ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের কঠোর পরিশ্রম যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত রাজনৈতিক দিক থেকে মুক্তি পেয়েছে। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়। এই অন্দোলনে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে প্রদ্যোতকুমার ভট্টাচার্য প্রথম সারির একজন অন্যতম বিপ্লবী ছিলেন। প্রদ্যোতকুমার ভট্টাচার্য ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে।
প্রদ্যোৎকুমার ভট্টাচার্য ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব। ছাত্র অবস্থায় বিপ্লবী দলে যোগ দেন। যে দুই যুবক মেদিনীপুরের ম্যাজিস্ট্রেট রবার্ট ডগলাসকে হত্যার জন্য আক্রমণ করেছিল তাদের মধ্যে প্রদ্যোত ছিলেন একজন। এই আক্রমণের ফলে ডগলাস মারা যান। ঘটনাস্থলের কাছে রিভলবারসহ ধরা পড়ে প্রদ্যোত। তদন্তের পর দেখা গেছে, প্রদ্যোতের গুলিতে ডগলাস নিহত হননি। অনেক নির্যাতনের পরও প্রদ্যোত তার সঙ্গীর নাম প্রকাশ করেনি। বিচারে তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়। আসল খুনি ছিলেন প্রভাংশুশেখর পাল।
শৈশব ও শিক্ষাজীবন—
প্রদ্যোত ভট্টাচার্যের জন্ম (৩ নভেম্বর, ১৯১৩) মেদিনীপুর জেলার দাসপুর থানার গোকুলনগর, রাজনগরে। তাঁর পিতার নাম ভবতরন ভট্টাচার্য। মেদিনীপুর হিজলী বন্দিশিবিরে নিরস্ত্র বন্দীদের গুলি চালানোর প্রতিবাদ করে ব্রিটিশদের হত্যায় তাঁর মনে ইন্ধন যোগায়।
ডগলাস হত্যা—
১৯৩১ সালের ৩০ এপ্রিল মেদিনীপুরের দ্বিতীয় শ্বেতাঙ্গ ম্যাজিস্ট্রেট ডগলাসকে হত্যা করা হয়। তখন তিনি জেলা পরিষদের সভায় সভাপতিত্ব করছিলেন। পুলিশ পাহারায় মোতায়েন করা হয়। এ সময় প্রদ্যোত ভট্টাচার্য ও প্রবংশুশেখর পাল ডগলাসকে আক্রমণ করে হত্যা করেন। প্রদ্যোত তাঁর সহযোগীকে পালাতে সাহায্য করার জন্য একটি পিস্তল নিয়ে দাঁড়ায় এবং ধরা পড়ে। প্রদ্যোতের বয়স ২০ বছর এবং সে মেদিনীপুর কলেজে পড়ত। প্রদ্যোত তাঁর সঙ্গীর নাম জানতে অত্যাচার চালাতে থাকে। কিন্তু তিনি কোনো দুর্বলতা দেখাননি। ১৯৩৩ সালের ১২ জানুয়ারি প্রদ্যোতকে ফাঁসি দেওয়া হয়।
।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।