পূর্ব মেদিনীপুর-তমলুক, নিজস্ব সংবাদদাতা:- মাশরুম বর্তমান সময়ে অন্যতম একটি জনপ্রিয় খাদ্যবস্তু। এর পুষ্টিগুণ অপরিসীম। আবার নিরামিষ খাদ্য তালিকায় থাকায় আমিষ জাতীয় নিরামিষ দুই ধরনের খাদ্য অভ্যাসের মানুষ জন সাদরে মাশরুম তাদের খাদ্য তালিকায় রাখেন। বর্তমান সময় এটাই সারা বছরই মাশরুমের চাহিদা রয়েছে বাজারে। মাশরুম চাষের মাধ্যমে একজন বেকার যুবক-যুবতী বা বাড়ির গৃহবধূরা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে। আর এইসব গ্রামের গৃহবধূ ও বেকার যুবক-যুবতীদের পাশে দাঁড়াচ্ছে প্রশাসন। দেওয়া হচ্ছে প্রশিক্ষণ। সরকারি প্রশিক্ষণ পেয়ে বাস্তব চাষ করে গ্রামের মহিলারা সংসারের আর্থিক হাল ফেরাচ্ছে।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তথা পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়া মাশরুম চাষের জন্য অত্যান্ত উপযোগী। মাশরুম চাষের জন্য কোনো উর্বর জমির প্রয়োজন হয় না। ঘরের পাশের অব্যবহৃত জায়গায় ও বাড়ির মধ্যে মাশরুম উৎপাদন করা যায় সহজেই। বেকার যুবক-যুবতী ও গৃহবধূরা সংসারের সমস্ত কাজের পাশাপাশি বাড়ির মধ্যে মাশরুম চাষ করে নিজেদের স্বনির্ভর করছেন গ্রামের মহিলারা। ফিরিয়েছেন সংসারের হাল।
কারোর ১০০টি বেড রয়েছে, কারও আবার ২০০টি। তমলুক ব্লকের বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে গ্রামে বেশ কিছু গৃহবধূরা প্রতিদিন মাশরুম বিক্রি করে গড়ে এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা করছেন। রাষ্ট্রীয় কৃষি বিকাশ যোজনায় মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর প্রায় পাঁচ বছর ধরে মাশরুম চাষ করছেন। মাশরুম চাষের জন্য প্রয়োজন ধানের খড়। খড় দিয়েই তৈরি হয় মাশরুম চাষের জন্য বেড। খড়এর সঙ্গে প্রতিটি স্তরে তরে দেয়া হয় মাশরুমের বীজ। এক একটি বেড তৈরি করতে খরচ ৪০ থেকে ৫০ টাকা। এক একটি বেড থেকে মাশরুম পাওয়া যায় ঘরে তিন থেকে চার কেজি। যার বাজার মূল্য ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। ফলে মাশরুম চাষ অত্যন্ত লাভ জনক।
সি এ ডি সি প্রজেক্ট ডাইরেক্টর উত্তম কুমার লাহা জানান, মাশরুম চাষ বেকার যুবক-যুবতী ও গৃহবধূদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তুলবে তাদের বিকল্প কাজের দিশা দেখাতে পারবে। মাশরুম চাষের মধ্য দিয়ে একজন বেকার যুবক-যুবতী মাসে ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা রোজগার করতে পারবে। এছাড়াও ঘরের গৃহবধুরাও বাড়িতে বসে না থেকে এই কাজ করলে তারাও আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হবে। এরকম একটি গৃহবধূ বাড়ির কাজের পাশাপাশি সফল ভাবে মাশরুম চাষ করে অর্থনৈতিক স্বাবলম্বী হচ্ছেন গ্রামের মহিলারা।
এরকমই একজন মহিলা জানান, মাশরুম চাষ অনেক টাই সহজ। বছরের সারা সময় মাশরুম চাষ হলেও শীতের সময় সব থেকে বেশি চাষ করা হয়। মাশরুম চাষের জন্য প্রথমে ধানের খড়কে ছোট ছোট করে কেটে নিয়ে চুন মিশ্রিত জলে ডুবিয়ে রাখা হয়। জল থেকে ছেঁকে ছায়াঘেরা জায়গায় শুকিয়ে নেওয়া হয়। তারপর সেই খড়গুলোকে প্লাস্টিক বেডে ভরা হয়। ওই বেডের চারটি স্তরে মাশরুম বীজ ফেলে দেওয়া হয়। ১৫ থেকে ২১ দিনের মধ্যে মাশরুম ফুটতে শুরু করে। বাজারে বর্তমানে ১৩০ টাকা থেকে দেড়শ টাকা দাম প্রতি কেজি মাশরুমের ফলে কম পুজিতে অল্পদিনে আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়া যায় মাশরুম চাষে।
Leave a Reply