মহাভারতের ইতিহাসে বর্ণিত শমী বৃক্ষ, ইতিহাসের পাতায় কয়েক যা হাজার বছরের জীবন্ত দলিল হয়ে এখনো বেঁচে আছে।

দক্ষিণ দিনাজপুর, নিজস্ব সংবাদদাতা:- চলুন আজ ঘুরে আসি মহাভারতের ইতিহাস প্রসিদ্ধ দক্ষিণ দিনাজপুরে। জেলার পর্যটন কেন্দ্র গুলির মধ্যে অন্যতম হরিরামপুর ব্লকের হতিডোবা গ্রাম। এই গ্রামেই রয়েছে মহাভারতে উল্লেখিত কয়েকহাজার বছরের পুরনো শমী বৃক্ষ।
মহাভারতের ইতিহাসে বর্ণিত সেই শমী বৃক্ষ, ইতিহাসের পাতায় কয়েক যা হাজার বছরের জীবন্ত দলিল হয়ে এখনো বেঁচে আছে। তার বৃদ্ধ তকমা পেতে হয়তো আরো কয়েকশো বছরের অপেক্ষা। মহাভারতে উল্লিখিত শমীবৃক্ষ সে, মহাভারতের ইতিহাস অনুযায়ী অজ্ঞাতবাসে থাকাকালীন এই গাছের কোটরেই পাণ্ডবরা নাকি লুকিয়ে রেখেছিলেন নিজেদের অস্ত্র। সেই শতাব্দী প্রাচীন মহীরুহ আজও আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছে মানুষের বিশ্বাস ও ভক্তিকে।
বিশ্বাস আর ভক্তিকে সামনে রেখে জেলা সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রত্যেকদিন মানুষ ছুটে আসেন হরিরামপুরের হাতিডোবা গ্রামে।
বর্তমানে ধর্মীয় ভেদাভেদের ঊর্ধ্বে গিয়ে হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ শমী বৃক্ষের রক্ষণাবেক্ষণ করেন।
এই শমীবৃক্ষ কে কেন্দ্র করেই এলাকার মানুষজনদের জীবন জীবিকার মান উন্নয়ন ঘটেছে বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে।
জানা যায় বাম আমলে এই বৃক্ষ সেভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়নি। যদিও বর্তমানে হরিরামপুর ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে এলাকার মানুষজনদের ভাবাবেগকে মর্যাদা দিয়ে প্রাচীন এই বৃক্ষ সংরক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
এলাকার মানুষজনদের মতে হরিরামপুর ব্লকের বৈরহট্ট গ্রাম পঞ্চায়েতের হাতিডোবা গ্রামের এই এলাকাতেই ছিল “মহাভারতের বিরাট নগরী”।
সেই প্রাচীনকাল থেকেই মহাভারতের ইতিহাস অতপ্রত ভাবে জড়িয়ে রয়েছে এলাকার সাথে।
প্রাচীন এই শমী বৃক্ষ সংরক্ষণ প্রসঙ্গে হরিরামপুর ব্লকের বিডিও পবিত্রা লামা বলেন “হরিরামপুরে হাতিডোবা গ্রামে অবস্থিত শমী বৃক্ষ এলাকার মানুষ বহু বছর ধরে মহাভারতের পবিত্র শমী বৃক্ষ হিসেবে পুজো করে আসছেন। পাশাপাশি দূর দূরান্ত থেকে পর্যটকদের আগমন ঘটে শমী বৃক্ষ দেখতে। আমরা ইতিমধ্যেই শমী বৃক্ষকে কেন্দ্র করে আরও ভালো পর্যটন কেন্দ্র করে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।”
এলাকাবাসী আমিনুর রহমান বলেন “জন্মের পর থেকেই এই গাছ এবং তার ইতিহাস সম্পর্কে জেনে আসছি। তবে শমী বৃক্ষ কত পুরনো তা আমাদেরও জানা নেই। ১লা বৈশাখে শমী বৃক্ষের নিচে বাৎসরিক মেলা বসে। আমরা চাই মহাভারতের ইতিহাস সমৃদ্ধ এই শমী বৃক্ষকে কেন্দ্র করে আরও বড় পর্যটন কেন্দ্র করে উঠুক এলাকায়।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *