নিউজ ডেস্ক, আন্তর্জাতিক সংবাদ:- রাশিয়া থেকে তেল আমদানি নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ৫০% শুল্ক আরোপ আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।
চিন ও তুরস্কের ক্ষেত্রে যথাক্রমে ৩০% ও ১৫% শুল্ক আরোপ করলেও, ভারতের ওপর দ্বিগুণ হারে শুল্ক বসানোয় বৈষম্যের অভিযোগ তুলেছে চিন সরকার।
🔹 চিনের তীব্র প্রতিক্রিয়া:
বুধবার বেজিংয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে চিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়:
> “এই পদক্ষেপ হলো আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ব্যবস্থার নগ্ন অপব্যবহার। যুক্তরাষ্ট্র কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বীদের দমন করতে শুল্ককে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। এটি একতরফা নীতিরই বহিঃপ্রকাশ।”
চিন একই সঙ্গে জানিয়েছে, তারা চায় না দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে কৃত্রিম বিভাজন তৈরি হোক। আমেরিকার এই পদক্ষেপকে তারা ‘অস্থিতিশীল আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরিবেশের উৎস’ বলেও অভিহিত করেছে।
🔹 ভারতের কড়া বার্তা:
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রক কড়া ভাষায় জানিয়েছে:
> “ভারত তার তেল আমদানির সিদ্ধান্ত জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্বার্থ বিবেচনা করেই নিয়েছে। আমরা কোনও তৃতীয় দেশের চাপের কাছে নত হব না।”
এছাড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে,
> “রাশিয়া থেকে তেল কেনা কোনো আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে না। যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্কনীতি একপাক্ষিক এবং অযৌক্তিক।”
🔹 ট্রাম্প প্রশাসনের যুক্তি:
হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে,
> “ভারত রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রেখে মার্কিন স্বার্থকে ক্ষুণ্ন করছে। আমাদের শুল্কনীতি সেই নিরাপত্তা স্বার্থ রক্ষার একটি পদক্ষেপ।”
তবে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসন ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির অংশ হিসেবে আঞ্চলিক কৌশলগত চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে।
🔹 বিশ্লেষণ: নতুন ভূ-রাজনৈতিক টানাপোড়েন
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের ওপর ৫০% শুল্ক চাপিয়ে যুক্তরাষ্ট্র শুধু অর্থনৈতিক চাপ তৈরি করছে না, বরং চিন-ভারত সম্পর্কের একটি নতুন মাত্রা সৃষ্টি করছে।
চিন এই মুহূর্তে আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য ও কৌশলগত প্রতিযোগিতায় লিপ্ত।
ভারতের ওপর একতরফা শুল্ক বসিয়ে আমেরিকা হয়তো ভারতকে নিজের দিকে টানার চেষ্টা করছে, কিন্তু এর উল্টো প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে।
চিন এই সুযোগে ভারত-চিন কৌশলগত সহাবস্থানে ফের সক্রিয় হতে পারে।
📌 সংক্ষিপ্তে মূল বিষয়বস্তু:
ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের ওপর ৫০% শুল্ক আরোপ করেছে
চিন ও তুরস্কের ওপর শুল্ক অনেক কম: ৩০% ও ১৫%
চিন বলছে, এটি বাণিজ্য ব্যবস্থার অপব্যবহার
ভারত বলছে, জাতীয় স্বার্থেই তেল কেনা, কোনও চাপ মানা হবে না
শুল্ক যুদ্ধ ঘিরে আমেরিকা, ভারত ও চিনের মধ্যে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ
Leave a Reply