ভবানীপ্রসাদ মজুমদার ছিলেন একজন খ্যাতিমান বাঙালি কবি এবং ছড়াকার যিনি বাংলা সাহিত্যে একটি অমোঘ ছাপ রেখে গেছেন। ১৯৫০ সালের ৯ এপ্রিল হাওড়া জেলার দাশনগরের কাছে দক্ষিণ শানপুর গ্রামে জন্মগ্রহণকারী মজুমদার তার কাব্যিক কল্পনার জন্য পরিপক্ক বিশ্বে বেড়ে ওঠেন। তাঁর বাবা-মা, নারায়ণচন্দ্র মজুমদার এবং নিরুপমা দেবী এই শান্ত পরিবেশে তাঁর প্রাথমিক বছরগুলি লালন-পালন করেছিলেন। তিনি একবিংশ শতকের বাঙালি ছড়াকারদের মধ্যে প্রথম সারির একজন। প্রায় ২০ হাজারের বেশি ছড়া লিখেছেন তিনি। কবির শৈশব জীবন তার গ্রামেই অতিবাহিত করেছেন।
কর্মজীবন——-
ল মজুমদার শিক্ষার জন্য তার জীবন উৎসর্গ করেছিলেন, হাওড়ার শানপুর গ্রামের কালীতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। শিক্ষাক্ষেত্রে তার যাত্রা তাকে প্রধান শিক্ষকের পদে উন্নীত করতে দেখেছিল, শিক্ষকতার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অনেক জীবন স্পর্শ করেছিল।
সাহিত্য চর্চা——-
তিনি প্রধানত ছোটদের উপযোগী মজার মজার ছড়া-কবিতা লেখায় বিশেষ পারদর্শী। তাঁর প্রকাশিত ছড়ার সংখ্যা কুড়ি হাজারের বেশি। ছড়া নিয়ে নিরন্তর নানান রকমের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে ভালোবাসেন। তিনি সাম্মানিক হিসাবে সন্দেশ পত্রিকার তরফে সুকুমার রায় পদক পান সত্যজিত রায়ের কাছ থেকে। পেয়েছেন শিশুসাহিত্য পরিষদ পুরস্কার, অভিজ্ঞান স্মারক, ছড়া সাহিত্য পুরস্কার’-সহ একশোর বেশি পুরস্কার।
কবির প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- মজার ছড়া, সোনালী ছড়া, কোলকাতা তোর খোল খাতা, হাওড়া-ভরা হরেক ছড়া, ডাইনোছড়া প্রভৃতি। তিনি সত্যজিৎ রায় ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে লিখেছেন- ছড়ায় ছড়ায় সত্যজিৎ এবং রবীন্দ্রনাথ নইলে অনাথ।
বিখ্যাত কিছু ছড়া/কবিতা——
তার বিখ্যাত কিছু ছড়া ও কবিতার নাম- আ-মরি বাংলাভাষা, বাংলাটা ঠিক আসেনা।
দুঃখজনকভাবে, সাহিত্য জগৎ ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪-এ এই আইকনিক ব্যক্তিত্বকে হারিয়েছে। মজুমদারের চলে যাওয়া একটি যুগের অবসান ঘটিয়েছে, কিন্তু তাঁর কাজগুলি অনুপ্রাণিত ও বিনোদন অব্যাহত রেখেছে, বাংলা সাহিত্য উত্সাহীদের হৃদয়ে তাঁর উত্তরাধিকার টিকে আছে তা নিশ্চিত করে।
Leave a Reply