আজ জাতীয় শিশুকন্যা দিবস, জানুন দিনটি কেন পালিত হয় ও গুরুত্ব।

0
178

একজন কন্যাই পারে তার গোটা পরিবারকে একই সূত্রে বেঁধে রাখতে——

কন্যা সন্তান আমাদের গর্ব এবং জাতির ভবিষ্যত। কন্যা সন্তানের ক্ষমতায়নের অর্থ আপনার ভবিষ্যতের ক্ষমতায়ন।

সমাজে মেয়েরা প্রতিমুহূর্তে যে লিঙ্গ বৈষম্যের মুখোমুখি হচ্ছে সে সম্পর্কে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যেই এটি শুরু করা হয়েছিল। বেশ কয়েক বছর ধরে, ভারত সরকার মেয়েদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টির গুরুত্ব সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করে তোলার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। এই কারণে কন্যা শিশুদের জীবনযাত্রার উন্নতির জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়াও শুরু হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি উদ্যোগ হল ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ‘কন্যাশ্রী’ এবং আরও অন্যান্য। কন্যা রাই এখন এগিয়ে যাচ্ছে সমান তালে ।

তাই প্রতি বছর ২৪শে জানুয়ারী ভারতে জাতীয় শিশুকন্যা দিবস পালিত হয়। ভারতীয় সমাজে যাতে মহিলারা ভেদাভেদ বা বৈষম্যের শিকার না হন, সেদিকে  জনসচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্য নিয়ে ২০০৮ খ্রিস্টাব্দে সর্বপ্রথম ভারত সরকারের মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রক দিনটি উদযাপনের সূচনা করে। বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও, শিশু লিঙ্গ অনুপাত এবং মহিলাদের জন্য এক স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ আবহ তৈরির জন্য সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান সহ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপিত হয়। দেশজুড়ে মৃলত সচেতনতা শিবির ও সেমিনারের আয়োজন করা হয়, যেখানে তুলে ধরা হয় শিশু কন্যাদের স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ পরিবেশ দেওয়ার কথা এবং সরকার যে যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তা সমক্ষে উপস্থাপন করা।

উদ্দেশ্য–

দেশের মহিলারা যেন কোনভাবে বৈষম্যের সম্মুখীন না হয় সেজন্য জনগণকে  সচেতন করা।

শিশুকন্যাদের অধিকার  সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।

নারী শিক্ষা ও তাদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টির গুরুত্ব সম্পর্কে  সচেতন করা।

 

তাৎপর্য–‐

শিশুকন্যাদের শিক্ষা, পুষ্টি, বাল্য বিবাহ, আইনি অধিকার এবং চিকিৎসা যত্ন সুরক্ষা সম্মান ইত্যাদি বিষয়ে সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান।

১) ভারতীয় সমাজে ক্রমবর্ধমান কন্যা ভ্রূণহত্যা ও শিশু হত্যার কারণে জাতীয় কন্যা শিশু দিবস উদযাপন শুরু হয়েছিল। ২) কন্যা ভ্রূণহত্যা নিয়ন্ত্রণে আনতে ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণের উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ৩) যাদের শিশু কন্যা আছে তাদের সরকার আর্থিক সহায়তা করছে এবং মেয়েদের বিনামূল্যে প্রাথমিক শিক্ষা প্রদান করার কথাও ঘোষণা করেছে।
৪) এই দিবসটি পালনের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হল, কন্যা শিশুদের অধিকার এবং তাদের শিক্ষার বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো। ৫) এই দিনটির আরেকটি লক্ষ্য হল, ভারতীয় সমাজে মেয়ে শিশুদের প্রতি অবিচারকে তুলে ধরা এবং তাদের স্বাস্থ্য ও শিক্ষার প্রচার করা। ৬) যেহেতু মেয়েরা প্রায়ই ভ্রূণহত্যা, শিশু হত্যা বা যৌন নির্যাতনের মতো সমস্যার মধ্য দিয়ে যায়, তাই এই দিনটিতে মেয়েদের সুরক্ষা এবং তাদের অবস্থার উন্নতির দিকে আরও বেশি করে ফোকাস করা হয়। ৭) কন্যা সন্তানের পক্ষে নেওয়া একাধিক উদ্যোগের কারণে, দেশে ধীরে ধীরে নারীশিক্ষা ও মেয়েদের স্বাস্থ্যের উন্নতি হচ্ছে।

উপসংহার: 

সর্বপরি,  কন্যা সন্তান হল দেবদূতের মতো, যে পরিবারে আসে সেই বাড়িতেই অফুরন্ত আনন্দ এবং ভালবাসায় ভরে ওঠে। কন্যা সন্তান জন্ম লক্ষির আগমন হিসেবে ধরা হয় একটি পরিবারে। পরিবারে সর্বদা সৌভাগ্য বিরাজ করে। একজন কন্যা তার পিতার হৃদয়ে বাস করে এবং মায়ের সত্যিকারের বন্ধু হয়ে ওঠে। তারা প্রত্যেক বাবা-মায়ের কাছে সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। কন্যার জন্ম পিতা-মাতার জীবনকেও অনেকাংশে বদলে দেয়। বড় হয়ে সে তার পরিবারের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেয়। বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ি এবং বাবার বাড়ি উভয় তরফেই সমান দায়িত্ব পালন করে। সর্বদা সবাইকে খুশি রাখতে এবং যেকোনও পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে একজন কন্যাই। তাই, আপনার যদি কন্যা সন্তান থাকে তাহলে আপনি হলেন পৃথিবীর সবচেয়ে ভাগ্যবান মানুষ। তাই সকলের উচিৎ একটি পরিবারে কন্যা ও পুত্র সন্তান কে সমান ভাবে গুরুত্ব দেওয়া। কন্যা সন্তান বলে তাকে অবহেলর চোখে কখনই দেখা উচিৎ নয়।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here