এগরায় বিধায়কের স্কুলের ভুলে কন্যাশ্রী থেকে বঞ্চিত ছাত্রী। আদালতের দ্বারস্থ পরিবার।।

পূর্ব মেদিনীপুর, নিজস্ব সংবাদদাতা:- খোদ বিধায়কের স্কুলে কন্যাশ্রী তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার ঘটনায় বিতর্ক। এগরার বিধায়ক তরুণ কুমার মাইতির নিজের স্কুল পানিপারুল মুক্তেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়। ঐ স্কুলের প্রধান শিক্ষক তিনি নিজেই। সেই স্কুলে দ্বাদশ শ্রেণী থেকে উত্তীর্ণ স্কুল ছাত্রী রিয়া জানার নাম কন্যাশ্রীর তালিকা থেকে বাদ গেছে। বর্তমানে ঐ ছাত্রী বিবেকানন্দ প্রাইমারি ইনস্টিটিউশন কলেজে ডি এলেড এর ছাত্রী। ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ বিধায়ক নিজে পানিপারুল স্কুলের প্রধান শিক্ষক। তাসত্ত্বেও আমাদের অবিবাহিত মেয়ের বিবাহের তথ্য পাঠানোয় কন্যাশ্রী K2 থেকে নাম বাদ গেছে। বার বার স্কুলে গিয়ে আমরা তথ্য ঠিক করার কথা বলেছি। এমনকি বিধায়ক তথা স্কুলের প্রধান শিক্ষক তরুণ মাইতিকেও বিষয়টি জানিয়েছি। সমস্যার সমাধান হয়নি। শেষ পর্যন্ত বাধ্য কলকাতা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে পরিবারের লোকেরা। কলেজ ছাত্রী রিয়া জানিয়েছে আমি স্কুল শিক্ষিকা হতে চাই। আমার পরিবার আর্থিকভাবে দুর্বল। এই টাকাটা পেলে আমি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারতাম। স্কুলের এই ভুলের জন্য হয়তো আমার পড়াশোনা ও শেষ পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যাবে। যেখানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নারী ক্ষমতায়নের কথা বার বার বলেন সেখানেই তৃণমূল বিধায়ক তরুণ মাইতির স্কুলে বঞ্চিত হচ্ছে ছাত্রী। পানিপারুল গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধীদলনেতা মিলন দাস বলেন ঐ ছাত্রীর পরিবার বিজেপি দলের সমর্থক। তাই এগরার বিধায়ক ইচ্ছাকৃত এই ভুল তথ্য পাঠিয়ে কন্যাশ্রীর তালিকা থেকে ঐ ছাত্রীর নাম বাতিল করেছেন। আগামীদিনে স্কুল কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে সমস্ত রকম সাহায্য করবে আমাদের দল। তবে স্কুলের প্রধান শিক্ষক তথা এগরার বিধায়ক তরুণ কুমার মাইতি বলেন, কম্পিউটারে নাম এন্ট্রি করতে গিয়ে স্কুলের ক্লার্ক এই ভুল করে ফেলেছেন। যদি এটা অনিচ্ছাকৃত ভুল। পরে স্কুলের পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে পুনরায় কন্যাশ্রীর জন্য চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু আর করা সম্ভব হচ্ছে না। এখন তাঁরা আদালতে গেছে। আদালত যদি রায় দেয় তাহলে নিশ্চই পাবে। ঐ ছাত্রী একটি বেসরকারি কলেজে ভর্তি হয়েছে। আমাদের স্কুলের সাথে সেভাবে যোগাযোগ রাখেনি। ফলে কলেজে ভর্তির তথ্য ও দেয়নি। বিডিও অফিস ও চেষ্টা করেছিল। কিন্তু কোনোভাবে সম্ভব হয়নি। আমরা ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে রাজনৈতিক বিভাজন করিনা। এই ভুল টা সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত। তবে বিজেপির মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির যুব সম্পাদক অমলেশ পাহাড়ি বলেন। বিধায়কের নিজের স্কুলের ভুলের জন্য এক ছাত্রী কন্যাশ্রী থেকে বঞ্চিত। মহামান্য উচ্চ আদালতে অমৃতা সিনহার এজলাশে এই মামলা যাবে বলে দাবী অমলেশ পাহাড়ির। তিনি আরও বলেন বিধায়ক তরুণ মাইতির উচিত নিজের বেতন থেকে ২৫ হাজার টাকা দিয়ে ঐ ছাত্রীকে সাহায্য করা। এখন দেখার বিষয়, কন্যাশ্রীর জন্য কি আদৌ পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবে ঐ ছাত্রী! এই বিতর্ক শেষ অব্দি কোথায় গিয়ে পৌছবে। আদালতের দিকে তাকিয়ে রয়েছে ছাত্রীর পুরো পরিবার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *