দক্ষিণ দিনাজপুরে এক ঝটকায় ৬৫ কোটি টাকার ২৬ প্রকল্প উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী।

নিজস্ব সংবাদদাতা, বালুরঘাট : রাজ্যের ‘সংস্কৃতির শহর’ নামে খ্যাত বালুরঘাটের প্রাণকেন্দ্রে যে প্রতিষ্ঠান আজও নাট্যচর্চার আলো জ্বেলে রেখেছে, সেই বালুরঘাট নাট্যমন্দির রবিবার পা রাখল প্রতিষ্ঠার ১১৭ বছরে। দীর্ঘ ইতিহাসের সাক্ষী এই নাট্যমন্দিরের জন্মদিন ঘিরে এদিন আয়োজিত হল এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান।সকালে পতাকা উত্তোলন ও বৃক্ষরোপণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন সংস্থার সহ-সভাপতি অরুণ সেন। উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল দাস, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অপূর্ব চক্রবর্তী ও সহ-সভাপতি মানস চক্রবর্তী। নাট্যমন্দির প্রাঙ্গণে মেহগনি, অর্জুন, জারুল-সহ একাধিক চারা রোপণ করা হয়।সংস্থার পুরনো গরিমা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা যেন স্পষ্ট। কারণ, পূর্বতন কমিটির আমলে প্রতিষ্ঠানের জন্মদিন উদযাপন প্রায় বন্ধই হয়ে গিয়েছিল। নতুন কার্যকরী কমিটি দায়িত্ব নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেই ঐতিহ্য ফেরানোর উদ্যোগ নিল। বালুরঘাটের নাট্যচর্চার তীর্থস্থানের ১১৭তম জন্মদিনে শহরবাসীর কাছে সেই ঐতিহ্য আরও একবার স্মরণ করিয়ে দিল তারা।ইতিহাস বলছে, ১৯০৯ সালে ইংরেজ সাহেব নাট্যব্যক্তিত্বদের উদ্যোগে ‘বালুরঘাট থিয়েটিকাল অ্যাসোসিয়েশন’ নামে প্রতিষ্ঠিত হয় এই সংস্থা। পরে ভারতীয় নাট্যকর্মীদের যুক্ত হওয়ায় ১৯১১ সালে নাম বদলে হয় ‘দি এডওয়ার্ড ড্রামাটিক ক্লাব’। এই ক্লাবের সদস্য ছিলেন বাংলার একাঙ্ক নাটকের জনক, বালুরঘাটের সন্তান মন্মথ রায়। জানা যায়, নাট্যমঞ্চ নির্মাণের সময় তিনিই অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে ইটভাটা থেকে ইট বয়ে এনেছিলেন।প্রতিষ্ঠার সেই দিনের স্মৃতি মনে রেখেই এদিনের আয়োজনে ছিল আরও চমক। সন্ধ্যায় থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নাটক। বাদল সরকারের শততম জন্মবর্ষে তাঁর নাটক ভুল রাস্তা পরিবেশন করবে নাট্যসংস্থা ‘সমমন’—মঞ্চেই কিংবদন্তিকে শ্রদ্ধা জানানোর এই বিশেষ উদ্যোগ।সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল দাস বলেন, ‘‘আজ আমাদের ১১৭ তম জন্মদিন। সকালে পতাকা উত্তোলন ও বৃক্ষরোপণ হয়েছে। সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নাটক পরিবেশিত হবে। বাদল সরকারের শতবর্ষে তাঁর নাটক মঞ্চস্থ করেই আমরা শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।’’ঐতিহ্যের প্রদীপ হাতে নিয়ে নতুন কমিটির এই উদ্যোগে বালুরঘাটবাসী যেন আবার ফিরে পেলেন নাট্যমন্দিরের পুরনো মহিমা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *