পতিরাম বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিদ্যাসাগরের মূর্তি উন্মোচন।।।

দঃ দিনাজপুর, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ- আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ২১শে ফেব্রুয়ারির সকাল থেকেই পতিরাম বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উৎসবের চেহারা ছিল। প্রতিটি অনুষ্ঠান বিদ্যালয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পালিত হয় আমরা বিদ্যালয়ে গিয়ে জানলাম। আজ‌ও তার অন্যথা হয়নি। প্রার্থনার সময় শিশুরা জাতীয় সঙ্গীত ও রাজ্য সঙ্গীত দিয়ে আজকের বিদ্যালয়ের কাজ শুরু হয়। সাথে শিশুরা বেশ সুন্দর স্বাস্থ্য বিধান গান গেয়েছে। আজকের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক শ্রী মৃণ্ময় সরকার, চক্রের শিক্ষা আধিকারিক শ্রী অপু বিশ্বাস ও বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষিক শ্রী পার্থ প্রতিম চট্টোপাধ্যায় মহাশয়।

এদিন প্রার্থনার পর সন্মানীয় অতিথি বর্গকে পুষ্পস্তবক দিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয়। এরপর অতিথিবর্গ পন্ডিত ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের আবক্ষ মূর্তি উন্মোচন করেন। উদ্বোধক শ্রী মৃণ্ময় সরকার মহাশয় মূর্তিতে মাল্যদান করেন। এরপর প্রধান অতিথি শ্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় মহাশয় ও শ্রী অপু বিশ্বাস মহাশয় এবং উপস্থিত অভিভাবকগণ ও ছাত্রছাত্রীবৃন্দ বিদ্যাসাগরের চরণে পুষ্পার্ঘ্য দেন।

এদিন বিদ্যালয়ে উৎসবের চেহারা ছিল চোখে পড়ার মত। অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক মহাশয় সংক্ষিপ্ত ভাষণে বিদ্যালয়ে অনেক প্রতিভাবান শিশুদের কথা তুলে ধরেন। আজকের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের কথা বিস্তৃত ভাবে আলোকপাত করেন। মৃণ্ময়বাবু আরও বলেন এই বিদ্যালয়ের পরিবেশ অত্যন্ত সুন্দর ও পড়াশোনা খুব উন্নত মানের। প্রতি মাসেই পরিদর্শন করতে আসি।

প্রধান অতিথি শ্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় মহাশয় বলেন আমার অসম্পূর্ণ কাজ বিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষক শিক্ষিকা বৃন্দ একত্রিত করতে পেরেছেন এজন্য আমি অত্যন্ত আনন্দিত। এভাবেই বিদ্যালয় শিশুদের প্রাণপ্রিয় জায়গা হয়ে উঠবে এই আশা রাখি।

এদিন বিদ্যালয়ে পূর্বতন কৃতী দুই ছাত্রী অন্বেষা ঘোষ ও আশাদিয়া মন্ডলের হাতে বৃত্তি পরীক্ষায় অসামান্য ফলাফলের জন্য স্মারক সন্মান প্রদান করা হয়। বিদ্যালয়ের শিক্ষক দিব্যেন্দু বসাক জানান এই দুইজন ছাত্রী বৃত্তি পরীক্ষায় জেলার মধ্যে ভালো ফলাফল করেছিল। তার মধ্যে অন্বেষা ঘোষ দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে আমাদের বিদ্যালয়ের মান গৌরবান্বিত করেছে। প্রায় একবছর পর এদেরকেও আমরা পুরষ্কৃত করলাম।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রেখা বর্মন জানিয়েছেন একমাস পূর্বে আমি এই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্বভার পেয়েছি। আজকে অভিভাবক ও শিক্ষক- শিক্ষিকাদের আর্থিক সহযোগিতায় এই মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়েছে। এর পাশাপাশি আজকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে মনোগ্রাহী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের‌ও আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠান শেষে সকলকে সুস্বাদু চকোলেট ও ডিম ভাত খাওয়ানো হয়েছে।

পূর্ণিমা সরকার ও শিখা বর্মন নামে দুই অভিভাবক জানিয়েছেন এই স্কুলে বহু প্রতীক্ষিত বিদ্যাসাগরের মূর্তি আজ প্রতিষ্ঠিত হল। স্যার ম্যাডামদের আহ্বানে আমরা সাড়া দিয়ে সবরকমের সহযোগিতা করে বিদ্যালয়কে আরও সুন্দর করতে চাই। পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধূলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এই জেলার মানচিত্রে অবশ্যই একটা জায়গা পেয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *