নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা, ১ লা অক্টোবর: —
ওল্ড মালদহ শহরের ঐতিহ্যবাহী ৪০০ বছরের অধিক বাচামারি সেন বাড়ির পুজোর জোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে গিয়েছে। সেন পরিবারের নামে পুজো হলেও আনুমানিক গত দু’শো বছর ধরে পরিচালনা করে স্থানীয় দাশগুপ্ত পরিবার। সেই প্রাচীন পুজোয় সপ্তমীতে এবার
স্টিলের পালকি করে সুসজ্জিত ভাবে কলা বউকে স্নান করতে মহানন্দা নদীতে নিয়ে যাওয়া হবে। পুনরায় মন্দিরে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হবে। স্টিলের পালকি তৈরি করা সম্পূর্ণ হয়েছে। মন্দিরে ভিতরে এক পাশে তা রাখা রয়েছে। প্রাচীন পুজোর নিয়ম এবং দেবী মা রূপ একই থাকছে। সেখানে আধুনিকতার ছোঁয়া প্রবেশ করেনি। মায়ের সাবেকিয়ানা সাধারণ রূপ। এক চালাতে দেবী দুর্গা সহ অন্যান্য দেব দেবীরা বিরাজ করবেন। ষষ্ঠীতে অধিবাস হবে। আগের নিয়ম অনুযায়ী পুজোর কয়েকদিন এখনও বলি প্রথা ধরে রাখা হয়েছে। তবে মানতের বলি সপ্তমী এবং সন্ধিতে হয় না। নবমীতে করা হয়। দশমীর দিনেই কলাবউ এবং ঘট বিসর্জন হয়। তারপর মূর্তি নিরঞ্জন হবে। প্রাচীন পুজোকে ঘিরে অলৌকিক ঘটনা রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ৪০০ বছর আগে বাচামারিতে এক জমিদারের বাড়িতে পুরোহিত শালগ্রাম শিলার নিত্য পুজো করতেন। শরৎকালে পুরোহিত নিত্যদিনের মতোই মহানন্দায় স্নান করতে গিয়েছিলেন। তিনি দেখেন, এক অপরূপ মহিলা কয়েকটি ছেলে মেয়ে নিয়ে নৌকা নিয়ে নদীর ঘাটে নামছেন। তার কাছে থালা, পান মশলার কৌটা সহ বিভিন্ন পুজোর বাসন উপরকরণ রয়েছে। পুরোহিত তাঁকে বলেন, “তোমার কথায় যাবে মা? সে বলে আমরা সেনদের বাড়ি যাব”। পুরোহিত তখন বলেন, তোমরা যাও আমি আসছি। তিনি স্নান সেরে সেনদের বাড়িতে এসে দেখেন কেউ আসেনি। খোঁজ করতে ঘাটে আসেন। দেখেন, থালা সহ পান মশলার কৌটা রয়েছে, কিন্তু মেয়েটি নেই। পরে স্বপ্নাদেশে দুর্গা পুজো শুরু হয়। প্রথম বছর ঘটে পুজো হয়। তারপর পটে। ৪০০ বছর ধরে মূর্তি তুলে আরাধনা হয়। এদিন সেনদের পুজো মন্ডপে গিয়ে দেখা গেল মন্ডপে এখনও ওই মেয়েটির নিয়ে আসা থালা সহ নানা কিছু রয়েছে। পুজোর পক্ষে শুভেন্দু এবং দিবেন্দু দাশগুপ্ত বলেন, ৪০০ বেশি বছরের পুজো এটি। ২০০ বছর আগে সেন বংশের এক মেয়ের সঙ্গে দাশগুপ্ত পরিবারের ছেলের বিয়ে হয়। তারপর থেকে আমাদের হাতে পুজো। পূর্বপুরুষেরা করেছেন।