মল্লভূমে বর্তমান বিষ্ণুপুর রাজবাড়ীর দুর্গাপূজা প্রাচীন রীতিনীতি মেনে আজও চলে মায়ের আরাধনা।

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাঁকুড়াঃ রাজা বা রাজতন্ত্র কিছুই নেই আর কিন্তু সেই প্রাচীন রীতিনীতি মেনে আজও চলে মায়ের আরাধনা। মল্লভূমে বর্তমান বিষ্ণুপুর রাজবাড়ীর দুর্গাপূজা এবং ছত্রিনানগরের অর্থাৎ বাঁকুড়ার ছাতনা রাজবাড়ীর দুর্গা প্রতিমা থেকে শুরু করে পূজার নিয়ম কানুন হুবুহু এক। কথিত আছে যে কোন এক সময় বিষ্ণুপুরের রাজার কাছে ছাতনার রাজা দৈব সন্ধির শর্ত অনুযায়ী দুর্গাপূজা শুরু হয়। ছাতনার এই পুজো প্রায় সাড়ে ৫০০ বছরের পুরনো হলেও বর্তমান দুর্গা মন্দির টি প্রায় ৩০০ বছরের পুরনো। বর্তমানে এই মন্দিরটিতে বেশ কিছু সংস্কার করা হয়েছে পুরনো ঐতিহ্যকে বজায় রেখে। এই মন্দিরটি তৈরি করেছিলেন রানী আনন্দ কুমারী। বিষ্ণুপুরের মল্লরাজাদের তৈরি‌ মন্দিরের মায়ের প্রতিমার সঙ্গে এখানকার প্রতিমার মিল রয়েছে। দেবীর বোধন হয় জীতাষ্টমীতে। নিয়ম অনুযায়ী আজও তোপধ্বনির মাধ্যমে সম্পন্ন হয় সন্ধিপূজো। বর্তমান বংশধর রাজা প্রদীপ সিংহ দেও এর কথায় এখানকার পুজোর দেখার জিনিস হল ডালা দৌড়, খাড়া দৌড়। একটা সময় পুজোতে প্রজারা ভেট নিয়ে রাজবাড়িতে উপস্থিত হতেন কিন্তু সে প্রথা আজ আর নেই তবুও আজও সন্ধিক্ষণ সময় ছাতনার বিভিন্ন গ্রাম থেকে ডালা ভর্তি নৈবেদ্য নিয়ে ছুটে আসেন ভক্তরা। দেবীর কাছে সবার আগে নৈবেদ্য দেওয়ার জন্য দৌড়ান। এটি ডালা দৌড় নামে পরিচিত। প্রতিমা বিসর্জনের সময় রাজাদের ব্যবহৃত পুরনো তরবারি বের করা হয় এবং সেইসব অস্ত্র নিয়ে ক্ষত্রিয়রা বিসর্জনের শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ নেন। প্রথা অনুযায়ী বিসর্জনের পর সেসব অস্ত্র নিয়ে কুলদেবী বাসুলি মায়ের মন্দির পর্যন্ত দৌড়াতে হবে, এটি খাড়া দৌড় নামে পরিচিত।। আসলে রাজতন্ত্র না থাকলেও রাজবাড়ীর দুর্গা পুজোর পুরনো ঐতিহ্য এখনো অমলিন। বর্তমানে এই মন্দিরে প্রতিমা তৈরীর কাজ ও মন্দির সজ্জার কাজ পুরোদমে চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *