বালুরঘাট শহরের বিদ্যালয়টিকে নিয়ে স্থানীয়দের আবেগকে গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান সন্তোষ হাঁসদা।

নিজস্ব সংবাদদাতা, বালুরঘাট:-  নামেই হিন্দি স্কুল,পঠনপাঠন হয় বাংলাতেই। বালুরঘাট শহরের এই স্কুলকে নিয়ে চর্চা সর্বত্র। কিন্তু পঠনপাঠন যে ভাষাতেই হোক না কেনো, এলাকার ঐতিহ্য বহণকারী নামটি থাকার পক্ষে স্থানীয়রা। তবে বিদ্যালয়টিকে নিয়ে স্থানীয়দের আবেগকে গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান সন্তোষ হাঁসদা।
দক্ষিন দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট শহরের কেন্দ্রস্থল অর্থাৎ বুড়া কালি এলাকায় রয়েছে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১৯৫৫ সালে প্রতিষ্ঠিত বালুরঘাট হিন্দি এফপি স্কুল নামে এই প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় অন্তত ৯৫ শতাংশ পরিবার হিন্দি ভাষী। সেকারণে প্রথম থেকে সেখানে হিন্দি ভাষাতেই চলছিল পঠনপাঠন। সেই সময় স্কুলটিতে পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল ১৫০ থেকে ২০০’র মধ্যে। হিন্দি ভাষী শিক্ষক ও হিন্দিতে লেখা বইপত্র সবকিছুই ছিল। জেলার একমাত্র হিন্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল এটি। এমনকি এলাকাটির নাম হিন্দি স্কুল পাড়া বলে পরিচিতি লাভ করেছে এরপর থেকে। কিন্তু বাম আমলে সেখানে হিন্দি ভাষায় পঠনপাঠন তুলে দেওয়া হয়। শুরু হয় বাংলায় পঠনপাঠন। প্রথম থেকে চতূর্থ শ্রেনী পর্যন্ত সেই বিদ্যালয়ে এমূহূর্তে ১৩ জন পড়ুয়া রয়েছে। ৩ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার মধ্যে অবশ্য একজন ডেপুটেশানে আছেন।
ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক কুন্তল দাস জানান, হিন্দি স্কুল লেখার কারণে কিছুটা বিভ্রান্তি দেখা দেয় মানুষের মধ্যে। হিন্দি শব্দটি না থাকলে হয়ত আরও কিছু পড়ুয়া বাড়ত বলে তারা মনে করেন।
তবে ওই এলাকার বাসিন্দা তথা বালুরঘাট পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান রাজেন শীল জানান, এলাকায় বেশিরভাগ হিন্দিভাষী মানুষ রয়েছেন। সেকারণে এই স্কুল চালু করা হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল এখানকার ছেলে মেয়েদের হিন্দিতে পড়াশোনা শেখানো। কিন্ত সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় মানুষজনের ভাবনা পরিবর্তন হয়েছে। একের পর এক গজিয়ে ওঠা বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে বাচ্চাদের পাঠাচ্ছেন এলাকার অবিভাবকরা। যাতে হিন্দির পাশাপাশি, ইংরেজিও শিখতে পারে। এখন এলাকার এই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঠনপাঠনে উৎসাহ নেই স্থানীয়দের। এমমকি হিন্দিতে শিক্ষাদানকারী শিক্ষকেরও সমস্যা রয়েছে। স্কুলটিকে আগের অবস্থানে ফিরিয়ে আনতে বিএসএফের সঙ্গেও যোগাযোগ করি, কিন্ত আর সম্ভব হয়নি। তবে স্কুলের নামটি এলাকার পুরনো ঐতিহ্য। সেটি পরিবর্তন না করার দাবি আমাদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *