পারিশ্রমিক ছাড়াই ২০০৯ সালে শুরু হয় ভারতী মুদির ফুটবল প্রশিক্ষণ শিবির।

আবদুল হাই, বাঁকুড়াঃ – ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন ছিল। কিন্তু মেয়ে হয়ে ফুটবল খেলাটা হয়ে ওঠেনি। অধরা থেকে যায় ফুটবল খেলার স্বপ্ন। তবে এবার নিজের মেয়ে সহ এলাকার অন্যান্য আদিবাসী মেয়েদের ফুটবলের কোচিং দিয়ে মেয়েদের ফুটবলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন বাঁকুড়ার ছাতনার দুমদুমির ভারতী মুদি। তাঁর প্রশিক্ষণ শিবির থেকে এখন বাঁকুড়ার মেয়েরা রাজ্যস্তর থেকে যাচ্ছে জাতীয় স্তরেও খেলতে। কোনও পারিশ্রমিক ছাড়াই ২০০৯ সালে শুরু হয় ভারতী মুদির ফুটবল প্রশিক্ষণ শিবির। বর্তমানে ধারাবাহিকতার সঙ্গে ৩০-৩৫ জন আদিবাসী মেয়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে তাঁর কাছে। খেলার সরঞ্জাম যেমন ফুটবল, ফুটবল খেলার বুট এবং অন্যান্য উপকরণ কিনে থাকেন ভারতী মুদি নিজে।
ঘাম ঝরালেই আসে সফলতা। ভারতী দেবীর এই প্রশিক্ষণ শিবিরের মেয়েরা রাজ্যস্তর থেকে শুরু করে জাতীয়স্তর সব জায়গাতেই অংশগ্রহণ করেছেন। ভারতী দেবী জানান যে থানা স্তর থেকে জেলা, রাজ্যস্তর ছাড়িয়েও জাতীয় স্তরেও মেয়েরা খেলেছে। গোয়া, চণ্ডীগড়, ভূপালে খেলেছে তাঁর কোচিংয়ের মেয়েরা। এবার তাঁদের লক্ষ্য আন্তর্জাতিক স্তরে যাওয়া। প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ফুটবলার মাম্পি বাউরি বলেন, ফুটবলকে নিয়ে কিছু করার ইচ্ছে রয়েছে তার। “বড়মা” অর্থাৎ ভারতী দেবী পাশে থাকলে সেটা সম্ভব বলেই মনে করছেন মাম্পি।
হাজার প্রতিকূলতা ছিল আগে। এখনও রয়েছে সরঞ্জামের এবং অর্থের অভাব। তবে অভাব নেই উদ্যমতার। মাঠ ছাড়েনি বাঁকুড়ার এই আদিবাসী মেয়েগুলি। পাশে থেকেছেন ভারতী দেবী। মাড় ভাত অর্থাৎ ফ্যান ভাত খেয়েই মাঠে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন মেয়েরা। ভারতী মুদি জানান, যত দিন মেয়েরা চাইবে ফুলবল খেলতে, ততদিন পাশে থাকবেন তিনি।

ব্যায় সাপেক্ষ খেলা ফুটবল। আদিবাসী প্রান্তিক মেয়েদের জন্য স্বপ্নের মতই যেন “সব খেলার সেরা বাঙালির তুমি ফুটবল”। কিন্তু মেয়েদের ফুটবল প্রশিক্ষণ শিবির তৈরি করে সেই স্বপ্নকেই সত্যি করে দেখালেন ভারতী মুদি। বাঁকুড়ার বুকে এক জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *