সরকারি শৌচালয় ব্যক্তিগত দখলে? অভিযোগে উত্তাল অফিসপাড়া।

নিজস্ব সংবাদদাতা, বালুরঘাট :- সরকারি উদ্যোগে নির্মিত কমিউনিটি শৌচালয়, অথচ ব্যবহার যেন ‘ব্যক্তিগত ইজারা’। বালুরঘাট পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের ওই শৌচালয় দিনের বেশির ভাগ সময়ই তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ অফিসপাড়া—ডিএম অফিস, এসডিও দফতর, পরিবহন দফতর, খাদ্য দফতর এবং মিউজিয়ামের মতো দফতরগুলির মাঝেই অবস্থিত এই শৌচালয় সাধারণ মানুষের ব্যবহারের জন্য তৈরি হলেও বাস্তবে তা হয়ে উঠেছে নাগরিকদের কাছে কার্যত অপ্রবেশযোগ্য।

বুধবার ওই এলাকায় ব্যক্তিগত কাজে এসে সমস্যায় পড়েন এক যুবক। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে কাজ সারার ফাঁকে জরুরি প্রয়োজনে ছুটে যান শৌচালয়ের দিকে। কিন্তু গিয়ে দেখেন, ঝুলছে তালা। শেষমেশ অস্বস্তি নিয়েই বাড়ির পথে রওনা দিতে হয় তাঁকে। পরে স্থানীয়দের মুখে শোনেন, পাশের কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং বিদ্যুৎ দফতরের বিল জমার কিয়স্কের কয়েকজন কর্মী নাকি নিজেদের সুবিধামতো শৌচালয়টি তালা দিয়ে রাখেন। তাঁদের অনুমতি না পেলে সাধারণ মানুষ ব্যবহার করতে পারেন না—এমনই অভিযোগ তাঁর।

এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, অভিযোগ সত্যি বলেই মনে হচ্ছে। শৌচালয়ের চাবি-ধারী এক ব্যক্তি অবশ্য দাবি করলেন, “চাবি তো অনেকের কাছেই আছে। পথ চলতি কেউ চাইলে দিয়ে দিই। আগে কিছু জিনিস চুরি গিয়েছিল বলে তালা দেওয়া হয়।” তবে সাধারণ মানুষ যে বারবার চাবি না পেয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন, সেই অভিযোগ মানতে চাননি তিনি।

ঘটনার খবর পেয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন বালুরঘাট পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক মিত্র। তাঁর কথায়, “এত সরকারি দফতরের মাঝখানে এই শৌচালয় সাধারণ মানুষের ব্যবহারের জন্যই। তালা বন্ধ থাকার কথা নয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, সরকারি কমিউনিটি শৌচালয়কে ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য আটকে রাখা অনৈতিক তো বটেই, তা প্রশাসনিক নজরদারির অভাবও তুলে ধরে। অবিলম্বে ব্যবস্থা না নিলে সমস্যার মাত্রা আরও বাড়বে বলেই তাঁদের আশঙ্কা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *