অমরনাথ ও কৃত্তিবাস দুই তীর্থস্থানের মেলবন্ধন ঘটাতে নদীয়ার ফুলিয়া থেকে দুই যুবকের সাইকেলে দুর্গম অমরনাথ যাত্রা।

নদীয়া, নিজস্ব সংবাদদাতা:-  ভারতের বিভিন্ন তীর্থস্থানে সারা বছর যাতায়াত থাকলেও অমরনাথ যাত্রা আজও বেশ দুর্গম! রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে বছরে বিশেষ এক সময় অনুমতি মেলে তাও নিয়ম কানুন মেনে।
আর সেই দুর্গম জয় করার স্বপ্ন নদীয়ার ফুলিয়ার বিবেকানন্দ কলোনির বিশ্বজিৎ সরকার এবং তার পিসতত ভাই পবিত্র রায়ের। তাও আবার দশ রাজ্য পার হয়ে আনুমানিক প্রায় তিন হাজার কিলোমিটার পথ অতিক্রম করার মনোবাঞ্ছা সাইকেল চালিয়ে।
যদিও অভিজ্ঞতা বলতে তারাপীঠ এবং গতবছর দার্জিলিং তবে পরিবেশের বার্তা দিতে অবশ্যই সাইকেল চালিয়ে।
অত্যন্ত নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের বিশ্বজিৎ এবং পবিত্র পড়াশোনা শেষ করে ভূমিহীন কৃষি শ্রমিক পিতার কাজে সহযোগিতা করে থাকে। ভোলা মহেশ্বর এর প্রতি অগাধ ভক্তিতেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে পরিবার। তাদের পরবর্তী ইচ্ছা কেদারনাথ, তবে আগামী বছর ভাষা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের ঢাকেশ্বরীতে যাওয়ার।
তবে এবারের অমরনাথ যাত্রার ক্ষেত্রে আজ রওনা দেয়ার পর আগামী ১৫ই জুলাই এর মধ্যে সেখানে পৌঁছাতে পারবেন বলেই তাদের অনুমান। যাওয়ার সময় জম্মুর একটু জায়গা থেকে আর্মিদের যাতায়াতের একটি রাস্তা ঘরেই খেলা যেতে চান তবে তা অনুমতি মিলবে কিনা তা এখনো ঠিক নেই তবে বিকল্প পথ হিসাবে বান্টন হয়ে সঙ্গম বেস ক্যাম্পে সাইকেল রেখে পায়ে হেঁটেই যেতে হবে। তবে ফিরে আসার সময় পেহেলগাও হয়ে জম্মু স্টেশন পর্যন্ত সাইকেলে এসে তারপর ট্রেনে কিংবা বাসে। যাওয়া এবং আসা মিলিয়ে মোট সময়সীমা হিসেবে তারা দু মাস আন্দাজ করেছে। স্থানীয় পঞ্চায়েত ব্লক অফিস সাংসদ বিধায়ক অনুমতি পত্র, ছোট্ট একটি গ্যাস ওভেন ন্যূনতম কিছু বাসনপত্র বেডিং লাগেজ পোশাক-আশাক নগদ কুড়ি হাজার টাকা এ সমস্ত নিয়েই আজ রওনা দিলেন তারা।
জানালেন তীব্র গরমের জন্য দুপুরে বিভিন্ন পেট্রোল পাম্প থানা কিংবা মন্দিরে বিশ্রাম নেবেন তবে রাতের বেশিরভাগ সময় তারা গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য সুসময় বলে মনে করছেন।
তাদের এই শুভযাত্রা কে শ্রদ্ধা জানাতে আজ সকালে উপস্থিত ছিলেন শান্তিপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহকারি সভাপতি চঞ্চল চক্রবর্তী বিধায়ক পার্থসারথি চ্যাটার্জি। তারা জানান বর্তমান যুব সমাজের কাছেও বিভিন্ন ধর্মীয় তীর্থস্থান যে গুরুত্বপূর্ণ তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তবে তাদের বিশ্বাস রাম মন্দির স্থাপন এবং উদ্বোধনের পর থেকেই সনাতনী ধর্ম এবং তীর্থস্থান এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের কাছেও সমান প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে ।
সারা ভারতবর্ষেই তাদের বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি , দলীয় কর্মকর্তা, এমনকি অমরনাথ মন্দির কর্তৃপক্ষের সাথেও কথা বলে রেখেছেন তাদের সহযোগিতার জন্য।
তবে আজ শুভযাত্রার সময় আবহাওয়া দপ্তর পূর্ব ঘোষিত সতর্কতা বার্তা অনুযায়ী প্রবল ঝড় বৃষ্টি শুরু হয় কিন্তু ওই দুই সাইকেল আরোহী বলেন বাবা ভোলানাথের কৃপায় দুর্গম অমরনাথ যাত্রা একদিকে যেমন বিশ্ব উষ্ণায়নে সাইকেল চালানোর বার্তা অন্যদিকে সুদূর অমরনাথ এবং ফুলিয়ার কৃত্তিবাস ওঝার ধর্মীয় দুই পিছনের মেল বন্ধন ঘটবে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *