দারিদ্রতাকে পেছনে ফেলে সফল মিতালী।

দঃ দিনাজপুর, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ- বালুরঘাট সদর শহর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে ভেরেন্ডা গ্রাম থেকে দিনে কোনদিন তিনবার কোনদিন চারবার সাইকেল চালিয়ে বালুরঘাটে যাতায়াত করে পড়াশোনা করেছে মিতালী বর্মন। বাবা গঙ্গাধর বর্মন কৃষি কাজ করেন এবং নির্মাণ কর্মী। দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারের মেয়ে মিতালী বর্মন স্বপ্ন দেখে শিক্ষকতা করার। আর্থিক প্রতিকূলতা তার স্বপ্নের পথে অন্তরায় হয়নি। এবার উচ্চমাধ্যমিকে তার প্রাপ্ত নাম্বার ৪৬৬ শতাংশের হিসেবে ৯৩ শতাংশ।

ভেরেন্ডা গ্রামের মিতালী বর্মনের বাড়ি এলাকায় এখনো মাটির রাস্তা। অবশ্য বালুরঘাট তপন রাজ্য সড়কের ধারেই তাদের গ্রাম। বালুরঘাট এনসি হাইস্কুলের ছাত্রী ছিল মিতালী। পঞ্চম শ্রেণী থেকেই বালুরঘাটে যাতায়াত। বাড়ির আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় প্রতিদিন তার পক্ষে গাড়ি ভাড়া কুড়ি টাকা করে খরচা করার সম্ভব ছিল না। তাই সাইকেল চালিয়েই বালুরঘাট যাতায়াত করেছে এতদিন। তার পরিশ্রমের ফল পেয়েছে হাতে হাতে। নজর করা রেজাল্টের তাক লাগিয়ে দিয়েছে প্রতিবেশীদের।

মিতালী বর্মনের বাবা গদাধর বর্মন নিজস্ব জমি জায়গা নেই তিনি মূলত কৃষি কাজ করেন। কখনো কখনো নির্মাণ কর্মী সহায়ক হিসেবে শহর এলাকায় যান কাজ করতে। মা তারুল বর্মন হাউসওয়াইফ যেটুকু জমির ভাগ চাষ করে সেখান থেকে যা উৎপাদন হয় সারা বছরের চাল কিনতে হয় না। কিন্তু সংসারের হাল ফেরাতে গদাধর বর্মনকে একাধিক কাজের সঙ্গে যুক্ত হতে হয়েছে। মেয়ের পড়াশোনার খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হয়েছে তাকে। কারণ চারজন গৃহ শিক্ষকের মাইনে মেটাতেই তার নাভিশ্বাস উঠেছিল এক সময়। এখন মিতালী বর্মনের লক্ষ্য ইংরেজিতে অনার্স নিয়ে পড়াশোনা করা এবং ভবিষ্যতে শিক্ষকতা চাকরিতে আসা। তার সেই স্বপ্ন পূরণ হবে কিনা তা নিয়ে সন্ধিহান মা তারুল বর্মন ও তার প্রতিবেশীরা। কারণ পরিবারের যা আর্থিক সঙ্গতি তা দিয়ে আগামী দিনে অনার্স পড়াশোনা করানো তাদের পক্ষে সম্ভব নয়।

মিতালী বর্মন বলেছেন ভবিষ্যতে তার লক্ষ্য ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স পড়াশোনা করে শিক্ষকতা করা কিন্তু তার সে স্বপ্ন কতটা সফল হবে তা নির্ভর করবে বাবা-মায়ের আর্থিক সঙ্গতির উপর সরকারিভাবে যদি কোন সাহায্য পাওয়া যায় তাহলে সে তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে অনায়াসে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *