পক্ষী বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, জলচর পাখিদের বাসস্থান ক্রমেই নষ্ট হচ্ছে, যা পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র্যের জন্য গভীর উদ্বেগের।

দঃ দিনাজপুর, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ- দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় বন দপ্তরের উদ্যোগে শুরু হয়েছে জলচর পাখি সমীক্ষা। আজ বুধবার ছিল এই পাখি সমীক্ষার দ্বিতীয় দিন। এই সমীক্ষায় অংশ নিয়েছেন বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং পক্ষী বিশেষজ্ঞরা। আগামী কয়েকদিন ধরে এই সমীক্ষা চলবে। পক্ষী বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, জলচর পাখিদের বাসস্থান ক্রমেই নষ্ট হচ্ছে, যা পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র্যের জন্য গভীর উদ্বেগের।

প্রতি বছর শীতের মরশুমে দক্ষিণ দিনাজপুরের নদী চর, জলাভূমি এবং বনাঞ্চলে বহু পরিযায়ী পাখি ভিড় করে। এটি জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এ অঞ্চলে জলচর পাখির সংখ্যা ক্রমশ কমে আসছে। সেই কারণেই পাখিদের প্রজাতি এবং সংখ্যা সম্পর্কে বিশদে জানতে বন দপ্তর এই সমীক্ষা শুরু করেছে।

সমীক্ষার প্রথম দিন বালুরঘাটের আত্রেয়ী নদীর চর ঘিরে ডাঙ্গি, চক ভাতশালা এবং ড্যাম অঞ্চলে কাজ করেছেন সমীক্ষকরা। এই দলে ছিলেন বন দপ্তরের বিট অফিসার সৌরভ সেন, বনরক্ষক মিঠুন বালা, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পক্ষীপ্রেমী সুমন ঘোষ, পরিবেশ কর্মী তুহিনশুভ্র মণ্ডল, তুষার দেব এবং বিশ্বজিৎ বসাক প্রমুখ।

সমীক্ষায় পাওয়া গেছে গ্রে-থ্রোটেড মার্টিন, লিটল রিংগড প্লোভার, টেমনিকস্ স্টিন্ট, হোয়াইট ওয়াগটেল, গ্রীন স্যান্ডপাইপার, কমন কিংফিশার, হোয়াইট থ্রোটেড কিংফিশার, পাইড কিংফিশার, এশিয়ান ওপেন বিল স্টর্ক, লিটল ইগ্রেট, রিভার ল্যাপউইং, কমন কাইট, এশিয়ান পাম সুইফ্ট সহ আরও বিভিন্ন প্রজাতির জলচর পাখি।

সমীক্ষকরা পাখিদের হ্যাবিট্যাট বা বাস্তুতন্ত্রকেও পর্যবেক্ষণ করেছেন। আত্রেয়ী নদীর সমীক্ষার পর গোফানগরে এই কাজ হয়েছে। আগামী কয়েকদিন ধরে তপন দিঘি, গুড়াইল বনাঞ্চল, আরেন্ডা বনাঞ্চল, কালদিঘি, ধলদিঘি, মহীপাল দিঘি, গড় দিঘি এবং মালিয়ান দিঘিতেও এই সমীক্ষা চালানো হবে।

সমীক্ষক দলের সদস্যদের বক্তব্য, জলচর পাখিদের বাস্তুতন্ত্র দিন দিন নষ্ট হচ্ছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। গত বছরও এই ধরনের সমীক্ষা করা হয়েছিল। সমীক্ষার ফলাফল বন দপ্তরে জমা দেওয়া হবে এবং পাখিদের রক্ষা ও তাদের সংখ্যা বাড়াতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রতিনিধিরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *