বাঁকুড়া, নিজস্ব সংবাদদাতা:- বাঁকুড়ার মেয়ে দশম শ্রেনীর পাওলি কিসকু, দিল্লির বুক থেকে ফিন সুইমিং এ জাতীয় প্রতিযোগিতায় সোনা জিতে সাড়া ফেলে দিয়েছে গোটা রাজ্যে। মায়ের সঙ্গে বাঁকুড়া থেকে দুরু দুরু বুকে পাড়ি দিয়েছিল সে দিল্লিতে, এক সময় ট্রেন মিস হয়ে যাওয়ার ভয়ে চোখে জল আসে তার, এই বুঝি স্বপ্ন অধরা থেকে গেল কিন্তু যেকোনও ভাবে দিল্লি পৌঁছে যায় সে, ট্রেনের জেনারেল বগিতে কখনও দাঁড়িয়ে আবার কখনও বসে। এরপর বেঙ্গল দলের হয়ে “আন্ডার ওয়াটার স্পোর্টস ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া” পরিচালিত চতুর্থ জাতীয় ফিন সুইমিং চ্যাম্পিয়নশিপে “রিলে রেসে” সোনা অর্জন করে পাওলি। বাঁকুড়ার প্রতাপবাগানের অতুল মন্ডল স্মৃতি সন্তরণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ নেয় পাওলি। সেখানেই অভ্যর্থনা জানানো হয় তাকে। উঠে আসে বাঁকুড়ার মত প্রত্যন্ত জায়গা থেকে দিল্লি পাড়ি দেওয়ার গল্প।
ফিন সুইমিং সাঁতারের একটি নতুন বিভাগ। এই বিশেষ সাঁতারের ক্ষেত্রে জলের তলায় থাকতে হয় সাঁতারুকে। মুখের মধ্যে থাকে একটি নল, সেই নল জলের উপরে থাকে। নলের মাধ্যমে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস নেয় সাঁতারু। পায়ে লাগানো থাকে একটি পাখনা, অনেকটা জল পরীর মত। খুব দ্রুত এই সাঁতার। জলের তলায় জ্বলে সাঁতার। বাঁকুড়ার মত জায়গায় ফিন সুইমিং শিখে, দিল্লিতে গিয়ে বাজিমাত করল বাঁকুড়া মিশন গার্লস এর দশম শ্রেণীর ছাত্রী পাওলি কিসকু। যদিও, পুরোপুরি ভাবে সন্তুষ্ট হতে পারেনি পাওলি। পাওলি জানান, “রিলে রেসে সোনা জিতে ভালো লাগছে, তবে ইন্ডিভিজুয়ালি যদি আরেকটু ভালো পারফরমেন্স করতে পারতাম তাহলে খুশি হতাম। আশা রাখছি পরেরবার ইন্ডিভিজুয়াল গোল্ড আনব।”
প্রশিক্ষক থেকে শুরু করে পাওলির শুভাকাঙ্ক্ষীরা এবং কচিকাঁচা উঠতি সাঁতারুরা, সকলে মিলে অভ্যর্থনা জানায় পাওলিকে। বাঁকুড়ার ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের কাছে এক প্রকার ফিটনেস আইকনের মত অনুপ্রেরণার কাজ করছে পাওলি। প্রতিদিন মায়ের হাত ধরে সাঁতার শিখতে আসা থেকে শুরু করে, দিল্লি গিয়ে ভারত জয় করার গল্প এক প্রকার অবিশ্বাস্য। তবে একজন “স্পোর্টস পারসন” এর থেমে থাকা কাজ নয়, সেই জন্য পরের বারের জাতীয় প্রতিযোগিতার প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে বাঁকুড়ার মেয়ে পাওলি।