পূর্ব মেদিনীপুর, নিজস্ব সংবাদদাতা:– আলোর উৎসবে কৃত্রিম আলো নয়, বাড়ছে চিরাচরিত মাটির প্রদীপের চাহিদা। সামনেই দীপান্বিতা আমাবস্যা বা কালীপুজো। দীপাবলি মানেই আলোর উৎসব। বিগত কয়েক বছর এই আলোর উৎসবের প্রধান উৎস ছিল রংবেরঙের বাহারী লাইট। কিন্তু ধীরে ধীরে বিক্রি বাড়ছে গ্রাম বাংলার চিরাচরিত মাটির প্রদীপের। মাটির প্রদীপ তৈরি ও বিক্রি বিগত ২-৩ বছর ধরেই ক্রমবর্ধমান দাবি বিক্রেতাদের। দীপান্বিতা অমাবস্যা বা কালীপুজোয় প্রদীপ জ্বালানোর প্রচলন আজকের না বহু প্রাচীন। কিন্তু ধীরে ধীরে দীপান্বিতা অমাবস্যা বা কালীপুজোয় প্রদীপ জ্বালানোর চল বদলে যায় রংবে রঙের নানান ইলেকট্রিক লাইটে। ঘরে ঘরে বাহারি লাইটের শোভায় প্রদীপের আলো ছিল ক্রমশ মুহ্যমান! একটা সময় দীপাবলীর সময়ে শহরের পাশাপাশি বাংলার ঘরে ঘরে বাহারি আলোর দাপটে হারিয়ে যেতে বসেছিল প্রদীপের শিখা। কিন্তু আবারও ধীরে ধীরে প্রদীপের শিখা প্রাণ ফিরে পারছে দীপাবলি উৎসবে। ফলে কুমোর পাড়ায় ব্যস্ততা মাটির প্রদীপ তৈরিতে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দকুমার ব্লকের দক্ষিণ ধলহরা, বেতকল্লা রাউতৌড়ি সহ বেশ কয়েকটি গ্রামে, কুমোর পাড়ার এই মুহূর্তে প্রদীপ তৈরীর ব্যস্ততা। কারণ বিগত তিন চার বছর মাটির প্রদীপের চাহিদা বেড়েছে কালীপুজোর সময়। সামনে কালীপুজো উপলক্ষে কুমোর পাড়ার ঘরে ঘরে মাটির প্রদীপ তৈরি করতে ব্যস্ত কুম্ভকারেরা। এই এলাকার কুম্ভকারেরা মাটির প্রদীপ তৈরি করে পাইকারি বাজারে বিক্রি করে। প্রতিবছর দুর্গাপুজো পর থেকেই মাটির প্রদীপ তৈরীর অর্ডার আসে দীপাবলি উপলক্ষে। বিগত বছর গুলিতে উত্তরোত্তর বাড়ছে প্রদীপ তৈরীর অর্ডার। কেউ কেউ আবার অর্ডার অনুযায়ী প্রদীপ তৈরি করে দিতে পারছেন না সময়ের অভাবে। প্রদীপ মাঙ্গলিক অর্থে ব্যবহৃত হয়। পুজো পার্বণ বা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে তাই প্রদীপ প্রজ্জলন করা হয়। একটা সময় দীপান্বিতা অমাবস্যা বা কালীপুজোয় আলো বলতে প্রদীপের আলোকেই বোঝাত। কিন্তু মাঝে রঙবেরঙের আলোর রোশনাইয়ে কিছুটা হল ফিকে পড়ে ছিল প্রদীপের আলো। কিন্তু আবারো প্রদীপের আলোর দিকে ঝুঁকছে মানুষ। ফলে দীপাবলিতে মাটির প্রদীপের চাহিদা বাড়ছে। এ বিষয়ে অদ্বৈত পাল নামে এক কুম্ভকার জানান,’আগের তুলনায় কালীপুজোর সময় মাটির প্রদীপের চাহিদা বেড়েছে। রংবেরঙের আলো যতই থাকুক মাটির প্রদীপের বিকল্প কিছু হয় না। তাই মানুষ কালীপুজোর দিন মাটির প্রদীপেই আস্থা রাখছে।’