বাঁকুড়া, নিজস্ব সংবাদদাতা:- বারবার আবেদন-নিবেদনেও আবাস যোজনার তালিকায় নাম ওঠেনি। তাই বাধ্য হয়েই প্রবল ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে এক সম্পর্কিত ভাইপো ও মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে কাঁচা বাড়ির খাটে শুয়েছিলেন পেশায় টেম্পু চালক প্রশান্ত গরাই। আচমকাই বজ্রপাতে চোখের সামনেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল মেয়ে। সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার সিমলাপাল থানার পচাপাথর গ্রামে।
পুলিশ জানিয়েছে মৃতার নাম প্রিয়া গরাই। ঘটনায় আহত হয়েছেন মৃতার বাবা প্রশান্ত গরাইও। পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে আজ ময়নাতদন্তের জন্য বাঁকুড়া সম্মিলিনী মেডিক্যাল কলেজে পাঠায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় টেম্পু চালক প্রশান্ত গরাই নিজের পরিবার নিয়ে থাকতেন পচাপাথর গ্রামের একটি বাড়িতে। পরিবারের সদস্যরা জানাচ্ছেন, পাকা বাড়ির জন্য লাগাতার আবেদন করলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। পাকা ঘরের প্রতিশ্রুতি মিললেও শেষ পর্যন্ত আবাস যোজনার তালিকায় ঠাঁই পাননি প্রশান্ত গরাই। গতকাল রাতে প্রবল ঝড় বৃষ্টি শুরু হলে নিজের একচিলতে বাড়িতেই এক ছেলে, এক মেয়ে, এক ভাইপো ও স্ত্রীকে নিয়ে আশ্রয় নেন প্রশান্ত গরাই। কিন্তু, কে জানতো রাতেই তাঁদের জন্য অপেক্ষা করছে বড় বিপদ।
পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা জানাচ্ছেন ঘরের দরজা বন্ধ করে বিছানায় মেয়ে ও ভাইপোকে নিয়ে শুয়েছিলেন তিনি। আচমকাই প্রবল বজ্রপাতের শব্দে কেঁপে ওঠে গোটা বাড়ি। অ্যাসবেস্টসের ছাদ ফেটে চুরমার হয়ে যায়। বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হন প্রশান্ত নিজেও। প্রাথমিক ঘোর কাটতেই দেখেন তাঁর পাশে শুয়ে থাকা মেয়ে প্রিয়া গরাইয়ের দেহে ততক্ষণে নিস্তেজ হয়ে গিয়েছে। দ্রুত গাড়ি ডেকে মেয়েকে নিয়ে খাতড়া মহকুমা হাসপাতালে হাজির হলে চিকিৎসকরা প্রিয়া গরাইকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃতার বাবা-সহ আত্মীয়দের দাবি, পাকা বাড়ি থাকলে এভাবে মর্মান্তিকভাবে মরতে হত বছর বারোর ওই কিশোরীকে।
Leave a Reply