রূপালী ধর স্মৃতি সম্মাননা – ২০২৫।

আমতা, হাওড়া, নিজস্ব সংবাদদাতা :- মর্য্যাদা সৈনিক প্রয়াতা রূপালী ধর এর স্মরণে মর্য্যাদা সুরক্ষা আন্দোলন কর্তৃক ২০২২ সাল থেকে প্রবর্তিত রূপালী ধর স্মৃতি সম্মাননা রাণাঘাট এর পায়রা ডাঙ্গা মর্য্যাদা সৈনিকবৃন্দ এই অনন্য সম্মাননা প্রদান করছেন রাজ্যে নারী হিসাবে সমাজসেবামূলক কাজে উল্লেখযোগ্য অনন্য নজির স্থাপন করার জন্য। রূপালী ধর স্মৃতি সম্মাননা ‌- ২০২৫ দেওয়া হল রাজ্যের মধ্যে নারী হিসাবে সমাজসেবামূলক কাজে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ গ্ৰামীণ হাওড়া জেলার উলুবেড়িয়া মহকুমা তথা উলুবেড়িয়া উত্তর বিধান সভা কেন্দ্রের অন্তর্গত আমতা ১ নং পঞ্চায়েত সমিতির অধীন রসপুর গ্ৰাম পঞ্চায়েতের ” কলিকাতা বিধান মানব বিকাশ সমিতি ” – র অর্চিতা বসু -কে। অর্চিতা বসু প্রসঙ্গে জানা যায়, বিগত কয়েক দশক ব্যাপী অর্চিতা বসু নিরলস সমাজসেবার কর্মধারা নতুন প্রজন্মের সামনে এক ইতিবাচক অনুসরণযোগ্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে একাধিকবার গ্ৰামীণ হাওড়া জেলার আমতা ১ নং পঞ্চায়েত সমিতির নারী ও শিশু কল্যাণ দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ হিসাবে উল্লেখযোগ্য দায়িত্ব পালন করেছেন। বতর্মানেও তিনি আমতা ১ নং পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যা আছেন।তা সত্ত্বেও তাঁর রাজনৈতিক পরিচয় কখনোই তাঁর সমাজকর্মী সত্ত্বার সঙ্গে এঁটে উঠতে পারে নি। রাজনৈতিক দলে যোগদান ও সক্রিয়ভাবে যোগদান করার অনেক আগে থেকেই অর্চিতা বসু সমাজসেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেন। সমাজসেবা তাঁর রক্তে প্রবাহিত হচ্ছে। সমাজসেবায় তাঁকে উদ্ধুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত করেছিলেন তাঁর মাতা প্রয়াতা রূপালী বসু ও তাঁর পিতা প্রয়াত শম্ভুচরণ বসু। সমাজসেবায় সর্বদা তিনি পাশে পাচ্ছেন স্বামী তারাপদ মান্না,পুত্র সৌপায়ন মান্না,কন্যা আত্রেয়ী মান্না – কে।সমাজসেবার জন্য আমতা, উদয়নারায়ণপুর,বাগনান, শ্যামপুর, উলুবেড়িয়া, জগৎবল্লভপুর এর প্রত্যন্ত এলাকার অসহায়, অবহেলিত মানুষজন তাকে ‌’ মা ‘ বলে সম্বোধন করেন। সদালাপী,সদাহাস্যময়ী, মৃদুভাষী,যে কোনো মানুষকে কাছে টেনে নিয়ে আপন করে নেওয়ার ক্ষমতা এবং সমাজসেবা রক্তে প্রবাহিত সকলকে অনুপ্রাণিত করে। এখানেই অর্চিতা বসু – র সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব। অর্চিতা বসু অসুস্থ শরীরে ও গ্ৰামের পর গ্ৰাম প্রান্তিক এলাকার মানুষজনদের কাছে ছুটে বেড়ান। দামোদর নদের বন্যাবিধ্বস্ত ,বন্যাবিধ্বংসী চেহারার সাথে বছরের পর বছর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের জন্য লড়াই চলে তাঁর। নদীয়ার করিমপুরের পরিত্যক্তা মরনাপন্না মানসিক প্রতিবন্ধী এক কন্যাকে নিজের বাড়িতে রেখে শুশ্রূষা দিয়ে আপন কন্যা স্নেহে পালন করছেন। সন্তান মর্যাদায় নতুন জীবন দান করার মতো বিভিন্ন কাজ লোকচক্ষুর অন্তরালে নিরবে করে চলেছেন। প্রচারের আলোকে তিনি কখনও আসতে চান নি। তিনি বলেন, আমি যেটা করি,যেটা করছি সেটা মানুষ হিসাবে করা আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব ও কর্তব্যের মধ্যে পড়ে ” । প্রচার বিমুখ অর্চিতা বসু এই অনন্য সম্মাননা পাওয়ার পর বলেন, ” এই অনন্য সম্মাননা পাওয়ায় সমাজের অবহেলিত, নিপিড়িত, অসহায়, নির্যাতিত মানুষজনদের প্রতি, সমাজের উন্নয়নমূলক কাজের প্রতি আমার দায়িত্ব – কর্তব্য – দায়বদ্ধতা আর ও বাড়িয়ে দিয়েছে ” । নদীয়ার পায়রাডাঙ্গা – র এই অনন্য সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে মর্য্যাদা আন্দোলনের রাজ্যের বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন ইউনিট থেকে হাজারের ও অধিক নারী- পুরুষ সৈনিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ‌ অর্চিতা বসু এই সম্মাননা পাওয়ায় হাওড়া জেলা তথা কলিকাতা গ্ৰাম সহ হাওড়ার প্রত্যন্ত অসংখ্য এলাকার মানুষ আনন্দিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *