নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের তথ্যগত ত্রুটি প্রাণ কেড়ে নিল তৃণমূল কর্মীর।

মালদা, কালিয়াচক, নিজস্ব সংবাদদাতা:— নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে বাবার নামের তথ্যগত ত্রুটির জেরে তীব্র এস‌আইআর আতঙ্কে ফের এক তৃণমূল কংগ্রেসের বুথ লেভেল এজেন্ট বিএলও২ (BLA-2)দায়িত্বে থাকা কর্মীর মৃত্যুর অভিযোগ। মৃত কর্মীর নাম বরকত শেখ(৩৫)। এই মর্মান্তিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার রাতে কালিয়াচক তিন বিডিও অফিস চত্বর থেকে হাসপাতাল পর্যন্ত ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে। এই মৃত্যু স্বাভাবিক নয়, কমিশনের গাফিলতিতে এই মৃত্যু— এমনটাই অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব ও মৃতের পরিবার।
​চকসেহেরদি গ্রামের বাসিন্দা বরকত শেখের বাবার নাম রশুল শেখ।মৃত্যু বরকত শেখ কমিশনের ওয়েবসাইটে দেখে যে তার বাবার নামের জায়গায় শুধু ‘শেখ’ লেখা আছে। এই তথ্যগত ত্রুটি নজরে আসতেই তীব্র আতঙ্কে ভুগতে শুরু করেন বরকত। তাঁর আত্মীয় সামাউন শেখ জানিয়েছেন, ওয়েবসাইটে ভুল দেখেই বরকত ভীষণ ভয় পেয়ে গিয়েছিল। ভাবছিল, নাম হয়তো বাদ পড়ে যাবে। ভয়ে শুক্রবার বিকেলে বিডিও অফিসে গিয়েছিল সদুত্তর পেতে, কিন্তু সেখানেও কোনো সদুত্তর বা আশ্বাস দেওয়া হয়নি। অফিস থেকে বেরিয়ে এসেই হার্ট অ্যাটাক হয়।
​খবর পেয়ে দ্রুত হাসপাতালে ছুটে আসেন স্থানীয় বৈষ্ণবনগরের বিধায়ক চন্দনা সরকার। তিনি নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ক্ষোভ প্রকাশ করে বিধায়ক বলেন, নির্বাচন কমিশনের এমন মারাত্মক ভুলে বারবার মানুষ আতঙ্কিত হচ্ছেন। বরকত শেখও সেই আতঙ্কে প্রাণ হারালেন। বিডিও অফিসে গিয়েও তাঁকে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়নি যে তাঁর নাম থাকবে।ভোটের আগে এমন গাফিলতির জন্য নির্বাচন কমিশনই দায়ী। তিনি আরও জানান, এই বিষয়টি তাঁরা উচ্চ নেতৃত্বকে জানাবেন এবং এর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানাবেন।
​গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য সামিউল শেখ এই ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, নির্বাচনের আগে নামের সামান্য ত্রুটির কারণে মানুষজন চূড়ান্ত আতঙ্কে ভুগছেন। বরকত আমাদের দলের একজন নিষ্ঠাবান কর্মী ছিল। এই সামান্য ভুলের জন্য সে বিডিও অফিসে গিয়ে কোনো সুরাহা না পেয়ে, তার ফলেই এই মর্মান্তিক মৃত্যু। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাসপাতাল চত্বরে তৃণমূল কর্মীদের ভিড় ও বিক্ষোভে চরম উত্তেজনার পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে বৈষ্ণবনগর থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
যদিও কালিয়াচক তিন নম্বর ব্লকের বিডিও সুকান্ত শিকদারকে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে ফোনে পাওয়া যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *