সাপের কামড়, সাপ উদ্ধার, হাসপাতাল—এক রাতেই চিত্রক-সুমন্তের দুরন্ত তৎপরতা।

নিজস্ব সংবাদদাতা,বাগনান, হাওড়া:- গতকাল রাত ১২ টার পরে বাগনান হাসপাতাল থেকে মনোজ বেরা বন্যপ্রাণ সংরক্ষণকারী চিত্রক প্রামানিক কে খবর দেন, আমতা বিধানসভার বাইনান গ্রাম পঞ্চায়েতের খাজুট্টি দক্ষিণ পাড়ায় সেখ মহম্মদ শামিম রাতের খাবার খাওয়ার পর বাড়ির সামনে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। ঠিক সেই সময় বিষধর চন্দ্রবোড়া সাপ কামড় দেয় শামিমের ডান পায়ের গোড়ালির কাছে। শামিম তৎক্ষণাৎ সাপটিকে না মেরে একটি বালতি চাপা দিয়ে রেখে একটুও সময় নষ্ট না করে সোজা একজনের বাইকে চেপে বাগনান হাসপাতালে যান।
খবর পেয়েই মাঝরাতে বৃষ্টি ও জলের মধ্যেই পরিবেশ কর্মী চিত্রক প্রামানিক ও সুমন্ত দাস বাগনান হাসপাতালে যান এবং কর্তব্যরত ডাক্তার ও রোগীর সঙ্গে কথা বলেন। রোগীকে সাহস দিয়ে আশ্বস্ত করেন চিত্রক ও সুমন্ত। রোগীকে এন্টিভেনাম সিরাম বা এ.ভি.এস ও প্রয়োজনীয় ওষুধ দিয়েই তাকে বড়ো হাসপাতালে রেফার করা হয়। শামিম কে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দিয়ে রাত ১ টা নাগাদ শামিমের বাড়ি যাওয়ার পথেই একটি বিষধর চন্দ্রবোড়া সাপ একজনের বাড়ির সামনে রাস্তা পারাপার করছিলো। চিত্রক ও সুমন্ত বাইকের আলোয় সাপটিকে দেখে সঙ্গে সঙ্গে চন্দ্রবোড়া সাপটিকে উদ্ধার করে জার বন্দি করেন। আবার শামিমের বাড়ি গিয়ে কামড় দেওয়া বিষধর চন্দ্রবোড়া সাপটিকে উদ্ধার করা হয়। দুটি বিষধর চন্দ্রবোড়া উদ্ধাররের পর শামিমের বাড়ির লোকজন ও এলাকার লোকজন কে সাপ ও সাপের কামড় দেওয়া রোগীর চিকিৎসা সম্বন্ধে প্রাথমিক সচেতনতার পাঠ দেন চিত্রক ও সুমন্ত।

পরিবেশ কর্মী চিত্রক প্রামানিক বলেন – শামিম ও তার পরিবার যেভাবে সাপের কামড়ের পরেই সাপটিকে না মেরে, জার বন্দি করতে গিয়ে সময় নষ্ট না করে – সোজা বাইকে চেপে নিকটবর্তী সরকারি হাসপাতালে এসেছে, এটা ভীষণ সদর্থক পদক্ষেপ। এছাড়া এতো রাতে খবর পাওয়ার পরেই দ্রুততার সাথে সেই সাপ উদ্ধার ও রোগীকে আশ্বস্ত করা, তার চিকিৎসা তে সাহায্য করা- এটা ভীষণ জরুরি ছিলো।
সকালে খবর নিলাম। শামিম আপাতত স্থিতিশীল। কোলকাতার শম্ভুনাথ পন্ডিত হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। আশা করি শামিম তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবে।
সাপ উদ্ধারকারী সুমন্ত দাস বলেন, এখন বর্ষাকাল তাই সাপের আনাগোনা লেগে থাকবে। বাড়ির চারপাশে পরিষ্কার করে ব্লিচিং পাউডার ছড়ান এবং রাতে চলাফেরার সময় টর্চ ব্যবহার করুন। বাড়িতে সাপ ঢুকে গেলে নিকটের কোনো সর্প উদ্ধারকারী বা বন দফতর কে খবর দিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *