প্রতিদিন সন্ধ্যায় যখন অন্যান্য বাচ্চারা টিউশন পড়তে যায় তখন এই ছেলেটি দুর্গা মন্দিরে বাজায় ঢাক এবং খোল করতাল, সত্যিই এই দৃশ্য বিরল।

আবদুল হাই,বাঁকুড়া :- এই বাচ্চা ছেলেটির ভক্তি দেখলে অবাক হবেন। প্রতিদিন সন্ধ্যায় যখন অন্যান্য বাচ্চারা টিউশন পড়তে যায় তখন এই ছেলেটি দুর্গা মন্দিরে বাজায় ঢাক এবং খোল করতাল। সত্যিই এই দৃশ্য বিরল। কিশোর মনে এমন ভক্তি বিরল। ভাববেন না পড়াশোনা শিকেয় তুলে ভক্তি চর্চা চলছে। বাঁকুড়া মিশন বয়েসের ছাত্র শুভম দাস মোদক, পড়াশোনার পাশাপাশি করে থাকেন আধ্যাত্মিক সঙ্গীত চর্চা। মূলত তবলা, ঢাক এবং খোল করতাল বাজায় এই বালক। ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার কবলে শুভমের একটি হাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় শখের বাদ্যযন্ত্র বাজানো। মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন শুভম এবং তার মা মিতালী দাস মোদক। ২০২২ সালের দুর্গাপূজার অষ্টমীর দিন আতশবাজি ফেটে যায় শুভমের হাতে। তারপর থেকেই শুরু হয় সংগ্রামের। শুভম দাস মোদকের মা মিতালী দাস মোদক জানান, “আমার ছেলে আগে থেকেই ঢাক বাজাত। ২০২২ সালে অষ্টমীর দিন ঘটনাটা ঘটে যাওয়ার পর আমরা কেউ ভাবিনি যে আমার ছেলে জীবনে প্রবেশ করতে পারবে। মায়ের ইচ্ছাতেই এটা সম্ভব হয়েছে। শুভম মায়েরই ছেলে।”
প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬ টায় বাঁকুড়া শহরের রামপুর দুর্গা মন্দিরে দেখতে পাবেন শুভম দাস মোদককে মা দুর্গার আরতিতে ঢাক বাজাতে। এক দিন দুদিন নয়, এই অভ্যাস প্রতিদিনের। শুভম জানায়, “মন্দিরের কাজ করতে আমার ভালো লাগে সেই কারণেই করি। শুধু ঢাক বাজাই সেটাই নয়, পুজোর জোগাড় থেকে বাসন পরিষ্কার করা সব।”

বর্তমান সমাজে প্রযুক্তির মধ্যস্থতায় নতুন প্রজন্ম এবং যুব সমাজ দিন দিন বিজ্ঞানমনস্ক হচ্ছে। তারই মধ্যে বাঁকুড়ার ছেলে শুভমের এই ভক্তির দৃষ্টান্ত যথেষ্ট নজর কাড়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *