পর্যটনের মরসুম শুরু হতেই বাঁকুড়ার শুশুনিয়া পাহাড়ের পরিবেশ রক্ষায় সচেতন করতে কোমর বেঁধে নেমে পড়ল বন দফতর।

আবদুল হাই,বাঁকুড়া:- “একটা প্লাস্টিক জমতে দেব না, পাহাড়ে আগুন লাগতে দেবনা”। বাঁকুড়ার শুশুনিয়াতে পর্যটনের মরসুম শুরু হতেই বাঁকুড়ার শুশুনিয়া পাহাড়ের পরিবেশ রক্ষায় সচেতন করতে কোমর বেঁধে নেমে পড়ল বন দফতর। বন দফতর বাঁকুড়ার ছাতনা ফরেস্ট রেঞ্জ, শুশুনিয়া বীটের বনকর্মী এবং আধিকারিকরা একগুচ্ছ নির্দেশিকা নিয়ে এদিন কর্মসূচী পালন করলেন। পাশাপাশি এদিন শুশুনিয়া মাঙ্গলিক সংঘ ও ছাতনা বনদপ্তর যৌথ উদ্যোগে একটি সচেতনতা গড়ার প্রচার মিছিলেরও আয়োজন করে। এই মিছিল থেকে শুশুনিয়া পাহাড়ের সবুজ রক্ষা এবং পাহাড়ের ইকো সিস্টেম বজায় রাখার আবেদন জানানোর পাশাপাশি, পরিবেশ রক্ষায় একগুচ্ছ সতর্কতাবিধি বেঁধে দিয়েছে বন দফতর।
শুশুনিয়া পাহাড় এবং সংলগ্ন এলাকায় প্লাস্টিক ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ। পাহাড়ে খালি জলের বোতল,চিপসের প্যাকেট, এবং যে কোন প্রকারের বর্জ্য পদার্থ ফেলা চলবেনা। জঙ্গলের গাছে পেরেক পোঁতা,গাছের গুড়িতে খোদাই করে নাম লেখা,গাছের ছালের মধ্যে কয়েন সাঁটিয়ে দেওয়া এমন কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে সকলকে। পাশাপাশি, পাহাড়ের ওপরে শুকনো পাতা বা গাছে আগুন লাগানো, সিগারেট বা বিড়ির অবশিষ্ট অংশ ফেলা, কোন দাহ্য পদার্থ নিয়ে পাহাড়ে চড়া নিষিদ্ধ।
এছাড়াও বিনা অনুমতিতে রক ক্লাইম্বিং অর্থাৎ পাহাড়ের শীর্ষে চড়া, পাহাড়ের পাদদেশে তাবু খাটানো চলবে না। শব্দ দুষণ বিধি লঙ্ঘন করে জোরে মাইক বাজালেও এখানকার বাস্তুতন্ত্রে তা প্রভাব ফেলবে। তাই মাইক বাজাতে হবে সীমিত শব্দের মধ্যে। স্থানীয় বাসিন্দা থেকে পর্যটক, এলাকার হোটেল ব্যবসায়ী, দোকানদার এবং ট্রেকিং এর জন্য আসা পাহাড় প্রেমী সকলকেই এই বন দফতরের জারি করা সতর্কতা বিধি মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছে বন দফতর।

প্রতি বছরই শুষ্ক শীতে আগুন জ্বলে শুশুনিয়া পাহাড়ের বুকে। এই বছর পাহাড়ের আগুন রুখতেও বিশেষ তৎপরতা দেখাচ্ছে বন দফতর। এখন দেখার বন দপ্তরের এই কর্মসুচিতে মানুষ কতখানি সচেতন হয়। তা না হলে বন দফতরকে বিকল্প পথ হিসেবে বিধি অমান্যকারীদের জরিমানা বা শাস্তির কোপে ফেলে শবক শেখাতে হবে, তা বলাই বাহুল্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *