দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নিজস্ব সংবাদদাতা:- স্বামীকে সরাতে প্রেমিকের সঙ্গে মিলে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ছক! তারপর দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে নিখোঁজ থাকার পর স্থানীয় একটি পেয়ারাবাগানের মাটি খুঁড়ে মৃত স্বামীর কঙ্কাল উদ্ধার করল পুলিশ। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার উস্তি থানার শিবপুর এলাকায়। ঘটনার মোড় ও নির্মমতা হার মানাবে যে কোনও চলচ্চিত্রকেও।
উস্তি থানার হরিহরপুরের বাসিন্দা ও পেশায় কাঠের ব্যবসায়ী মহসিন হালদার গত দু’মাস ধরে নিখোঁজ ছিলেন। পরিবারের তরফে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলে তদন্তে নামে পুলিশ। তদন্তে নেমে বিভিন্ন সূত্র ধরে খোঁজ মেলে মহসিনের এক কর্মচারী হাবিবুল্লার। শুরু হয় ধারাবাহিক জেরা। আর সেখান থেকেই বেরিয়ে আসে খুনের নৃশংস কাহিনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হাবিবুল্লার সঙ্গে মহসিনের স্ত্রী তনুজা বিবির পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন মহসিন। তাই দু’জনে মিলে মহসিনকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে। মাথায় ভারী বস্তু দিয়ে আঘাত করে খুন করা হয় মহসিনকে, আর সেই খুনে প্রত্যক্ষ সাহায্য করেন স্ত্রী তনুজা।
খুনের পর মৃতদেহ পুঁতে দেওয়া হয় শিবপুরের একটি স্কুলের পাশের পেয়ারাবাগানে। অথচ, কোনওরকম সন্দেহ যাতে না হয়, সেই কারণে তনুজা নিজেই থানায় স্বামীর নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন। পরে তদন্তে উঠে আসে, স্বামীর মৃত্যুর পর তনুজা ও হাবিবুল্লাকে একসঙ্গে ডায়মন্ড হারবারের একটি হোটেলে দেখা যায়।
ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জোনাল) মিতুন কুমার দে জানান, “তনুজাই প্রথম স্বামী নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। পরে তদন্তে বিভিন্ন তথ্য ও জিজ্ঞাসাবাদে মূল রহস্য উদঘাটন হয়।”
মহসিনের ২৫ বছর বয়সী ছেলে তৈয়ব আলি হালদারকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তথ্য-প্রমাণ ও স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে হাবিবুল্লা ও তনুজা বিবিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
আজ, সোমবার সকাল থেকে শিবপুরের ওই স্কুল লাগোয়া পেয়ারাবাগানের ঝোপঝাড় পরিষ্কার করে মাটি খুঁড়ে কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়। কঙ্কালটি ডিএনএ পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
Leave a Reply