বোলপুর, নিজস্ব সংবাদদাতা :- সারা দেশে যখন একের পর এক ছোট সিনেমা হলের পর্দা চিরতরে নেমে যাচ্ছে, তখন বোলপুর শহরের হৃদয়স্থলে এক ছোট সিনেমা হলকে নতুন করে জীবিত করার স্বপ্নে বিভোর হয়েছিলেন বেশ কিছু মানুষ। কিন্তু সেই স্বপ্নে পড়েছে বড় ধাক্কা। জায়গা জবরদখলের অভিযোগে ফের উত্তেজনা ছড়িয়েছে বোলপুরের প্রখ্যাত চিত্রা সিনেমা হলকে ঘিরে।
বহু বছর ধরে বোলপুরবাসীর বিনোদনের অন্যতম কেন্দ্র ছিল এই ঐতিহ্যবাহী সিনেমা হল। বাংলা ও হিন্দি সিনেমার পাশাপাশি মাঝে মাঝে স্থানীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও জমজমাট থাকত এই প্রেক্ষাগৃহ। কিন্তু করোনা মহামারীর ধাক্কায় বন্ধ হয়ে যায় হলের পর্দা। এরপর থেকেই শুরু হয় জমি ও দখল নিয়ে এক দীর্ঘ আইনি লড়াই।
সূত্রের খবর, SSR সিনেমাস প্রাইভেট লিমিটেড নামে এক সংস্থা সেই বন্ধ সিনেমা হলটি লিজে নিয়ে আধুনিকীকরণের উদ্যোগ নেয়। সংস্থার পরিকল্পনা ছিল দুই স্ক্রিন বিশিষ্ট একটি আধুনিক মাল্টিপ্লেক্স তৈরি করা—যেখানে শুধু সিনেমাপ্রেমীরাই নয়, স্থানীয় বহু মানুষও নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবেন।
কিন্তু ঠিক সেখানেই বাধা। অভিযোগ, করোনা পর্বে হল বন্ধ থাকার সুযোগে দীপঙ্কর ভকত নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে জায়গাটি অবৈধভাবে দখল করে নেন।
এদিন, রবিবার সকালে SSR সিনেমাস-এর কর্তৃপক্ষ বৈধ কাগজপত্র ও চাবি নিয়ে সিনেমা হলটি পুনরায় খোলার উদ্যোগ নেন। অভিযোগ, তখনই দীপঙ্কর ভকতের সঙ্গে তাদের বচসা বাধে। আরো অভিযোগ তিনি কোম্পানির কর্মীদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেননি।
তবে সংস্থার আধিকারিকরা পুলিশের উপস্থিতিতে আইনি প্রক্রিয়া মেনেই ভিতরে প্রবেশ করেন। সংস্থার পক্ষ থেকে রতন সাহা বলেন, “কোর্টের রায়কে অমান্য করেছেন ওই ব্যক্তি। আমরা সবকিছু আইন মেনে করছি। পুলিশ ও পৌরসভাকে জানানো হয়েছে। প্রয়োজনে আমরা উচ্চ আদালতে যাব।”
অন্যদিকে, দীপঙ্কর ভকত সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর বক্তব্য, “আমি কোনও অবৈধ দখল করিনি। সবটাই ভিত্তিহীন প্রচার।”
স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, সিনেমা হলটি চালু হলে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জন যুবক-যুবতীর চাকরির সুযোগ তৈরি হবে। একই সঙ্গে চিত্রা মোড়ের ব্যবসায়িক প্রাণও ফের জেগে উঠবে বলে আশাবাদী তারা।
এখন প্রশ্ন একটাই—আইনি জটিলতার অন্ধকার কাটিয়ে কবে ফের আলো জ্বালাবে, বোলপুর শহরের প্রাচীন সিনেমা হল – চিত্রা সিনেমা। না কি দখলদারি ও মামলার টানাপোড়েনে অন্ধকারেই থাকবে চিত্রা সিনেমা?












Leave a Reply