মেখলিগঞ্জ পুলিশ প্রশাসনের একটি প্রশংসনীয় ও মানবিক দৃষ্টান্ত।

কোচবিহার, নিজস্ব সংবাদদাতা:- একসময় যেখানে গ্রামে পুলিশের পা পড়লেই উদ্বেগ ছড়াত, এদিন দেখা গেল এক সম্পূর্ণ ভিন্ন ছবি। গ্রামের মানুষ অপেক্ষা করছিলেন, কখন পুলিশের গাড়ি এসে পৌঁছাবে। গাড়ি থেকে পুলিশ আধিকারিকরা নামতেই আনন্দে মুখরিত হয়ে ওঠেন গ্রামবাসীরা। পান-সুপারি ও চা, মিষ্টি দিয়ে আন্তরিক অভ্যর্থনা জানানো হয় তাঁদের।

এদিন মেখলিগঞ্জ ব্লকের বিভিন্ন গ্রামের দুস্থ অথচ মেধাবী উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের বাড়িতে গিয়ে সম্মান জানান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মণিভূষণ সরকার নিজে। তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয় মিষ্টির প্যাকেট, পেন, ডায়েরি, সম্মান স্মারক এবং নগদ আর্থিক সহায়তা। এই সম্মাননা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জামালদহ পুলিস ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক বিশেষ তামাং ও অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকরা।
সম্মানপ্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে রয়েছেন রানিরহাটের সৌরভ রায়। তিনি পেয়েছেন ৪৭৪ নম্বর। উছলপুকুরির জ্যোতি অধিকারী। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৪৫৭, জামালদহের জয়শ্রী বর্মন, তিনি পেয়েছেন ৪৬২ এবং উছলপুকুরির যমজ বোন নবনীতা ও বর্ণিতা রায়। তাঁরাও ৮০ শতাংশের উপরে নম্বর পেয়েছেন।
এঁরা প্রত্যেকেই আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া কৃষক পরিবার থেকে উঠে এসেছেন এবং দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে উচ্চমাধ্যমিকে উজ্জ্বল ফল করেছেন।
ওসি মণিভূষণ সরকার বলেন, “আমি নিজেও সাধারণ পরিবার থেকে উঠে এসেছি। তাই এই পড়ুয়াদের কষ্ট আমি বুঝি। তাঁদের পাশে দাঁড়ানোকে কর্তব্য মনে করি।”
অন্যদিকে বিশেষ তামাং জানান, “দারিদ্র্যের কারণে প্রতিভা নষ্ট হোক, তা হতে পারে না। আমাদের চেষ্টা থাকবে সর্বদা পাশে দাঁড়ানোর।”
এই মানবিক পদক্ষেপে খুশি পড়ুয়াদের পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের মতে, পুলিশ প্রশাসনের এমন ভূমিকা সমাজে এক ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দেয় এবং পুলিশের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা ও আস্থা আরও দৃঢ় হয়।
এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে মেখলিগঞ্জ পুলিশ প্রশাসনের একটি প্রশংসনীয় ও মানবিক দৃষ্টান্ত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *