নিজস্ব সংবাদদাতা, বালুরঘাট, ১৯ মার্চ: লোকসভা ভোটের প্রশিক্ষণে নিয়োগের তালিকায় উঠে আসলো মৃত ব্যক্তির নাম। যা ঘিরে রীতিমতো শোরগোল পড়েছে বালুরঘাটের শিক্ষক মহলে। বালুরঘাট সদর সার্কেলের স্কুল পরিদর্শকের দপ্তরের সামনে তালিকায় দেখা যাচ্ছে শহরের অভিযাত্রী বিদ্যানিকেতন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক প্রয়াত সহ-শিক্ষকের নাম। যিনি গত বছর নভেম্বর মাসে মারা গিয়েছেন। বর্তমানে এক দপ্তর থেকে আরেক দপ্তরে ছুটোছুটি করছেন মৃত ওই শিক্ষকের পরিবার।
মৃত ওই শিক্ষকের নাম নির্মাল্য গুহ। তিনি দীর্ঘদিন অভিযাত্রী স্কুলে শিক্ষকতা করেছেন। চার মাস আগে হৃদরোগজনিত কারণে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। তারপরে পরিবারের তরফে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তার বেতন বন্ধ করার পাশাপাশি মৃত্যু পরবর্তী সুবিধা পাওয়ার কথা উল্লেখ করে চিঠি করা হয়েছিল। কিন্তু ভোটের কাজে মৃত শিক্ষককে নিযুক্ত করার তালিকা দেখে চোখ কপালে ওঠার জোগাড় তাদের। গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার ইস্যু করা ভোটের প্রশিক্ষণ তালিকায় এই ত্রুটি নজরে পড়েছে ওই মৃত শিক্ষকের পরিবারের। বালুরঘাট সদর সার্কেলের তিনি প্রাথমিক শিক্ষক ছিলেন। এসআই দপ্তরের প্রকাশ করা তালিকার ষষ্ঠ নম্বরে তার নাম রয়েছে। এমনকি তাকে সেকেন্ড পোলিং অফিসার হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে ওই তালিকায়। যা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন মৃত শিক্ষকের স্ত্রী ও পুত্র। অন্যদিকে, শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের বেতনক্রম অনুযায়ী ভোটের কাজে নিযুক্তির তালিকা করা হয়নি বলে আক্ষেপ করছেন একাধিক শিক্ষক। যেখানে স্কুলের সহ-শিক্ষকদের প্রিসাইডিং অফিসার করা হয়েছে। কিন্তু প্রধান শিক্ষককে রাখা হয়েছে সেকেন্ড পোলিং অফিসারের জায়গায়।
মৃত ওই প্রাথমিক শিক্ষকের স্ত্রী শম্পারানী দাস গুহ বলেন, ‘গত বছর নভেম্বর মাসে ১৭ তারিখ স্বামী গত হয়েছেন। তার চারদিন পরেই অবর প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শকের মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদে তার বেতন বন্ধ করে দেওয়ার চিঠি পাঠিয়েছিলাম। প্রশাসনের গাফিলতিতে এভাবে মৃত ব্যক্তির নামে ভোটের ডিউটি এসেছে। এখন আমি ও পুত্র নির্বাচন ও শিক্ষা সংসদ সহ বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরছি।’
বালুরঘাটের শিক্ষক মহল জানা যায়, ‘নির্বাচন দপ্তর থেকে কিভাবে ভোটের ডিউটি নিযুক্তি করা হচ্ছে বুঝতে পারছি না। স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সেকেন্ড পোলিং করে আমাকে প্রিসাইডি করা হয়েছে। একই অবস্থা একাধিক স্কুলের। স্বাভাবিকভাবে বেতন কাঠামো দেখা হয়নি।’
দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণা জানান মোবাইলে জানান, ‘স্কুল থেকে যেমন রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে, সেই হিসেবে ভোটের ডিউটি নির্ধারণ করা হয়। তিনি যদি মারা গিয়ে থাকেন। তাহলে সেই নাম কাটা যাবে। এতে সমস্যার কিছু নেই।’