নদীয়া, নিজস্ব সংবাদদাতা:- আম যদি দিল্লির দরবারে গিয়ে মেলায় বসতে পারে বাংলার প্রতিনিধিত্ব করতে পারে জি আই ট্যাগ পেতে পারে তাহলে লিচু নয় কেনো!
অথচ বাংলার লিচু ভারতের বাইরেও যথেষ্ট সুনাম কিন্তু সেভাবে প্রচার এবং প্রসার ঘটেনি, এমনই মত রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং বাংলা লোক সংস্কৃতি গবেষকদের। সেখানকার বাংলা বিভাগের অধ্যাপক নারায়ণ হালদার জানান, অতীতে নদীয়া জেলার শান্তিপুরে তার আদি বাড়ি ছিল সেই সুবাদেই প্রতিবার জেলা এবং অন্যান্য জেলায় ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে গরমের সময় দেশের বাড়ির লিচু বাগানে গিয়ে চড়ুইভাতী করে থাকেন। এর ফলে কলকাতা এবং শহরতলীর ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে লিচু দেখা খাওয়া এবং গাছ থেকে পাড়ার অনাবিল আনন্দ উপভোগ করানো যায় যা তাদের মাধ্যমে বিভিন্ন লেখায় গবেষণায় ছড়িয়ে পড়ে গ্রাম বাংলার অনাদরে থাকা লিচু। যদিও তিনি স্বীকার করেন এখন বাংলা লিচু ট্রেন পথে হোক কিংবা বিমানে চড়ে বাইরের দেশেও যাচ্ছে। তার ফলে কৃষকরা কিছুটা হলেও উপকৃত হয়েছেন কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এর মাঝে এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মুনাফা অর্জন করছেন। আগামীতে সরাসরি বহিরাগত ক্রেতারা বাগানে আসুক এমনটাই তিনি চাইছেন। আর তার ফলেই দরকার এই উৎসবের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে তিনি বলেন বাংলার আম নিয়ে তিনি অনেকটাই চেষ্টা চালিয়েছেন এবার যদি লিচু নিয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করেন তাহলে লিচু চাষের প্রবণতা বাড়বে।
অধ্যাপককের ছাত্রছাত্রীরা স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকা স্কলার এবং গবেষক। তারা অবশ্য এবছর প্রথম এসেছেন অধ্যাপকের আমন্ত্রণে। প্রথমে গ্রীষ্মকালীন চড়ুইভাতী শুনে খানিকটা অবাক হলেও, প্রখর গ্রীষ্মের মধ্যে সবুজে ভরা প্রাকৃতিক হাওয়ায় ভরপুর লিচু বাগানে তারা এক অভূতপূর্ব আনন্দের স্বাদ পায়। লিচু গাছের তলায় চলে চড়ুইভাতির রান্না। তারা জানায় কৃষকের সংস্কার হোক বা অত্যন্ত গরমের জন্য মেনুতেও কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে।
বাগানের আম দিয়ে ডাল ক্ষেতের জমির পটল বেগুন ঢেঁড়স ভাজা, পাট শাক, গ্রামের পুকুরের দেশি কাতলা , গঙ্গার পাবদা শান্তিপুরের দই এবং নিখুঁতি । তবে মেনু যাই হোক মূল মেনু অবশ্যই লিচু। খাওয়ার আগেই পরে টপাটপ মুখে যাচ্ছে লিচু। ছবি তোলা সারাদিন গাছে ওঠা এ বাগান থেকে সে বাগান হেঁটে বেড়ানো তবে অবশ্যই তুলনামূলকভাবে নেট কানেকশন কম থাকার কারণেই অনাবিল আনন্দে কোন ব্যাঘাত ঘটেনি বলেই মনে করছেন চড়ুইভাতীর সদস্যরা।