পারের কড়িতেও রাজনীতি! ১০০ দিনের বকেয়া টাকা না পেলে বিজেপির মেম্বারদের ঘাট পারাপার বন্ধ, নিদান তৃণমূল কংগ্রেস অঞ্চল সভাপতির।

নদীয়া, নিজস্ব সংবাদদাতা:- পারের কড়িতেও রাজনীতি! ১০০ দিনের বকেয়া টাকা না পেলে বিজেপি মেম্বারদের ঘাট পারাপার বন্ধ, অন্যদিকে কৃষকদের ছাড় দেওয়ার নিদান তৃণমূল ব্লক সভাপতির। আর এ কথা শুনেই বিজেপি প্রধানের দাবি সেখানকার জন প্রতিনিধিদের যাতায়াত ফ্রি করা হোক এলাকার উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে।
রীতিমতো সরকারি কোষাগারে মোটা টাকা দিয়ে ঘাট মালিক ঘাট জমা নিয়ে এখন পড়েছেন মহা ফ্যাসাদে।
ঘটনাটি নদীয়ার শান্তিপুর ব্লকের গয়েশপুর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত মানিকনগর এলাকার।
গতকাল তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে ওই এলাকায় শান্তিপুর বিধানসভার বিধায়ক ব্রজ কিশোর গোস্বামী ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি সুব্রত সরকার এবং অন্যান্য তৃণমূল নেতৃত্বের উপস্থিতিতে এক বিজয়া সম্মেলনী অনুষ্ঠানে এমনই হুংকার দিতে দেখা গেল তৃণমূল ব্লক সভাপতি কে। যা নিয়ে শোরগোল রাজনৈতিক মহলে।
ভৌগলিক অবস্থান অনুযায়ী গয়েশপুর পঞ্চায়েতের বেশ খানিকটা অংশ গঙ্গা পার হয়ে বর্ধমান লাগোয়া। সম্ভবতই সেই এলাকার নদিয়া অধিবাসীদের পঞ্চায়েত অফিস হোক কিংবা বিডিও অফিস এমনকি স্কুল কলেজ নিত্য প্রয়োজনে পারাপার করতে হয় ফেরি। সাইকেলসহ মানুষ পাঁচ টাকা এবং মোটরসাইকেল ১০ টাকা এভাবেই রানার সমবায় ফেরিঘাট পরিষেবা সমিতি লিমিটেড এ বছরও সরকারিভাবে ঘাট ইজারা পেয়েছে। তবে গতকালকের এই ঘোষণায় ঘাট মালিক স্বপন মাহাতো জানান তার কাছে সকলেই সমান, এমনিতেই কৃষি প্রধান দরিদ্র এলাকা হওয়ার কারণে মাঝেমধ্যেই কৃষকদের ছাড় দিতে হয় মানবিকভাবে, তারপর রাজনৈতিক নেতা জনপ্রতিনিধিদের এবং তাদের সাথে থাকা মানুষ জনকেও সম্মানের কারণে নেওয়া হয় না ভাড়া। তবে ভাড়া পেলে কারোর যাতায়াত বন্ধ করতে পারি না আমরা।
তবে এভাবে যদি নিয়মিত সারা বছর ছাড় দিতে হয় তাহলে কর্মচারীদের নিয়ে সারা বছর চলবো কিভাবে?
গয়েশপুর অঞ্চল বিজেপি প্রধান শ্যামল ঘোষ জানান, এ রাজ্যে বিভিন্ন দুর্নীতির কারণেই কৃষকদের বকেয়া রয়েছে তদন্ত হওয়ার পর নিশ্চয়ই কৃষকরা তাদের টাকা পাবেন, তবে পরিস্থিতির জন্য তৃণমূল দায়ী। আর এটার সাধারণ কৃষকরা এবং গয়েশপুর অঞ্চল এলাকাবাসীরা জানেন বলেই এবারে তৃণমূলের হাতছাড়া হয়ে বোর্ড গঠন করেছেন তারা। এমনকি মানিকনগর এলাকা থেকেও দুজন বিজেপি জয়লাভ করেছে। তবে শুধু বিজেপির মেম্বারদের জন্য নয় সমস্ত জনপ্রতিনিধিদের জন্যই ঘাট ফ্রি করার অনুরোধ জানানো হয়েছে, যাতে উন্নয়ন আরো ত্বরান্বিত করা যায়।
গয়েশপুর অঞ্চলের বিজেপি কনভেনার পাপুল পাল রাজনৈতিক সুর চড়িয়ে বলেন, মানুষের কাছ থেকে এই অঞ্চলে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে তৃণমূল, কৃষকদের আবেগ নিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করছে তারা। ঘাট পারাপারের বিষয়ে বিজেপির মেম্বারদের আটকে দেখাক। ঘাট মালিককে পয়সা না দিয়েই রাজনৈতিক সভা মঞ্চ থেকে ভাষণ সস্তায় চটকদারি করার জন্য।

গতকাল হুমকির সুরে বললেও আজ সুর কিছুটা নরম করে তৃণমূল ব্লক সভাপতি বলেন, ঘাট মালিকের উপর চাপ সৃষ্টি করা হয়নি অনুরোধ জানানো হয়েছে কারণ তিনি আমাদের সমর্থক। তা বাদেও কৃষকদের পাশে না থেকে বিজেপি মেম্বারদের ঘাট পারাপার ফ্রি করার কোন মানে হয় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *