মহাসমারোহে অনুষ্ঠিত হল বিকট কালী মাতার বাৎসরিক পুজো।

নিজস্ব সংবাদদাতা, হিলি, ১৪ এপ্রিল : – সুপ্রাচীন ঐতিহ্য পরম্পরা মেনে মহাসমারোহে অনুষ্ঠিত হল বিকট কালী মাতার বাৎসরিক পুজো। চৈত্র সংক্রান্তি তিথি সকাল থেকে মন্দিরের গর্ভগৃহে মহাপুজো শুরু হয়। সকালে মহাস্মান, দুপুরে পঞ্চ ও ষোড়শ উপাচার, বিকেলে বলি ও লোকক্রিয়া এবং রাত পর্যন্ত পুজো অনুষ্ঠিত হয়। পুজো উপলক্ষে লক্ষ মানুষের সমাগম ঘটে মন্দির প্রাঙ্গণে। পুজোকে কেন্দ্র করে সুবিশাল এলাকা জুড়ে তিনদিনের মেলা বসেছে। মেলায় ভিড় নিয়ন্ত্রণে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়ন করেছে হিলি থানার পুলিশ। মেলায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কড়া নজরদারির ব্যবস্থাও করেছে পুলিশ।

১১৭৯ খ্রিস্টাব্দে সেন বংশের রাজা লক্ষ্মণ সেন সিংহাসন লাভ করেন। লক্ষ্মণ সেন তার মূল অভিষেক উপলক্ষ্যে ঐন্দ্রী মহাশান্তি উৎসব সম্পাদনের জন্য ব্রাহ্মণকে ভূমিদান করেন। তার দানকৃত ভূমি অবস্থান ছিল বরেন্দ্রীর অন্তর্গত “দাপণিয়া পাঠক”। অথর্ববেদের পৈপ্পলাদ শাখানুধ্যায়ী ব্রাহ্মণ শান্ত্যাগারিক পদে অধিষ্ঠিত কৌশিক গোত্রভুক্ত গোবিন্দ দেবশর্মা নাম এক ব্রাহ্মণকে ভূমি দান করেছিলেন লক্ষ্মণ সেন। তারপর থেকেই অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে শ্রী শ্রী ৺বিকট কালী মাতা ঠাকুরানী’র পুজো। প্রত্যেকবছর চৈত্র সংক্রান্তি তিথি বিকট কালী মাতার পুজো অনুষ্ঠিত হয়।

চৈত্র সংক্রান্তির ৯দিন পূর্বে বিকট কালী মাতার মঙ্গল ঘট স্থাপন করা হয়। তার পঞ্চম দিনে ভক্তের ব্রতের শুভারম্ভ হয়। এদিন চৈত্র সংক্রান্তি তিথিতে বিকট কালী মাতার বাৎসরিক পুজো অনুষ্ঠিত হয়। দুপুরে বিশেষ রীতি বাঁশের ডালায় ঘোটা ফল নিবেদন করেন ৯ হাজার মাহিলা। বিকালে বিশেষ নিয়মে ৬ হাজার ভক্ত ব্রতের নাগরা ভাঙা ও লোকক্রিয়া অনুষ্ঠিত হয়। রাতে শতাধিক বিকট কালী মাতার চামুণ্ডা মন্দিরে রীতি মেনে ঐতিহ্যবাহী নৃত্য করে। তারপরে বিশেষ রীতিতে রাতে মহাপুজো অনুষ্ঠিত হয়।

এপ্রসঙ্গে বিকট কালী মাতার মন্দিরের সভাপতি রতন সরকার বলেন, “লক্ষ্মণ সেন দ্বারা ১১৭৯ সালের মন্দির প্রতিষ্ঠা থেকে প্রবাহমান ধারা আজও বজায় রেখে মায়ের পুজো অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ৯দিন আগে থেকে মায়ের পুজো শুরু হয়েছিল। আজ শেষ এবং বাৎসরিক মহাপুজো অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সকাল থেকে মায়ের পুজো শুরু হয়েছে। রাত অবধি মায়ের পুজো অনুষ্ঠিত। বিভিন্ন লোকক্রিয়া ও চামুণ্ডা নৃত্য অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত মেলা চলবে।”

এপ্রসঙ্গে হিলি থানার আইসি শীর্ষেন্দু দাস বলেন, “ট্রাফিক ও ভিড় নিয়ন্ত্রণে বিশাল পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পুলিয় পিকেটিং করে মেলায় কড়া নজরদারি রয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *