নদীয়া, নিজস্ব সংবাদদাতা:- স্বামী কাজের সুবাদে দিন এবং রাতের বেশিরভাগ সময় থাকেন কলকাতায়, একা ঘরে থাকার সুযোগে মোবাইল ফোনে মত্ত থাকেন মা। একমাত্র মেয়ের বিয়ে দেয়ার পর সীমা ছাড়ায় পরকীয়া।
সামাজিক মাধ্যমে প্রেমিকের সাথে বিভিন্ন ঘুরতে যাওয়ার ছবি, সহ পোস্ট “একে একে দুই! তিনের কি দরকার? ” আর সেই তিন অর্থাৎ ২২ বছর আগে ভালোবেসে অগ্নি সাক্ষী করে বিবাহ করা স্বামীকে গ্রুপের মধ্যে প্রেমিকদের সাথে নিয়ে হাতুড়ির বাড়ি মেরে হত্যা করলো স্ত্রী।
চরম অমানবিক এই ঘটনাটি ঘটেছে কোতোয়ালি থানার অন্তর্গত গোয়ালপাড়া এলাকায়। জানা গিয়েছে নিহতের নাম বিপুল ব্যাপারি। বয়স 39 বছর। রবিবার দুপুরে তার মৃত্যু হয় শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে। ঘটনার জেরে অভিযুক্ত স্ত্রী পাপিয়া ব্যাপারিকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও অভিযুক্তর প্রেমিক জয়ন্ত বাইন এখনো পলাতক ।
নিহতের পরিবারের দাবি, নিহত বিপুলের স্ত্রী পাপিয়া বেপারী পরকীয়ার সঙ্গে জড়িত, তা থেকেই শুরু হয় বিবাদ। তা নিয়ে মাঝেমধ্যেই পরিবারে গোলমাল শুরু হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৫শে অক্টোবর প্রায় সাড়ে ৯টা নাগাদ বিপুল যখন বাড়ি ফেরেন তখন তার স্ত্রী ও প্রেমিক জয়ন্তকে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখতে পান। তারপরই জয়ন্ত বিপুলের মাথায় একাধিকবার হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করেন বলে অভিযোগ। তারপর জয়ন্ত পালিয়ে যায়। বিপুলের স্ত্রী পাপিয়া অনেকক্ষণ পর চিৎকার করে লোকজন ডাকেন। নিহতের বৃদ্ধা বাবা হীরালাল বেপারী পাশের ঘরে ছিল বলেই জানা যায়। গৃহবধূ চিৎকার শুনে তিনি আসেন এবং অন্যান্য প্রতিবেশীরাও আসেন। এবং তারপর তারা দেখতে পান মেজে বিপুলে রক্তাক্ত অবস্থায়।
নিহতের পরিবার জানিয়েছেন, প্রথমে আহত বিপুল কে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে শান্তিপুর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর অবস্থা গুরুতর হলে তাকে কলকাতার নীলরতন মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তার একদিন পর কলকাতার পার্ক সার্কাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। বেসরকারি হাসপাতালে তার অস্ত্রোপচার করানো হয়। এবং শনিবার তাকে পুনরায় শান্তিপুর জেলা হাসপাতালে ফিরিয়ে আনা হয় ও সেখানে তাকে ভর্তি করা হয়। এবং রবিবার রাতে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে পুলিশ সূত্রে।
এই ঘটনার বিরুদ্ধে বিপুলের পরিবার বিপুলের স্ত্রী ও তার প্রেমিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনা ছেড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় গোটা এলাকায়। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে শান্তিপুর থানার পুলিশ।