সুরধুনী নদীর উৎস থেকে মোহনা পর্যন্ত বেআইনি দখলদারি মুক্ত করে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে দেওয়ার দাবীতে এবারে ভারতবর্ষের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতি, জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক সহ মোট ১৮টি দপ্তরে চিঠি পাঠানো হচ্ছে।

নদীয়া, নিজস্ব সংবাদদাতা:-  নদীয়া জেলার শান্তিপুরের ঐতিহ্যবাহি সুরধুনী নদী আজ মৃতপ্রায় অবস্থায়৷ সরকারী উদাসীনতার সুযোগে বেশকিছু সুযোগ সন্ধানী মানুষ নদী দখল করে নদীর মধ্যেই বেআইনি নির্মান করেছে৷ অভিযোগ শান্তিপুরের বাবলা বাইপাস অঞ্চলে একটি কারখানার মালিক নদী ভরাট করে সেই নদীর মধ্যেই অবৈধ নির্মান করছেন৷ বেআইনি নির্মানের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সামিল হয়েছে পরিবেশ ভাবনা মঞ্চ নামে শান্তিপুরের বিভিন্ন সংগঠনের যৌথ মঞ্চ পরিবেশ ভাবনা মঞ্চ৷ ইতিমধ্যেই নদী বাঁচাতে পরিবেশ ভাবনা মঞ্চের পক্ষ থেকে নদীর উৎস থেকে মোহনা পর্যন্ত পদযাত্রার মধ্য দিয়ে মানুষকে সচেতন করা এবং প্রচার আন্দোলন চালানো হয়েছে৷ পরিবেশ ভাবনা মঞ্চ এবং পরিবেশকর্মী অসিত সাহার পক্ষ থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যপাল, সেচ দপ্তর সহ বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দিয়ে নদীর পুনরুজ্জীবনের দাবী জানানো হয়েছে৷ দীর্ঘ আন্দোলনে আংশিক সফলতা মিলেছে৷ শ্রীঅদ্বৈত এবং শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভূর স্মতি বিজড়িত ঐতিহাসিক সুরধুনী নদীর সাড়ে তিন কিমি সংস্কার করার জন্য ইতিমধ্যেই ৫০লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে৷ নদীয়া জেলা সেচ দপ্তরের পক্ষ থেকে নদী সংস্কারের কাজ করা হবে বলে জানা গেছে৷
কিন্তু প্রায় ১৪ কিমি ব্যাপী নদীর সাড়ে তিন কিমি পথ সংস্কার করলে পুরো নদীটিকে বাঁচানো সম্ভব হবেনা৷ তাই পরিবেশকর্মীরা দেশের জাতীয় সম্পদ সুরধুনী নদীর উৎস থেকে মোহনা পর্যন্ত বেআইনি দখলদারি মুক্ত করে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে দেওয়ার দাবীতে এবারে ভারতবর্ষের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতি, জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক সহ মোট ১৮টি দপ্তরে চিঠি পাঠানো হচ্ছে বলে জানা গেছে৷ সেই চিঠির অনুলিপি রানাঘাটের সাংসদ, শান্তিপুরের বিধায়ক, পৌরপতি, থানা সহ বিভিন্ন দপ্তরে দেওয়া হবে বলেও পরিবেশকর্মীরা জানিয়েছেন৷ আজ শান্তিপুরের বিধায়ক এবং শান্তিপুর থানার ওসিকে চিঠি দেওয়ার পরিবেশ ভাবনা মঞ্চের সভাপতি সুব্রত বিশ্বাস বলেন যে, সুরধুনী নদীকে আগ্রাসন মুক্ত করে পুনরুদ্ধারের দাবী জানাচ্ছি৷ পাশাপাশি নদীর উৎস থেকে মোহনা পর্যন্ত সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট ১৮ দপ্তরে তারা চিঠি দিচ্ছেন৷ পরিবেশকর্মী অসিত সাহা বলেন যে, শ্রীঅদ্বৈত এবং শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর স্মতি বিজড়িত নদীটির সংস্কার হলে শান্তিপুরের গঙ্গা ভাঙনের প্রবনতা কমবে, মৎস্যজীবিদের সুদীন ফিরবে, এলাকার অর্থনীতি সচল হবে, পরিবেশ প্রকৃতি বিশুদ্ধ হবে৷ মিষ্টি জলের সম্ভার সুরক্ষিত হবে৷ সুরধুনী নদী বাঁচাতে গেলে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন৷ সেই অর্থ একমাত্র কেন্দ্রীয় সরকারই দিতে পারে৷ তাই কেন্দ্রীয় সরকার যাতে সুরধুনীর স্বাভাবিক প্রভাব ফিরিয়ে দিতে উদ্যোগী হয় সেজন্যই তারা রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী সহ বিভিন্ন জায়গায় তারা চিঠি দিচ্ছেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *