সাহিত্য ও শিক্ষার ক্ষেত্রে ক্ষুদিরাম দাসের অমর অবদান ও প্রভাব।

0
217

ক্ষুদিরাম দাস ভারতের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে একজন সম্মানিত ব্যক্তিত্ব ছিলেন।  তিনি একজন পণ্ডিত, শিক্ষাবিদ, সমালোচক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ ও একজন ভাষাতত্ত্ববিদ ছিলেন। ৯ অক্টোবর ১৯১৬ সালে ক্ষুদিরাম দাস জন্মগ্রহণ করেন পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলায় অবস্থিত বেলিয়াতোড়ে গ্রামে। এই গ্রামেই জন্মেছেন বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্‌বল্লভ, শিল্পী যামিনী রায়। তার শৈশব বাল্যের দিনগুলি মূলত মধ্যযুগের ঐতিহ্যে লালিত। যাত্রা, কীর্তন, রামায়ণ গান, কথকতা এসবের প্রভাব তার অন্তরে স্থায়ীভাবে পড়েছিল। উত্তরকালে মধ্যযুগ নিয়ে চিন্তা-ভাবনা আর লেখায় তার প্রমাণ পাওয়া যায়।

গ্রন্থাবলী——–

রবীন্দ্র প্রতিভার পরিচয় (১৯৫৩), বাংলা কাব্যের রূপ ও রীতি (১৯৫৮), চিত্র গীতময়ী রবীন্দ্র বাণী (১৯৬৬), বৈষ্ণব রস প্রকাশ (১৯৭২), সমাজ প্রগতি রবীন্দ্রনাথ (১৯৭৩), রবীন্দ্র কল্পনায় বিজ্ঞানের অধিকার (১৯৮৪), বাংলা সাহিত্যের আদ্য মধ্য (১৯৮৫), ব্যাকরণ (৩ খণ্ড), বানান বানানোর বন্দরে (১৯৯৩), চোদ্দশ সাল ও চলমান রবি (১৯৯৩), দেশ কাল সাহিত্য (১৯৯৫), সাঁওতালি বাংলা সমশব্দ অভিধান (১৯৯৮), বাছাই প্রবন্ধ (১৪ টি রচনার সংকলন, মানস মজুমদার দ্বারা সম্পাদিত) (২০০০), পথের ছায়াছবিতে অধ্যাপক ক্ষুদিরাম দাস (মানস মজুমদার দ্বারা সম্পাদিত) (১৯৯৬)।

তিনি অনেক সম্মানে ভূষিত হন যাদের মধ্যে মুখ্য হল –

প্রাণতোষ ঘটক স্মৃতি পুরস্কার (১৯৭৩), বিদ্যাসাগর স্মৃতি পুরস্কার (পশ্চিমবঙ্গ সরকার) (১৯৮৪), সরোজিনী বসু স্বর্ণ পদক (কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়) (১৯৮৭), সাহিত্য রত্ন উপাধিতে ভূষিত (হাওড়া পণ্ডিত সমাজ) (১৯৮৭), রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য উপাধি লাভ (টেগর রিসার্চ ইন্সিটিউট) (১৯৯২), রবীন্দ্র স্মৃতি পুরস্কার (পশ্চিমবঙ্গ সরকার) (১৯৯৪), নারায়ণ গাঙ্গুলী স্মারক পুরস্কার (কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়) (১৯৯৫), রবিতীর্থঙ্কর উপাধি প্রাপ্তি (সংস্কৃত কলেজ) (১৯৯৮)।

স্মারক পুরস্কার——-

স্নাতক স্তরে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে উচ্চতম দক্ষতার জন্যে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেথুন কলেজে ক্ষুদিরাম দাস স্মারক পুরস্কার দেওয়া হয়।

দাস ২৮ এপ্রিল, ২০০২ -এ ৮৫ বছর বয়সে কৃষ্ণনগরের একটি বেসরকারি নার্সিং হোমে মারা যান, একটি সমৃদ্ধ উত্তরাধিকার রেখে যান যা সাহিত্য ও শিক্ষার ক্ষেত্রে অনেককে প্রভাবিত এবং অনুপ্রাণিত করে। তাঁর জীবন এবং কাজ ভারতের সাংস্কৃতিক এবং একাডেমিক ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হিসাবে রয়ে গেছে, যা বাংলা সাহিত্যের মধ্যে এবং তার বাইরের ঐতিহ্য এবং উদ্ভাবনের সাথে তার গভীর সম্পৃক্ততাকে প্রতিফলিত করে।

পশ্চিমবঙ্গের একটি ছোট গ্রাম থেকে ভারতের একাডেমিক এবং সাংস্কৃতিক চেনাশোনাতে সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তিত্ব হয়ে ওঠার জন্য তাঁর অসাধারণ যাত্রা বাংলা ভাষা এবং এর সাহিত্যের প্রতি তাঁর উত্সর্গ এবং আবেগের প্রমাণ। ক্ষুদিরাম দাসের অবদান প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে পণ্ডিত, ছাত্র এবং সাহিত্য প্রেমীদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে চলেছে।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here