কলমকাঠি কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে জায়গা পেল।

আবদুল হাই, বাঁকুড়াঃ – বাঁকুড়ায় তৈরি, বাঁকুড়াবাসীদের দ্বারা অভিনীত এবং পরিচালিত একটি “জিরো বাজেট” ফিচার চলচ্চিত্র হল “কলমকাঠি”। শুনে অবাক লাগলেও সত্যি। বাঁকুড়ার বাসিন্দা বিপ্লব দাস পরিচালিত ১ ঘন্টা ২০ মিনিটের এই চলচ্চিত্রটি ইতিমধ্যেই জায়গা পেয়েছে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে। আগামী ৭ তারিখ বিজলী সিনেমা হলে ৩ টা ৩০ মিনিটে দেখানো হবে কলমকাঠি। এর আগে সুইডেন এবং তুর্কি থেকে স্বীকৃতি পেয়েছে কলমকাঠি। কলমকাঠি আজ এক প্রায় হারিয়ে যেতে বসা বাংলার দেশী ধানের প্রজাতি। সামন্ত তান্ত্রিক পুঁজিবাদ, ক্লাইমেট ক্রাইসিস, জৈব অর্থাৎ প্রকৃতি মুখী খাদ্যাভ্যাস, এই সব দিক গুলি প্রাধান্য পেয়েছে চলচ্চিত্রটিতে। যারা অভিনয় করেছেন তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগ অন্য পেশার সঙ্গে যুক্ত। ইংরেজিতে “বিগার পিকচার” বলে একটা কথা আছে, যার অর্থ হলো বড় বা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বস্তু। কলমকাঠি সেই চেষ্টাই করেছে।

লেখক থেকে পরিচালক, বেশিরভাগ অভিনেতা এবং অভিনেত্রী এবং এডিটর পর্যন্ত সকলেই বাঁকুড়ার বাসিন্দা। বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন জানা- অজানা জায়গাতেই করা হয়েছে শুটিং। খাতরা মহকুমার সোনামণি পাহাড় এবং বাঁকুড়া শহর সংলগ্ন
রাজোগ্রামে পৌঁছে যায় কলমকাঠির ক্যামেরা। লেখক এবং পরিচালক বিপ্লব দাস জানালেন, কলমকাঠি তৈরি করতে গিয়ে বাঁকুড়া জেলায় কোনরকম বাধার সম্মুখীন হতে হয়নি তাঁকে।

“চল একটা সিনেমা তৈরি করি”, আজকালকার দিনে যুবক-যুবতীদের মুখে প্রায়শই শোনা যায় এই কথাটা। বিভিন্ন কারণে সিনেমা আর তৈরি হয় না। বিপ্লব দাস এবং সমগ্র কলমকাঠি পরিবার পাঁচটা হ্যারিকেন এবং চারটে লন্ঠনকে সম্বল করেই একটি রূপকথাকে বাস্তবতায় পরিণত করেছে। বিন্দুমাত্র মেকআপ ব্যবহার করা হয়নি। আর জানলে অবাক হবেন অভিনেতা এবং অভিনেত্রীদের শুটিংয়ের কস্টিউম নিজের বাড়ি থেকে নিয়ে যেতে হয়েছে।

শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কিংবা শিল্প! কোন অংশেই পিছিয়ে নেই বাঁকুড়া জেলা। শিল্পক্ষেত্রে কলমকাঠি তার জ্বলন্ত উদাহরণ। কলমকাঠি পরিবারের কাছে দেওয়ার জন্য ছিল সহস্র অজুহাত। পরিবর্তে তাঁরা বেছে নিয়েছেন পরিশ্রম। তৈরী হয়েছে কলমকাঠি। এসেছে জেলার নামে স্বীকৃতি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *