‘কল্লোল’ যুগের প্রখ্যাত কবি-সাহিত্যিক ড. আয়কর পরামর্শদাতা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হলেও, মনীশ ঘটক একজন ছোট গল্প লেখক হিসাবেও পরিচিত। তিনি ছিলেন একজন বাঙালি গল্পকার, কবি ও ঔপন্যাসিক। পাবলো নেরুদার অনেক কবিতাও তিনি অনুবাদ করেছেন। তাঁর ছদ্মনাম যুবনাশ্ব।
জন্ম পারিবারিক জীবন ও শিক্ষা—-
মণীশ ঘটক ১৯০২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি পূর্ববঙ্গের রাজশাহীতে জন্মেছিলেন। তিনি বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরের বাসিন্দা ছিলেন। তাঁর পৈতৃক নিবাস ছিল নিউ ভারেঙ্গা, বর্তমান বাংলাদেশের পাবনায়। তাঁর পিতার নাম সুরেশচন্দ্র। সুরেশ চন্দ্র ডেপুটি এবং পরে ম্যাজিস্ট্রেট হন, তাই মনীশ ঘটককে তার পিতার কাজে পূর্ববঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলে সময় কাটাতে হয়েছিল। টেনিস এবং হকি খেলায় পারদর্শী ছিলেন – আত্মজীবনী ‘মান্ধাতার বাবার আমল’-বইতে এসব কথা লিখে গেছেন স্বয়ং। আর ম্যাট্রিকের আগে পর্যন্ত পোলো খেলেছেন, ভালো ঘোড়া চড়তেন, বন্দুক ছোড়াতেও হাত পাকিয়েছেন। সাহিত্যে অনুরাগ পারিবারিক পরিমণ্ডল সূত্রেই তাঁর মধ্যে ছিল। মণীশ ঘটক ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক। তাঁর ভাই প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ঋত্বিক ঘটক এবং লেখক মহাশ্বেতা দেবী তাঁর কন্যা।
কর্মজীবন—-
মনীশ ঘটক 1924 খ্রিস্টাব্দে গল্পকার হিসাবে তাঁর সাহিত্যিক জীবন শুরু করেন। সে সময় কবি হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেন। তিনি কল্লোল যুগের লেখক ছিলেন। তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ শিলালিপি। তিনি যুবনাশ্ব ছদ্মনামে গল্প ও গদ্য লিখেছেন। তার একটি গল্পের বই পটলডাঙ্গার পাঁচালী। কনখল তাঁর লেখা একটি উপন্যাস। মান্ধাতা বাবার আমল তাঁর লেখা একটি আত্মজীবনীমূলক বই। তিনি পাবলো নেরুদার কবিতা অনুবাদ করেন। তিনি আজীবন বহরমপুর থেকে বর্তিকা নামে একটি ছোট পত্রিকা সম্পাদনা করেন। তিনি 1927 সালে ঢাকা থেকে প্রকাশিত বুদ্ধদেব বসু এবং অজিতকুমার দত্ত সম্পাদিত প্রগতি পত্রিকার সাথে যুক্ত ছিলেন নিয়মিত । মনীশ ঘটক আয়কর উপদেষ্টা হিসেবে যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেন।
তাঁর রচিত গ্রন্থ—-
তার কয়েকটি গ্রন্থ শিলালিপি, যদিও সন্ধ্যা, বিদুষী বাক্, কনখল, পটলডাঙ্গার পাঁচালী, মান্ধাতার বাবার আমল (আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ), একচক্রা (শেষ কাব্য সঙ্কলন) উল্লেখযোগ্য।
প্রয়াণ—-
২৭ ডিসেম্বর ১৯৭৯ সালে তিনি প্রয়াত হন।
।।তথ্য: সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।