পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অধিষ্ঠাত্রী দেবী বর্গভীমা। তমলুক শহরে দেবীবর্গভীমা মায়ের মন্দির। এটি একটি একান্ন সতী পিঠের মন্দির। সারা বছরই এই মন্দিরে চলে পুজোপাঠ। প্রতিদিন দূর দূরান্ত থেকে ভক্তরা এসে পূজা দেন মায়ের মন্দিরে। সারা বছর প্রতিদিন পুজো পাঠের পাশাপাশি এই মন্দিরে বছরের বিভিন্ন সময়ে বিশেষ বিশেষ তিথিতে বিশেষ পুজোপাঠ হয়। তাদের মধ্যে অন্যতম হল ফলহারিনী কালীপুজো। এই মন্দিরে প্রতিবছর ফলহারিনী কালীপুজোয় হয় বিশেষ পুজোপাঠ। দূর দূরান্ত থেকে ভক্তরা এসে বর্গভীমা মন্দিরে ফলহারিনী কালীপুজো উপলক্ষে পুজো দেন।
সতীর একান্ন পীঠের এক পীঠ তমলুকের দেবী বর্গভীমা, বর্তমানেও নিষ্ঠার সাথে পুজিত হয় মা, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সদর ঐতিহাসিক তাম্রলিপ্ত বা তমলুকের আজও মধ্যমণি মা বর্গভীমা। কয়েক হাজার বছর ধরে শক্তি স্বরূপিণী আদ্যাশক্তি মহামায়া রূপে দেবী বর্গভীমার আরাধনা চলে আসছে। মতান্তরে তিনি ভীমরূপা বা ভৈরব কপালী নামেও পরিচিত। অতীতের প্রায় সব কিছুই ধ্বংসের মুখে চলে গেলেও স্বমহিমায় আজও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে এই সুবিশাল মন্দির। ওড়িশি স্থাপত্যের আদলে এই দেউলের উচ্চতা প্রায় ৬০ ফুট। মন্দিরের দেওয়ালে টেরাকোটার অজস্র কাজ। তার মধ্যেই মন্দিরের গর্ভগৃহে কালো পাথরে তৈরি মায়ের মূর্তি বিরাজ করছে দেবী উগ্রতারা রূপে।
পুরাণ বলে, দক্ষযজ্ঞে সতীর দেহত্যাগের পর মন্দিরের সেবায়েতের কথায় ধর্ম-অর্থ-কাম ও মোক্ষ। এই চারটি বর্গ দান করেন বলেই মায়ের নাম দেবী বর্গভীমা। নীলতন্ত্র মতে মায়ের আরাধনা করা হয় এখানে। ফলহারিনী কালীপুজোর দিন রাজবেশে মাকে সাজিয়ে মহা ধুমধামে পুজো হয়। পুজোর পাশাপাশি এই দিন হোম যজ্ঞ হয় মন্দিরে। ভক্তরা তাদের সারা বছরের কর্মফল মায়ের প্রায় অর্পণ করে পুজো দেন। মন্দিরের পুরোহিত প্রণব চক্রবর্তী জানান, ‘সারা বছরই পূজো পাঠের পাশাপাশি মন্দিরে বিশেষ বিশেষ তিথিতে বিশেষ বিশেষ পুজোপাঠ হয়। ৫ জুন বুধবার ফলহারিনী কালীপুজো। মন্দিরে হোম যজ্ঞ পুজোপাঠের মাধ্যমে পূজিতা হন মা বর্গভীমা। ভক্তরা এই দিন মায়ের চরণে তাদের কর্মফল নিবেদন করে পুজো দেন।’
৫ জুন বুধবার ফলহারিনী কালীপূজা উপলক্ষে সকাল থেকেই বর্গভীমা মন্দিরে ভক্তদের সমাগম শুরু হয়েছে। মন্দির কর্তৃপক্ষের থেকে জানা যায় সন্ধ্যের পর আরও বেশি ভক্তের সমাগম হবে। মন্দিরে আর পাঁচটা তিথির মত এই তিথিতেও মায়ের কাছে পুজো দিতে দূর দূরান্ত থেকে বহু ভক্তের সমাগম হয়।