নিজস্ব সংবাদদাতা, দক্ষিন দিনাজপুর : ফের ডেঙ্গির চোখরাঙানি দক্ষিণ দিনাজপুরে। উদ্বিগ্ন প্রশাসন। দক্ষিণ দিনাজপুরে ক্রমশ ডেঙ্গির সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। পুজোর সপ্তাহে ৬২ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের খবর মিলেছে, এবং বর্তমানে জেলাজুড়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪৭০-এ পৌঁছেছে। মূলত বর্ষার কারণেই আগষ্ট মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।এই পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দপ্তর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই স্বাস্থ্য কর্তা।পুজার মধ্যে দক্ষিন দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট ব্লকের চিংগীসপুর এলাকায় মশাবাহিত ভাইরাল রোগে আক্রান্ত হয়েছে বেশ কয়েকজন।তাদের এখনও চিকিস্যা চলছে। আশাকর্মী ও স্থানিও পঞ্চায়েতের তরফে তাদের দেখভালের পাশাপাশি এলাকায় সচেতনতা চালানো হচ্ছে।
জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, পুজোর আগে থেকেই ডেঙ্গি সংক্রমণ বাড়ছিল। তবে পুজোর সময় উৎসবের আমেজে জ্বর বা সর্দি-কাশি উপেক্ষা করায় পরিস্থিতি আরও গুরুতর হয়ে ওঠে। পুজোর পর বালুরঘাটের চেঙ্গিসপুর পঞ্চায়েতের কিসমত রামকৃষ্ণপুর ও শিয়ালা গ্রামে ডেঙ্গির প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। এই দুই গ্রামে ইতিমধ্যে ৭ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছে, এবং অনেকে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।যদিও গ্রামবাসীদের অভিযোগ প্রতিবছর এই অঞ্চলে ডেঙ্গি ছড়িয়ে পডলেও তা নিয়ে না পঞ্চায়েত বা জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কোন হেল দোল নেই। অথচ বছর বছর এই অঞ্চলে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যাও যেমন বেড়ে চলেছে। তেমনি মাঝে সাঝে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে।
ডেঙ্গু হল একটি মশাবাহিত ভাইরাল রোগ যা বেশিরভাগ গ্রীষ্মমন্ডলীয় এবং উপক্রান্তীয় অঞ্চলে প্রচলিত। এর লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে উচ্চ জ্বর, মাথাব্যথা, বমি, পেশী এবং জয়েন্টে ব্যথা, এর সাথে বৈশিষ্ট্যযুক্ত ত্বকের চুলকানি এবং ফুসকুড়ি।মূলত নিকাশিনালা এবং আবর্জনা পরিষ্কার, মশানিরোধক ওষুধ ব্যবহারের উপর জোর দিচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন। মশার কামড় রুখতে মশারি ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের একাংশ মনে করছেন, বর্ষার কারনে ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়লেও পরিস্থিতি এখনও হাতের বাইরে বেরোয়নি। তবে ডেঙ্গিরোধে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির উপর জোর দিতে চাইছে স্থানিও পঞ্চায়েত প্রশাসন।
পঞ্চায়েত এর পক্ষ থেকে সদস্য জানিয়েছেন আমরা এই বছরের শুরুতে আমাদের ডেঙ্গু সচেতনতা কার্যক্রম শুরু করেছিলাম। এখনও, মানুষের নৈমিত্তিক পদ্ধতির কারণে কিছু পকেটে মামলার সংখ্যা বেড়েছে,”। তবে আশাকর্মী ও স্বাস্থ্য দফতর ও স্থানিও পঞ্চায়েতের তরফে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে যথাসাধ্য ব্যবস্থ্যা নেওয়ার পাশাপাশি এলাকায় এলাকায় সচেতনতা ও মশারি ব্যবহারের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। এলাকায় জল জমা রোধেরও পরামর্শ ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যাপারে জোর দেওয়ার কাজ চলছে। তবে আক্রান্ত সব রোগী ক্রমশই সুস্থ্য হয়ে উঠছে বলে পঞ্চায়েত সদস্যের দাবি করেছেন।