়াবাসীর কাছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *