নিজস্ব সংবাদদাতা, বর্ধমান:- টানা বৃষ্টিতে পূর্ব বর্ধমান জেলার আদমপুর ও রায়না দুই ব্লকের বিস্তীর্ণ অঞ্চল বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রবিবার রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বৃহৎ পরিসরে ত্রাণ এবং সাহায্য নিয়ে পৌঁছে গেলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
এদিন বড়বৈনান অঞ্চলে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য মন্ত্রী ছাড়াও জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, জেলা প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকেরা—এসপি, ডিএম, রায়নার বিধায়িকা সম্পা ধারা, জামালপুরের বিধায়ক অলোক কুমার মাঝি, বর্ধমান শহরের বিধায়ক খোকন দাস, সহ বিভিন্ন ব্লকের সভাপতি ও জনপ্রতিনিধিরা।
ত্রাণ হিসেবে বন্যা দুর্গতদের হাতে তুলে দেওয়া হয় শুকনো খাবার, জল, হরলিক্স, স্যানিটারি সামগ্রী এবং নানান নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। এছাড়াও বাংলা শস্য বীমা ফর্ম পূরণের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের দ্রুত বীমা সুবিধা প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়।
ত্রাণ বিলি ও সহায়তা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে সমবায় দপ্তর। উপস্থিত ছিলেন পূর্ব বর্ধমানের কো-অপারেটিভ ডিরেক্টর, এআরসিএস সৈকত ভট্টাচার্য, সিডিও সিন্ধু কুমার বিশ্বাস, সিডিও শরদিন্দু ব্যানার্জি এবং বরবৈনান সমবায় সমিতির ম্যানেজার একরামুল হক। সমবায় সমিতির পক্ষ থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সাহায্য প্রদান করা হয়। সমিতির কর্মকর্তারা জানান, “আমরা শুধুমাত্র অর্থনৈতিক নয়, সামাজিক ও মানবিক ভূমিকাও পালন করি — এই দুর্দিনে মানুষের পাশে থাকাই আমাদের লক্ষ্য।”
মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, “মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী খুব স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন — একটাও দুর্গত মানুষ যেন অনাহারে না থাকেন। আমরা সেই চেষ্টাই করছি। সরকার সবরকম সাহায্য করছে — খাদ্য, চিকিৎসা, কৃষি সহায়তা সবই পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে মানুষের কাছে।”
বড়বৈনান অঞ্চলের VRP প্রতিনিধি, অঞ্চল প্রধান এবং স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়— ইতিমধ্যেই কয়েকটি এলাকায় নৌকা ও উদ্ধার দল মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মেডিকেল ক্যাম্প খোলা হয়েছে। সেখানে চিকিৎসা, ওষুধ এবং জরুরি স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হচ্ছে। ডাক্তারদের একটি দল গ্রামে ঘুরে ঘুরে সেবা দিচ্ছেন।
প্রাণী সম্পদ দপ্তর এবং কৃষি দপ্তরের আধিকারিকরাও ক্ষতিগ্রস্ত পশুসম্পদের দেখভাল ও চাষের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে কাজ করছেন।
শেষ কথা:
এই দুর্যোগের সময়েও রাজ্য সরকারের সক্রিয়তা, জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতি এবং সমবায় ও প্রশাসনের সমন্বিত ভূমিকা আবারও প্রমাণ করল—মানুষের পাশে থাকার অঙ্গীকারে সংকটই হল আসল পরিচয়।
Leave a Reply