হাওড়া, নিজস্ব সংবাদদাতা ২৮ জুলাই: – চাকরি, বকেয়া ডিএ-সহ একাধিক দাবিতে সোমবার ‘নবান্ন অভিযান’-এর ডাক দেয় বাংলার বঞ্চিত চাকরি প্রার্থী মঞ্চ, চাকরিজীবী ও চাকরিহারা ঐক্য মঞ্চ, সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ এবং পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক নাগরিক মঞ্চ। যদিও কলকাতা হাইকোর্ট আগে থেকেই জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে এবং হাওড়া সিটি পুলিশ আন্দোলনের অনুমতি দেয়নি, তবুও সকাল থেকেই হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় শুরু হয় আন্দোলনকারীদের জমায়েত।
এই কর্মসূচিতে পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক নাগরিক মঞ্চ আলাদাভাবে মিছিল করে আন্দোলনে অংশ নেয়। এই মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন মঞ্চের আহ্বায়ক শুভজিৎ দত্তগুপ্ত, পদ্মশ্রী প্রাপ্ত শিক্ষাবিদ কাজী মাসুম আখতার, ছাত্রনেতা ও মঞ্চের অন্যতম আহ্বায়ক আদিত্য দত্ত, এবং মানবাধিকার কর্মী অম্লান ভট্টাচার্য্য।
মিছিল যখন তেলকল ঘাট রোডে পৌঁছায়, তখন পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে সেটিকে আটকে দেয়। এরপর মিছিলকারীরা রাস্তার উপর বসে শান্তিপূর্ণ অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন। প্রবল বর্ষণের মধ্যেও বিক্ষোভ চলতে থাকে এবং শেষ পর্যন্ত দুপুরে সাময়িকভাবে কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করা হয়।
পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক নাগরিক মঞ্চের আহ্বায়ক শুভজিৎ দত্তগুপ্ত বলেন, “নবান্ন অভিযানে অংশগ্রহণ করায় আন্দোলনকারীদের নানা ভাবে হুমকি ও ভয় দেখানো হয়েছে। কিন্তু সমস্ত বাধা পেরিয়ে মানুষ পথে নেমেছে। এটা কোনও পরিসমাপ্তি নয়, বরং একটি দীর্ঘমেয়াদি গণআন্দোলনের সূচনা।”
শিক্ষাবিদ কাজী মাসুম আখতার জানান, “গণতান্ত্রিক অধিকারের এই লড়াইকে প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে দমন করা যাবে না। মানুষের প্রতিবাদ কখনোই দমানো যায় না। লড়াই চলবে।”
ছাত্রনেতা আদিত্য দত্ত বলেন, “আমরা এক প্রতারিত প্রজন্ম। বারবার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে, অথচ বাস্তবে কোনও সমাধান নেই। আজকের কর্মসূচি থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা আরও সংগঠিত আন্দোলনের পথে এগোব।”
মানবাধিকার কর্মী অম্লান ভট্টাচার্য্য বলেন, “আন্দোলনকে রাজনৈতিকভাবে ঠেকাতে আইনের অপব্যবহার হচ্ছে। এই কারণেই আমরা এই প্রতিবাদে সামিল হয়েছি।”
আন্দোলনকারীদের প্রধান দাবিগুলি ছিল— স্বচ্ছ ও নিয়মমাফিক নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করা, বেআইনিভাবে বাতিল হওয়া চাকরি প্রত্যাহার ও বঞ্চিতদের পুনর্বহাল, এবং স্থায়ী ডিএ কাঠামো চালুর ব্যবস্থা করা। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, খুব শীঘ্রই পরবর্তী কর্মসূচির ঘোষণা করা হবে।
Leave a Reply