রামের পরিবারদের দেখতে হলে আসতে হবে বাঁকুড়ার রামের পাড়ায়, ৩৫ এর বেশি পুরুষ সদস্যের প্রত্যেকেরই নাম “রাম” দিয়ে শুরু – জানুন ইতিহাস।

বাঁকুড়া জেলার আঁচুরি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত, পশ্চিম সানাবাঁধ গ্রামের রাম পাড়ায় সাত মুখার্জী পরিবারের বাস। এই সাত পরিবারের ৩৫-৪০ জন পুরুষ সদস্যের নাম শুরু হয় রাম দিয়ে। রামচরণ, রামশরণ, রামরঞ্জন কিংবা রামানন্দ মুখার্জী। নামের শুরু “রাম” দিয়েই। ২২ জানুয়ারী অযোধ্যায় রাম মন্দির প্রতিষ্ঠার আগেই উঠে এল বাঁকুড়ার সঙ্গে অযোধ্যার বিশেষ যোগসূত্র। কেন এই পাড়ার মানুষ রামের প্রতি এত নিবেদিত প্রাণ? আসল বিষয় জানতে পারলে অবাক হবেন।


শুধু অযোধ্যাতেই নয়, বাঁকুড়ার এই পাড়াতে প্রত্যেকেই রাম। বাঁকুড়ার রাম পাড়াতে প্রবেশ করলেই মনে হবে রাম রাজত্বে ঢুকে পড়েছেন। বাড়িতে বাড়িতে রামের নামে ফলক। পাড়ার শেষে রয়েছে একটি শতাধিক প্রাচীন রাম মন্দির। অযোধ্যা থেকে কর্মসূত্রে রমসরণ মুখার্জী এসেছিলেন বাঁকুড়ার এই গ্রামে। ওনার হাতেই আনুমানিক ২৫০ থেকে ৩০০ বছর আগে শালগ্রাম শীলার নিরাকার রাম প্রতিষ্ঠা পায় এই মন্দিরেই। বর্তমানে সাত মুখার্জী পরিবার প্রত্যেকেই রামের সেবাইত। পালায় পালায় দিনে তিন বার করে রামের পুজো করেন। মোট সদস্য সংখ্যা ৪৫-৫০ জন। তার মধ্যে ৩৫ এর বেশি পুরুষ সদস্যের প্রত্যেকেরই নাম “রাম” দিয়ে শুরু।

বিয়ে বাড়ি হোক অথবা, অন্নপ্রাশন। প্রতিটি অনুষ্ঠান বাড়িতেই সিংহাসনে করে নিয়ে যাওয়া হয় রামের শালগ্রাম শীলা। বছরের পর বছর ধরে পুরনো ঐতিহ্য বজায় রেখেছে রামপাড়া। বাঁকুড়ার রাম পাড়ার উৎস ৭৮০ কিলোমিটার দূরের অযোধ্যায়।গোটা দেশ এখন অযোধ্যায় রাম মন্দির প্রতিষ্ঠার অপেক্ষায় রয়েছে। রাম পাড়াতেও যেন মানুষ বিশেষ খুশি।

রাম পাড়ার বাসিন্দা রাম রঞ্জন মুখার্জী জানান, “অযোধ্যায় রাম মন্দির প্রতিষ্ঠা দিন আমরা বিশেষভাবে পূজো করবো। যদিও আমাদের ঐতিহ্যবাহী রাম পাড়ার সঙ্গে কোন রাজনৈতিক যোগসূত্র নেই। আমরা সম্পূর্ণ স্বতন্ত্রভাবে আমাদের ঐতিহ্য বজায় রেখেছি।”

।।কলমে : আবদুল হাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *