ঘুরতে কে না ভালোবাসে। বিশেষ করে বাঙালিরা সুযোগ পেলেই বেরিয়ে পড়ে ভ্রমনের নেশায়। কেউ পাহাড়, কেউ সমুদ্র আবার কেউ প্রাচীন ঐতিহাসিক স্থান ভালোবাসে ভ্রমণ করতে। প্রকৃতি কত কিছুই না আমাদের জন্য সাজিয়ে রেখেছে। কতটুকুই বা আমরা দেখেছি। এ বিশাল পৃথিবীতে আমরা অনেক কিছুই দেখিনি। তবে সোশ্যাল মিডিয়ার দুনিয়ায় আজ গোটা পৃথিবীটা হাতের মুঠোয়় এলেও প্রকৃতিকে চাক্ষুষ প্রত্যক্ষ করা এ এক আলাদা রোমাঞ্চ, আলাদা অনুভূতি যার রেষ হৃদয়ের মনিকোঠায় থেকে যায় চিরকাল।। তাইতো আজও মানুষ বেরিয়ে পড়়ে প্রকৃতির কে গায়ে মেখে রোমাঞ্চিত হওয়ার নেশায়।
তবে আমরা চাইলেই আমাদের রাজ্যের মধ্যেই এমন কিছু স্থান রয়েছে যা দেখে মুগ্ধ হতে পারি। কলকাতার কাছাকাছি দেখার মতো কিছু আদর্শ স্থান সম্পর্কে জানতে পারবেন—
বনলতা রিসোর্ট, মুকুটমণিপুর, শান্তিনিকেতন, গর্পঞ্চকোট, তাজপুর।
আসুন এই স্থানগুলির প্রতিটি বিস্তারিতভাবে দেখি…
বনলতা রিসোর্ট ও জয়পুর জঙ্গল
সপ্তাহের শেষে একদিনের বা বড়জোর দুদিনের জন্য সমুদ্র দেখতে হলে যেমন মন্দারমনি বা তাজপুর আদর্শ জায়গা, তেমনই জঙ্গলের জন্য আদর্শ জায়গা এই জয়পুর জঙ্গল।জয়পুর জঙ্গল পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলায় অবস্থিত ঘন জঙ্গল, যেখানে প্রধানত শাল, সেগুন, পলাশ, কুসুম, মহুয়া, নিম এইসব গাছ দ্বারা পূর্ণ। সুন্দরবনের মত এই জঙ্গল এতটা বিখ্যাত না হলেও ফেলনা কিন্তু মোটেও না। এই জঙ্গলের কিছু কিছু জায়গা এতটাই গভীর যে সূর্যের আলো মাটি অবধি আসতে অনেক বেগ পেতে হয়। আর শুধু সবুজের ঘনত্বই না, এখানে বেশ কিছু বন্যপ্রাণীর বাস। বন্যপ্রাণীর কথাই যখন এল, তখন প্রথমেই যার নাম উল্লেখ করা যায় তারা হল চিতল হরিণ। সারা ভারতেই এই চিতল হরিণের বাসস্থান। আর জয়পুর জঙ্গলে তো প্রায়শই চিতল হরিণের দেখা মেলে। হোটেল থেকে বেরিয়ে রাস্তা পাড় হতে হতে হয়ত দেখতে পাবেন এদের, যখন এরাও রাস্তা পাড় হচ্ছে। এছাড়াও হাতি, বন্য শেয়াল বা নেকড়েও আছে জঙ্গলে। কপালে থাকলে হাতির দর্শনও হয়ে যায় মাঝে মাঝে। আর আছে ভোরবেলায় বিভিন্ন পাখির কোলাহল। রাতে হোটেলে বা রিসোর্টে বসে যখন জঙ্গল থেকে ঝি ঝি পোকার ডাক ছাড়াও আরও জানা অজানা কিছু আওয়াজ শুনতে পাবেন, তখন মনের মধ্যে যে রোমাঞ্চ আসবে, সেটির অনুভূতি পেতে একবার যেতেই হবে জয়পুর জঙ্গল।
বনলতা রিসোর্ট হল বর্ষাকালে কলকাতায় কাছাকাছি দেখার জন্য অন্যতম সেরা জায়গা। জয়পুর ফরেস্টের কাছে অবস্থিত বনলতা রিসোর্টটি সমস্ত গ্রাম্য আকর্ষণে ভরা। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বর্ষাকালে সময় কাটানোর জন্য আদর্শ, কারণ এই সময়ে বন আরও সবুজ ও শ্যামল হয়ে ওঠে।
এছাড়াও আপনি রিসোর্টেই বিশ্রাম নিতে পারেন এবং ভাল রক্ষণাবেক্ষণ করা বাগানের মধ্যে ঘোরাঘুরি করতে পারেন।
এছাড়াও এখানে আপনি চিতল হরিণ, খরগোশ, উটপাখি, হাঁস এবং আরও অনেকগুলি উদ্ভিদের দেখতে পাবেন। রিসোর্টের পুকুরে মাছ ধরার সুবিধা রয়েছে।
রিসোর্টটিতে জঙ্গল ভিউ রুম, গ্রামের পরিবেশ, গাড়ি পার্কিং, শিশু পার্ক সহ সমস্ত বিলাসবহুল সুবিধা রয়েছে। অভ্যন্তরীণ রেস্তোরাঁগুলিতে আপনি সুস্বাদু খাবার উপভোগ করতে পারেন।
মুকুটমণিপুর
মুকুটমণিপুর পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার একটি গ্রাম ও পর্যটনকেন্দ্র। ঝাড়খণ্ড সীমান্তের নিকট কংসাবতী ও কুমারী নদীর সংযোগস্থলে এই গ্রামটি অবস্থিত।
১৯৫৬ সালে, খাতড়া শহর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে মুকুটমণিপুরে একটি বিশালাকার জলাধার প্রকল্প গৃহীত হয়। এই জল প্রকল্প পশ্চিমবঙ্গের তদনীন্তন মুখ্যমন্ত্রী ড. বিধানচন্দ্র রায়ের পরিকল্পনা । বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর ও হুগলি জেলার প্রায় ৮,০০০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় জলসেচের জন্য এই প্রকল্প গৃহীত হয়। জলাধার থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে বনগোপালপুর সংরক্ষিত বনাঞ্চল একটি উল্লেখযোগ্য পর্যটন কেন্দ্র।
এটি একটি আদর্শ হারিয়ে যাওয়ার ঠিকানা যেখানে ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম মাটির বাঁধটি মুকুট বা “মুকুট” এর মতো রহস্যময় টিলা দ্বারা বেষ্টিত। দুটি নদীর সঙ্গমে অবস্থিত, এটি সবুজ রঙের মোড়কযুক্ত “রাঙ্গামাটি” এর নেকলেস আকৃতির বাঁধের জন্য বিখ্যাত। নীল জলের নির্মল প্রকৃতি এবং দৃষ্টিনন্দন দৃশ্যে ধন্য, মুকুটমণিপুর হল সবুজ বন এবং টিলা ঘেরা এক লুকানো সম্পদ মুকুটমণিপুর বাঁধটি ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাঁধ হিসাবে বিবেচিত হয়। ভিড় এবং বাণিজ্যিকীকরণ থেকে দূরে মুকুটমণিপুরের একটি অংশ এখনও উপজাতীয় সংস্কৃতির গন্ধে বাস করে এবং পর্যটকদের দর্শনীয় দর্শনীয় স্থান দেয়। এটি ফটোগ্রাফির জন্য স্বপ্নের গন্তব্য হিসাবেও বিবেচিত হয়। সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে, ‘বাঁকুড়ার রানী’ আপনার ব্যস্ত সময়সূচির একঘেয়েমি ভাঙার জন্য আপনাকে ছুটির এক নিখুঁত সময় অফার করছে। আপনি যদি ফটোগ্রাফি পছন্দ করেন তবে আপনার জন্য একটি স্বপ্নের গন্তব্য।
মুকুটমণিপুরকে ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম মাটির বাঁধ হিসাবে উল্লেখ করা হয়। এটি একটি মুকুটের মতো পাহাড় এর চূড়া দ্বারা বেষ্টিত, যা এটিকে বর্ষাকালে নিখুঁত পর্যটক স্থান করে তোলে।
শান্তিনিকেতন
যারা ভ্রমণ পিপাসু তাদের জন্য বোলপুর শান্তিনিকেতন একটি আদর্শ জায়গা। শান্তিনিকেতন, যাকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভূমি বলা হয়, তা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, শান্তি, সৌন্দর্য এবং ঐতিহাসিক তাৎপর্যের আদর্শ মিশ্রন। ভারত এবং বাইরের অনেক দর্শনার্থী লাল মাটি, বা শাল ও শিমুল, বিশুদ্ধ বাতাস, শান্ত পরিবেশ এবং পার্শ্ববর্তী কোপাই নদীর মোহনীয়তায় আকৃষ্ট হয়। আপনি বর্ষায় এই বিস্ময়কর গন্তব্যে ভ্রমণের পরিকল্পনা করতে পারেন, যখন আপনি বোগেনভিলা দিয়ে সজ্জিত চারপাশের আরও মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে পারেন, তাজা লালমাটি এবং ছাতিম গাছের সুবাস উপভোগ করতে পারেন।
অনেক পর্যটক এই মনোরম স্থানে সমগ্র শান্তিনিকেতন কমপ্লেক্সের ছবি তুলতে আসেন, যার মধ্যে রয়েছে ছাতিমতলা, রবীন্দ্র ভবন, কলা ভবন, চেনা ভবন এবং আরও অনেক কিছু।
তাই শান্তিনিকেতনে বর্ষাকাল সৌন্দর্য ও প্রশান্তির প্রতীক।শান্তিনিকেতন পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার বোলপুর শহরের নিকট অবস্থিত একটি আশ্রম ও শিক্ষাকেন্দ্র। ১৮৬৩ খ্রিষ্টাব্দে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর নিভৃতে ঈশ্বরচিন্তা ও ধর্মালোচনার উদ্দেশ্যে বোলপুর শহরের উত্তর-পশ্চিমাংশে এই আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯০১ সালে রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন, যা কালক্রমে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপ নেয়। ১৯১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিশ্বভারতীর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ। এরপর ১৯২১ সালের ২৩ ডিসেম্বর, (১৩২৮ বঙ্গাব্দের ৮ পৌষ) রবীন্দ্রনাথের উপস্থিতিতে আচার্য ব্রজেন্দ্রনাথ শীল বিশ্বভারতীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন এখানে।রবীন্দ্রনাথ তার জীবনের দ্বিতীয়ার্ধের অধিকাংশ সময় শান্তিনিকেতন আশ্রমে অতিবাহিত করেছিলেন। তার সাহিত্য ও সৃষ্টিকর্মে এই আশ্রম ও আশ্রম-সংলগ্ন প্রাকৃতিক পরিবেশের উপস্থিতি সমুজ্জ্বল। শান্তিনিকেতন চত্বরে নিজের ও অন্যান্য আশ্রমিকদের বসবাসের জন্য রবীন্দ্রনাথ অনিন্দ্য স্থাপত্যসৌকর্যমণ্ডিত একাধিক ভবন নির্মাণ করিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে আশ্রমনিবাসী বিভিন্ন শিল্পী ও ভাস্করের সৃষ্টিকর্মে সজ্জিত হয়ে এই আশ্রম একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনস্থল হয়ে ওঠে। ১৯৫১ সালে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ভারতের কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা লাভ করে।
শান্তিনিকেতন যেতে রেলপথ ও সড়কপথ একমাত্র মাধ্যম।
এখানে ২টি রেলস্টেশন রয়েছে। দক্ষিণভাগে বোলপুর শান্তিনিকেতন রেলওয়ে স্টেশন ও উত্তরভাগে প্রান্তিক। দুটি স্টেশন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় সম দূরত্বে অবস্থিত। বোলপুর তুলনামূলক ব্যস্ততম স্টেশন।
শান্তিনিকেতন এক্সপ্রেস প্রতিদিন হাওড়া থেকে ছাড়ে। বোলপুর পৌঁছায় । ঐদিন বোলপুর থেকে দুপুরএ ছাড়ে। হাওড়া বিকেলএ পৌঁছায়।
গড়পঞ্চকোট
পঞ্চকোট ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলায় পঞ্চকোট পাহাড়ের কোলে অবস্থিত একটি প্রত্নস্থল। এই স্থানটি ঐ অঞ্চল শাসনকারী শিখর রাজবংশের রাজধানী ছিল।
গড় পঞ্চকোট প্রায় পাঁচ মাইল বিস্তৃত একটি দুর্গ ছিল। এই গড়ের চারিপাশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বারো বর্গমাইল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত ছিল এবং এটি পরিখা দিয়ে ঘেরা ছিল। মূল দুর্গ পাথরের দেওয়াল দিয়ে ঘেরা ছিল। বৃষ্টি আবৃত উপত্যকার পান্না সবুজ সৌন্দর্য, এবং ফুলের সুবাস আপনার আত্মা এবং মনকে শান্তিপূর্ণ ও সতেজ করবে। আপনি গড়পঞ্চকোটের আশেপাশে পোড়ামাটির শৈলীর দুর্গের অনেক প্রাচীন ধ্বংসাবশেষ এবং পঞ্চরত্ন মন্দিরের ধ্বংসাবশেষও দেখতে পারেন।
জয় চণ্ডী পাহাড় গড়পঞ্চকোটে চণ্ডী মাতার একটি সুন্দর মন্দির। এই সুন্দর জঙ্গল এবং প্রাচীন স্থানটি বর্ষার সময় আপনাকে সত্যিই মুগ্ধ করবে।
স্থাপত্য
গড় পঞ্চকোটের অধিকাংশ স্থাপত্য বর্তমানে ধ্বংসপ্রাপ্ত বা অবলুপ্তির পথে। এই স্থানে বেশ কয়েকটি মন্দির রয়েছে, যেগুলি উপযুক্ত সংরক্ষণের অভাবে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
তোরণ
১৮৭২ খ্রিষ্টাব্দে জে ডি বেগলার গড় পঞ্চকোট ভ্রমণ করে আঁখ দুয়ার, বাজার মহল দুয়ার, খড়িবাড়ি দুয়ার এবং দুয়ার বাঁধ নামক চারটি তোরণের বর্ণনা করেন। তিনি দুয়ার বাঁধ ও খড়িবাড়ি দুয়ারের গায়ে উৎকীর্ণ লিপিতে মল্লরাজ বীর হাম্বিরের নামের উপস্থিতি লক্ষ্য করেন, যা থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় যে পঞ্চকোট রাজ্য মল্লভূমের অধীনস্থ হয়েছিল।
পঞ্চরত্ন মন্দির
গড় পঞ্চকোটের সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য মন্দির হল একটি পঞ্চরত্ন টেরাকোটা নির্মিত দক্ষিণ ও পূর্বদুয়ারী রাস মন্দির। মন্দিরের গায়ে ফুল ও আলপনার নকশা ছাড়াও খোল, করতাল বাদনরত ও নৃত্যরত মানব-মানবীর মূর্তি পরিলক্ষিত হয়। ষাট ফুট উচ্চ কেন্দ্রীয় চূড়া বিশিষ্ট ভগ্নপ্রায় এই মন্দিরে কোন বিগ্রহ নেই। উত্তরপশ্চিম দিকে অপর একটি পঞ্চরত্ন টেরাকোটা মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ রয়েছে, বর্তমানে যার চারটি চূড়া নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে ও মধ্যের ৪০ ফুট উচ্চ চূড়াটি অবশিষ্ট রয়েছে।
কঙ্কালী মাতার মন্দির
গড়ের পশ্চিমদিকে প্রস্তর নির্মিত কঙ্কালী মাতার ভগ্নপ্রায় মন্দিরের অস্তিত্ব বর্তমান। মন্দিরের সামনের অংশ অক্ষত হলেও পেছনের অংশ সম্পূর্ণ ধ্বংসপ্রাপ্ত। কঙ্কালী মাতা পঞ্চকোট রাজ্যের কুলদেবী হলেও বর্তমানে এই মন্দিরে কোন বিগ্রহ নেই। মন্দিরের প্রবেশপথের ওপরে কোন লিপি বা মূর্তি খোদিত ছিল, যা বর্তমানে বিনষ্ট হয়েছে।
গড়ের বাম দিকে প্রস্তর নির্মিত কল্যাণীশ্বরী দেবী মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ বর্তমান। এছাড়াও দুইটি প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত জোড়বাংলা মন্দির এই স্থানে অবস্থিত। এছাড়া পঞ্চকোট পাহাড়ের পাদদেশে রাজপ্রাসাদের ধ্বংসাবশেষ ও কর্মচারীদের বাসস্থান অবস্থিত।
তাজপুর
তাজপুর হল পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার একটি পর্যটন কেন্দ্র। এটি মন্দারমণি ও শঙ্করপুর এর মাঝে অবস্থিত। পর্যটন কেন্দ্রটি বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে পর্যটন মহলে। তাজপুর মন্দারমণি ও শঙ্করপুর-এর মাঝে বঙ্গোপসাগর-এর তীরে অবস্থিত। এখানে একটি সুন্দর সুমদ্র সৈকত রয়েছে। বিদ্যুতায়নের অসুবিধা সত্বেও এই সমুদ্র সৈকতকে কেন্দ্র করে তাজপুরে পর্যটন গড়ে উঠেছে। বর্তমানে এখানে বেশ কয়েকটি হোটেল গড়ে উঠেছে। এই সৈকতে লাল কাঁকড়া দেখা যায়। তাজপুর দীঘার নিকটবর্তী। এই সমুদ্র সৈকতের সবচেয়ে কাছের স্টেশন হল রামনগর রেলওয়ে স্টেশন। কলকাতা থেকে এর দূরত্ব ১৭৩.৯ কিলোমিটার (১০৮.১ মা) এবং সময় লাগে ৪ ঘণ্টা।
মেদিনীপুরের তাজপুরের অত্যাশ্চর্য সমুদ্র সৈকত, যা ঝাউ বন দ্বারা ঘেরা, পশ্চিমবঙ্গের নির্জন সৈকতগুলির মধ্যে একটি।
আপনি যদি সমুদ্র সৈকতে বৃষ্টি উপভোগ করতে চান তবে এই সৈকতটিই আদর্শ। আপনি এখানে শুধুমাত্র বর্ষা উপভোগ করতে পারবেন না, আপনি এই নিরবচ্ছিন্ন সৈকতে আপনার বন্ধু এবং পরিবারের সাথে চমৎকার সময় কাটাতে পারেন। আপনি যদি ভাগ্যবান হন তবে আপনি কিছু দিন দিগন্তে অপূর্ব সূর্যোদয়ের সাক্ষী হতে পারেন।
আপনি দিনের বেলা বালি ঢাকা লাল কাঁকড়া লক্ষ্য করতে পারেন। আনন্দের সাথে সমুদ্র সৈকতে হাঁটুন, বৃষ্টির শীতল ফোঁটা উপভোগ করুন এবং আপনার পায়ের কাছে ঢেউয়ের স্পর্শ অনুভব করুন। আপনি ভোর বেলায় সমুদ্র সৈকতে সিগালদের উন্মত্ততা শুনতে পারেন।
।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।