নদীয়া, নিজস্ব সংবাদদাতা:- গাঁদাফুল, নিম, কারিপাতা, কমলালেবুর খোসা থেকে তৈরি হচ্ছে ভেষজ আবির। হরেক রঙের এই আবির তৈরি করছেন রানাঘাট শহরে সরকারি উদ্যোগে ভবঘুরেদের জন্য নির্মিত নীড়াশ্রয়ের বাসিন্দারা। দোল উপলক্ষ্যে পুরসভা আয়োজিত বসন্ত উৎসবে ব্যবহৃত হবে ভবঘুরের বাসিন্দাদের তৈরি এই আবির। এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রানাঘাট পুরসভা কর্তৃপক্ষ। নীড়াশ্রয় চত্বরে কয়েক প্রজাতির শতাধিক গাঁদা ফুলের গাছ লাগানো হয়েছিল। পাপড়িতে দাগ নেই, গত শীতের মরশুমে এমন ফুলগুলো গাছ থেকে তুলে আলাদা করে রাখা হয়। সেই সমস্ত ফুল দীর্ঘদিন রোদে রেখে শুকোনো হয়। পাশাপাশি নিমপাতা, পালং শাক, কারিপাতা, কমলালেবুর খোসাও রোদে শুকিয়ে পাউডারের মতো গুঁড়ো করা হয়। ফুলের পাপড়ির গুঁড়োর সঙ্গে এই ধরনের প্রাকৃতিক পদার্থগুলো মিশিয়ে তৈরি করা হয়েছে ভেষজ আবির। সঙ্গে মেশানো হয়েছিল গুঁড়ো ও কাঁচা হলুদ। আর এই সবটাই তৈরি হয়েছে নীড়াশ্রয়ে। এখানে বসবাসকারী ২২ জন সদস্যের মধ্যে কেউ বাগান থেকে ফুল তোলার কাজ করেছেন। আবার কেউ কেউ সেগুলো ঝাড়াই বাছাই করে আবির তৈরিতে সাহায্য করেছেন। ইতিমধ্যেই নীড়াশ্রয়ে উৎপাদিত ফুল থেকে তিন রঙের মোট ১০ কেজিরও বেশি ভেষজ আবির তৈরি করা হয়েছে।নিরাশ্রয়ের ম্যানেজার সায়ক বিশ্বাস বলেন, এখানকার আবাসিকের নিজের পরিবার বলতে কিছুই নেই। তাই এই জায়গাই এখন ওদের কাছে পরিবার। নিজেরা উৎসাহ নিয়ে আবির তৈরি করেছেন ওনারা। আমরা শুধু উপায় বলে দিয়েছিলাম। রানাঘাটের চেয়ারম্যান কোশলদেব বন্দ্যোপাধ্যায়ের দোলের দিন পুরসভার উদ্যোগে বসন্ত উৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে। সেখানে নীড়াশ্রয়ের তৈরি এই আবির ব্যবহার করা হবে। আগামী বছর থেকে এই আবির বাজারজাত করারও পরিকল্পনা নিচ্ছি আমরা। এতে নীড়াশ্রয়ের বাসিন্দাদেরও আয় বাড়বে। দুর্গা মোদক, নিভা মোদক, রেবা বন্দ্যোপাধ্যায়, কৃষ্ণা সেনগুপ্তরা। তাঁরা বলেন, দোলের দিন সকালে এই আবির প্রথমে ঠাকুরের পায়ে দেবো। এরপর আমরা নিজেরা মিলেই রং খেলব। আমাদের কাছে এটুকুই তো অনেক আনন্দের।