ঘাটাল কনভেনশনে বানভাসিদের পক্ষ থেকে মহকুমা শাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান।

পশ্চিম মেদিনীপুর, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ- সেচ দপ্তরের সিডিউল অনুসারে শিলাবতী নদীর নিম্নাংশ ও কংসাবতী এবং রূপনারায়নের পূর্ব-পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার অংশ সহ ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের অন্তর্গত সমস্ত নিকাশী খালগুলি অবিলম্বে পূর্ণ সংস্কার,মাস্টার প্ল্যানের প্রথম পর্যায়ের কাজ দ্রুততার সাথে সুষ্ঠুভাবে কার্যকর করার দাবীতে ঘাটালে বানভাসিদের এক মহতী কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি ডাঃ বিকাশ চন্দ্র হাজরা। মুল প্রস্তাব পাঠ করেন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক দেবাশীষ মাইতি। কনভেনশনে মাস্টার প্ল্যানের অন্তর্গত দুই মেদিনীপুর জেলার ১৩ টি ব্লক থেকে প্রায় ৩ শতাধিক বানভাসি মানুষ যোগদান করেন। মুল বক্তব্য রাখেন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক গৌরীশংকর বাগ ও প্রদীপ পাঠক, প্রাক্তন প্রধান শিক্ষিকা বিদুষী মান্না ও সত্য সাধন চক্রবর্তী,কানাইলাল পাখিরা প্রমুখ। এরপর ওই মানুষজনেরা মিছিল করে এসে মহকুমা শাসকের দপ্তরে ডেপুটেশন কর্মসূচিতে সামিল হন। এবং ভারপ্রাপ্ত মহকুমা শাসককে স্মারকলিপি দেন।
এইদিন মহকুমা শাসক দপ্তরের চত্বরে নারায়নবাবু বলেন,ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের অন্তর্গত দুই মেদিনীপুর জেলার ভুক্তভোগী বাসিন্দাদের লাগাতর আন্দোলনের চাপে অবশেষে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের অন্তর্ভুক্ত শিলাবতী নদীর নিম্নাংশের রামদেবপুর থেকে হরিশপুর পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার,তমাল নদীর ১০ কিলোমিটার, পারাং নদীর ১৫ কিলোমিটার,বুড়িগঙ্গা নদীর ১.৬ কিলোমিটার,শোলাটোপা খালের ১৪.৭ কিলোমিটার সর্বমোট ৬৩.৩ কিলোমিটার অংশ সংস্কারের জন্য সেচ দপ্তর ওয়ার্ক অর্ডার ইস্যু করেছে। অফিসিয়ালি ৩ রা নভেম্বর থেকে সংস্কার কাজ শুরু হওয়ার কথা। ইতিমধ্যে নদী ও খালের ভিতরে জঞ্জাল সাফাই সহ প্রাথমিক কিছু কাজ শুরু হয়েছে। বহু প্রতীক্ষিত ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়িত না হওয়ায় চলতি বছরে ঘাটাল মহকুমার এক বিস্তীর্ণ এলাকা প্রতি বছরের মত এবারও ৭ বার বন্যা কবলিত হয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছে। কয়েকজনের জীবনহানি,খরিফ মরশুমের ফসল সহ কয়েক কোটি টাকার সম্পদহানিও হয়েছে। গত মার্চ মাসে রাজ্য বাজেটে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দের পরও সেই অর্থে কোনও কাজ না হওয়ায় প্রায় লক্ষাধিক মানুষকে বন্যার এই চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হল। অন্যদিকে মাস্টার প্ল্যানের কাজ সুষ্ঠুভাবে রূপায়ণের স্বার্থে মনিটরিং কমিটিতে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটির প্রতিনিধিকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবী ওঠে কনভেনশনে। সেচমন্ত্রী শুধুমাত্র সরকারি আধিকারিক ও শাসক দলের জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে ওই মনিটরিং কমিটি গঠন করেছেন। অন্যদিকে সংগঠনের দেবাশীষ মাইতি বলেন,যেমন করে পূর্বের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারগুলির দ্বারা পরিচালিত সেচ দপ্তরের “কালো” তালিকায় চলে যাওয়া “ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান”কে আপনাদের দীর্ঘ আন্দোলনের মাধ্যমেই যেভাবে পুনরুজ্জীবিত করা সম্ভব হয়েছে,যা আজ বর্তমানে রূপায়িত হতে চলেছে ,ঠিক তেমন করেই বর্তমান পর্যায়ে উক্ত দাবীগুলি কার্যকর করাতে গেলে প্রয়োজন এলাকাভিত্তিক আন্দোলনের। সেই আন্দোলনের বিভিন্ন কর্মসূচিও কনভেনশনে গৃহীত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *