ভারতে, শহীদ দিবস হিসাবে আলাদা আলাদা ছয়টি দিবসকে ঘোষণা করা হয়েছে। যারা জাতির জন্য আত্মোৎসর্গ করেছে, তাদের শহীদ হিসাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।
২রা অক্টোবর দিনটা যদি ভারতবাসীর কাছে সবথেকে গর্বের দিন হয়, এই দিনে মহাত্মা গাঁধী জন্মগ্রহণ করার জন্য, তাহলে তাঁর মৃত্যুদিনটা ৩০ জানুয়ারী দেশবাসীর কাছে সবথেকে শোকের দিনও বটে।৩০ জানুয়ারী জাতীয় পর্যায়ে পালিত হয়ে থাকে। ১৯৪৮ সালে নাথুরাম গডসে কর্তৃক মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর হত্যার স্মৃতি হিসাবে দিনটি বেছে নেওয়া হয়েছে।
আজ থেকে ৭৫ বছর আগে আজকের দিনেই নাথুরাম গডসের হাতে প্রাণ হারান জাতির জনক । যে মানুষটা গোটা পৃথিবীকে দেখিয়েছিলেন অহিংসার পথ। তিনি দেখিয়েছিলেন স্বাধীনতা আন্দোলনের মতো বড় আন্দোলনও শান্তি এবং অহিংসা দিয়ে করা সম্ভব। তাই প্রতি বছর এই দিনটিকে শহিদ দিবস হিসেবে পালন করা হয়। অবশ্যই মহাত্মা গাঁধীর মৃত্যুদিন হিসেবে এবং দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে দেশের জন্য যে বীর শহিদরা প্রাণ দিয়েছিলেন, তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য দেশের সরকারের পক্ষ থেকে এই দিনটিকে বিশেষভাবে পালন করা হয়।
শহীদ দিবসে রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী, এবং তিন বাহিনী প্রধান রাজ ঘাট স্মৃতিসৌধের সমাধিতে জড়ো হন এবং নানাবর্ণের ফুল দিয়ে সজ্জিত পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। সকাল ১১টায় ভারতীয় শহীদদের স্মরণে দেশজুড়ে দুই মিনিটের নীরবতা পালন করা হয়। অংশগ্রহণকারীরা সর্ব-ধর্মের প্রার্থনা করার পর শ্রদ্ধা জানান।
এ ছাড়াও ভারতে যে যে দিন গুলি শহীদ দিবস হিসেবে পালিত হয়—
২৩ মার্চ—-
১৯৩১ সালের ২৩শে মার্চ লাহোরে (পাকিস্তান) ভগৎ সিং, সুখদেব থাপার এবং শিবরাম রাজগুরু মারা যাওয়ার বার্ষিকীকে শহীদ দিবস হিসাবে ঘোষণা করা হয়।
১৯ মে—–
আসাম রাজ্যের বরাক উপত্যকায় জনসংখ্যার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাঙালি হওয়া সত্ত্বেও আসাম সরকার রাজ্যের একমাত্র সরকারী ভাষা হিসাবে অসমীয়া ভাষাকে স্বীকৃতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলে প্রতিবাদ হিসেবে বাংলা ভাষা আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। বরাক উপত্যকায়, সিলেটি-ভাষী বাঙালি জনসংখ্যা ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠ। মূল ঘটনাটি ঘটেছিল ১৯৬১ সালের ১৯শে মে শিলচর রেলস্টেশনে, যেখানে রাজ্য পুলিশ কর্তৃক ১৫জন লোক শহীদ হয়। ১৯শে মে এখন “ভাষা শহীদ দিবস” হিসেবে স্বীকৃত।
২১ অক্টোবর—
২১শে অক্টোবর পুলিশ শহীদ দিবস (বা পুলিশ স্মরণ দিবস), দেশব্যাপী সকল পুলিশ বিভাগ পালন করে। ১৯৫৯ সালের এই দিনে, চলমান চীন-ভারত সীমান্ত বিবাদের অংশ হিসাবে লাদাখের ইন্দো-তিব্বত সীমান্তে একটি টহলরত কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনীকে চীনা বাহিনী আক্রমণ করেছিল।
১৭ নভেম্বর—-
ওড়িশা, ১৭ নভেম্বর, “পাঞ্জাবের সিংহ” খ্যাত লালা লাজপত রায়ের মৃত্যুবার্ষিকী পালন করে, যিনি ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের কাছ থেকে মুক্তির জন্য একজন ভারতীয় নেতা হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
১৯ নভেম্বর—
১৮২৮ সালের ১৯ নভেম্বর, মারাঠা-শাসিত রাজ্যের রাজকুমারী রানী লক্ষ্মীবাঈয়ের জন্মদিন এই অঞ্চলে শহীদ দিবস হিসাবে পালন করা হয় এবং ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহে যারা জীবন দিয়েছিল তাদের সম্মান জানায়, যার মধ্যে তিনিও একজন ছিলেন।
।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।