“CAA বাস্তবায়নের ডাক, রোহিঙ্গাদের নাগরিক সুবিধা দিলে হবে গণআন্দোলন”—বিজেপি নেতার হুঁশিয়ারি।

পূর্ব মেদিনীপুর, নিজস্ব সংবাদদাতা:- রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ, টাটা শিল্প সংস্থার প্রত্যাবর্তন, নারী সম্মান, এবং বাংলা ভাষা রক্ষাকে কেন্দ্র করে ফের একবার তীব্র আক্রমণ শানালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার পূর্ব মেদিনীপুরের মগড়ায় এক জনসভা ও পদযাত্রায় তিনি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন এবং কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প ও নীতিকে তুলে ধরেন।

মগড়া রামকৃষ্ণ সিনেমা হল থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে বৃষ্টিভেজা বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে পদযাত্রা করেন শুভেন্দু অধিকারী। শেষে মগড়া স্টেশনের পাশে আয়োজিত এক জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন—

“আমি ভারত সরকারকে অনুরোধ করব—যাদের আপনি চিহ্নিত করবেন রোহিঙ্গা হিসেবে, তাদের যোগিজির থেকে বুলডোজার নিয়ে তুলে কাঁটাতারের ওপারে ছুঁড়ে ফেলে দিন।”

তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বোলপুর প্রশাসনিক সভার বক্তব্যের প্রসঙ্গে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন পরিযায়ীদের জন্য ক্যাম্প তৈরি করতে হবে না। যারা বাঙালি, তারা বাড়ি ফিরে এসেছে। তাহলে ক্যাম্প কাদের জন্য? রোহিঙ্গাদের জন্য?”

শুভেন্দু অধিকারী সাফ জানিয়ে দেন, বাংলাদেশি রোহিঙ্গা মুসলমানদের অন্য রাজ্য থেকে তাড়ানো হলেও এই রাজ্যে রাজ্য সরকার তাদের রাখতে চায়। এ নিয়ে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করে তিনি বলেন—

“আপনার রেশন খাবে, জমি খাবে, এদের দিয়ে ভোট করাবে—আর বিজেপির মাথা ফাটাবে!”

তিনি আরও অভিযোগ করেন,

“বাংলা ভাষা রক্ষার নামে যারা চিৎকার করছেন, তারাই পশ্চিমবঙ্গে ৮ হাজারের বেশি স্কুল বন্ধ করে দিয়েছেন। উর্দু ভাষা প্রসারের স্বপ্ন দেখিয়েছেন। বাংলার অভিভাবকরা বাধ্য হয়ে বেসরকারি স্কুলে ছেলেমেয়েদের পাঠাচ্ছেন।”

নারীর সম্মান নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকাতেও আঘাত হেনে শুভেন্দু বলেন,

“গত ১৪ বছর ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বাস্থ্য ও পুলিশমন্ত্রী ছিলেন। তাঁর আমলেই বাংলার মা-বোনেরা সবচেয়ে বেশি অসম্মানিত হয়েছেন। নারীর সম্মান রক্ষায় আমরা ‘নারীর সম্মান যাত্রা’ শুরু করেছি।”

টাটা শিল্প ও কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে শুভেন্দু আশ্বাস দেন,

“আট মাসের মধ্যে টাটাদের ফেরাবো। এয়ারপোর্ট থেকে নবান্ন কতদূর তা দেখতে এসেছিলেন টাটারা। বিজেপিকে আনুন, টাটাদের হাতে পায়ে ধরে ফিরিয়ে আনব। ছেলেদের চাকরি হবে। শিক্ষিত বেকারদের জন্য কোনও ভেকেন্সি ফাঁকা থাকবে না। ওএমআর পদ্ধতিতে পরীক্ষা হবে।”

CAA ও ধর্মীয় শরণার্থী প্রসঙ্গেও তিনি বলেন,

“সিএএ করে মোদি সরকার যে কথা দিয়েছে—ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে যারা ভারতে এসেছে, তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। কিন্তু রোহিঙ্গারা তার আওতায় পড়ে না। তবুও এ রাজ্য তাদের নাগরিকত্ব দিতে উঠেপড়ে লেগেছে। এবার আন্দোলন হবে।”

বক্তব্যের একাংশে তিনি জানান—

“আমাদের কোনো শিক্ষিত মুসলমান ভাইদের সঙ্গে কোনো বিরোধ নেই। বিবেক-বুদ্ধি দিয়ে তাঁরা ভোট দিতে পারেন—পান্ডুয়া, ধনেখালি বা জাঙ্গিপাড়ার মতো জায়গায়।”

শেষে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন—

“আসন্ন নির্বাচনে বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে সংকল্প পত্র প্রকাশ করবে। ভোট হলে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী একে একে সব কাজ বাস্তবায়িত হবে। আনুন বিজেপিকে, আনুন উন্নয়ন।”

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *